শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলায় অন্ধকারে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল

ইউক্রেন সৈন্যদের পাল্টা আক্রমণে রাশিয়ান সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য হওয়ার খবরের একদিন পরে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা হয়েছে। এতে সম্পূর্ণ বিদ্যুত বিছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই এলাকা। ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদমির জেলেনস্কি এই অঞ্চলে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলার জন্য মস্কোকে অভিযুক্ত করেছেন।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিপর্যস্ত পূর্ব ইউক্রেন অঞ্চলের একটি বড় অংশ বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং পানি সরবরাহে ঘাটতির শিকার হয়েছে। বিভ্রাট রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলসহ আশেপাশের অঞ্চলের প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

টানা সাড়ে ছয় মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসনে ইউক্রেন শুরুতে কোণঠাসা অবস্থায় থাকলেও দেশটি এখন পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। এতে করে সফলতার দেখাও পাচ্ছে দেশটি।

এরই প্রতিশোধ নিতে রোববার খারকিভ অঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালায় রুশ সামরিক বাহিনী। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানাচ্ছে, রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে খারকিভের পানি ব্যবস্থাপনা অবকাঠামো এবং একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে করে সেখানে ব্যাপকভাবে ব্ল্যাকআউট সৃষ্টি হয়।

এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, “ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে পূর্ব ইউক্রেনজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে লোকদের আলো ও তাপ থেকে বঞ্চিত করাই রাশিয়ার লক্ষ্য।”

রোববার রাতে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, “কোনো সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়নি। রুশ সেনাদের লক্ষ্য হলো- মানুষকে আলো ও তাপ থেকে বঞ্চিত করা।”

এ প্রসঙ্গে খারকিভের মেয়র ইহোর তেরেখভ জানান, বেসামরিক অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলার কারণে তার শহরের বেশিরভাগ অংশ বিদ্যুৎ বা পানি-বিহীন অবস্থায় রয়েছে। তিনি এটিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক সাফল্যের প্রতিশোধ নেওয়ার একটি জঘন্য এবং নিন্দনীয় প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন।

এর আগে গত শনিবার ইউক্রেনের খারকিভ প্রদেশের ইজিয়ামে রুশ বাহিনীর আকস্মিক পতন হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভিযান শুরুর পর মার্চ মাসে রাজধানী কিয়েভ থেকে নিজেদের সৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল রাশিয়া। এরপর থেকে শনিবার ইজিয়ামে রুশ বাহিনীর দ্রুত পতনই ছিল মস্কোর সবচেয়ে খারাপ পরাজয়।

চলমান সামরিক অভিযানে ইজিয়ামকে লজিস্টিক বেস হিসাবে ব্যবহার করছিল রাশিয়ান বাহিনী। এখান থেকেই রুশ সেনারা দোনেতস্ক এবং লুহানস্ক নিয়ে গঠিত ডনবাস অঞ্চলে কয়েক মাস ধরে আক্রমণ পরিচালনা করে আসছিল।

মূলত এই ঘাঁটি হারানোর পরই রোববার সেখানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
সূত্র: আলজাজিরা, বিবিসি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলায় অন্ধকারে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল

প্রকাশিত সময় : ১১:১৫:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

ইউক্রেন সৈন্যদের পাল্টা আক্রমণে রাশিয়ান সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য হওয়ার খবরের একদিন পরে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা হয়েছে। এতে সম্পূর্ণ বিদ্যুত বিছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই এলাকা। ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদমির জেলেনস্কি এই অঞ্চলে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলার জন্য মস্কোকে অভিযুক্ত করেছেন।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিপর্যস্ত পূর্ব ইউক্রেন অঞ্চলের একটি বড় অংশ বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং পানি সরবরাহে ঘাটতির শিকার হয়েছে। বিভ্রাট রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলসহ আশেপাশের অঞ্চলের প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

টানা সাড়ে ছয় মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসনে ইউক্রেন শুরুতে কোণঠাসা অবস্থায় থাকলেও দেশটি এখন পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। এতে করে সফলতার দেখাও পাচ্ছে দেশটি।

এরই প্রতিশোধ নিতে রোববার খারকিভ অঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালায় রুশ সামরিক বাহিনী। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানাচ্ছে, রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে খারকিভের পানি ব্যবস্থাপনা অবকাঠামো এবং একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে করে সেখানে ব্যাপকভাবে ব্ল্যাকআউট সৃষ্টি হয়।

এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, “ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে পূর্ব ইউক্রেনজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে লোকদের আলো ও তাপ থেকে বঞ্চিত করাই রাশিয়ার লক্ষ্য।”

রোববার রাতে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, “কোনো সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়নি। রুশ সেনাদের লক্ষ্য হলো- মানুষকে আলো ও তাপ থেকে বঞ্চিত করা।”

এ প্রসঙ্গে খারকিভের মেয়র ইহোর তেরেখভ জানান, বেসামরিক অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলার কারণে তার শহরের বেশিরভাগ অংশ বিদ্যুৎ বা পানি-বিহীন অবস্থায় রয়েছে। তিনি এটিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক সাফল্যের প্রতিশোধ নেওয়ার একটি জঘন্য এবং নিন্দনীয় প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন।

এর আগে গত শনিবার ইউক্রেনের খারকিভ প্রদেশের ইজিয়ামে রুশ বাহিনীর আকস্মিক পতন হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভিযান শুরুর পর মার্চ মাসে রাজধানী কিয়েভ থেকে নিজেদের সৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল রাশিয়া। এরপর থেকে শনিবার ইজিয়ামে রুশ বাহিনীর দ্রুত পতনই ছিল মস্কোর সবচেয়ে খারাপ পরাজয়।

চলমান সামরিক অভিযানে ইজিয়ামকে লজিস্টিক বেস হিসাবে ব্যবহার করছিল রাশিয়ান বাহিনী। এখান থেকেই রুশ সেনারা দোনেতস্ক এবং লুহানস্ক নিয়ে গঠিত ডনবাস অঞ্চলে কয়েক মাস ধরে আক্রমণ পরিচালনা করে আসছিল।

মূলত এই ঘাঁটি হারানোর পরই রোববার সেখানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
সূত্র: আলজাজিরা, বিবিসি