রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুবিতে শরৎ সান্বয় ১৪২৯ 

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে বসন্ত ঋতুরাজ হলেও ঋতুরাণী বলতে তৃতীয় ঋতু শরৎ’কেই জানি।

ভাদ্র ও আশ্বিন দুইমাস মিলে শরতকাল।  পরিষ্কার নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, নদীর তীরে কাশফুল, বিলে শাপলার সমারোহ, গাছে পাকা তাল, সেই তাল দিয়ে তৈরি পিঠা, পায়েস আর ক্ষেতে ক্ষেতে আমন ধানের বেড়ে ওঠা চারা- শব্দগুলো একত্রিত করলে যে ঋতুর নাম আসে সেটা ঋতুরাণী শরৎ।

বাংলার প্রকৃতিতে শরতের আবির্ভাব কাল থেকে কালান্তরে মুগ্ধ করেছে আমাদের।শরতের প্রকৃতির অনিন্দ্য সৌন্দর্য বিমোহিত করেছে কবিকূলকেও। সৃষ্টি হয়েছে অজস্র কবিতা গান।  কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শরতের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে লিখেছেন- “শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি৷”

শরৎপ্রেমী মুস্তফা মনোয়ার বলেন-  শরৎ হচ্ছে চমৎকার মেঘের ঋতু, স্পষ্টতার ঋতু। কেননা শরতের আকাশ থাকে ঝকঝকে পরিষ্কার। নীল আকাশের মাঝে টুকরো টুকরো সাদা মেঘ যেন ভেসে বেড়ায়৷ তিনি বলেন, “গ্রামের বধূ যেমন মাটি লেপন করে নিজ গৃহকে নিপুণ করে তোলে, তেমনি শরৎকাল প্রকৃতিকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়৷ বর্ষার পরে গাছগুলো সজীব হয়ে ওঠে। আকাশে হালকা মেঘগুলো উড়ে উড়ে যায়৷’ কিন্তু সময়ের বিবর্তনে কাশফুলের আধিক্য যেমন কমে গেছে, তেমনি কমে গেছে শরতের উৎসবও।  আবহাওয়ার বৈরী লগ্ন রূপবতী শরৎকে করে তুলছে রূপহীন, এ যেন এক অচেনা শরৎ। রুপালি বাংলায় শরতের মহোৎসবকে বরণ করে নিতে  খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ’২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আজ ১৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টায় ক্যাম্পাসের হাদী চত্ত্বরে “শরৎ সান্বয়- ১৪২৯” শীর্ষক দিনব্যাপী শরৎকালীন পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতে কেটে উৎসবের উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এরপর তিনি একটি কেক কাটেন।

এসময় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমনসহ ’২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উৎসবে ভাজাপুলি, তালের বড়া, তালের পায়েস, বিস্কুট পিঠা, তালের রোলসহ প্রায় বিশ ধরনের শরতের পিঠার আয়োজন করা হয়। এর আগে সকাল ১০টায় “শরৎ শুভ্রতার উচ্ছ্বাসে সাজলো মহী নবোল্লাসে” মূলমন্ত্রে  শরতকে বরণ করে একটি শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

খুবিতে শরৎ সান্বয় ১৪২৯ 

প্রকাশিত সময় : ০৯:৩১:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে বসন্ত ঋতুরাজ হলেও ঋতুরাণী বলতে তৃতীয় ঋতু শরৎ’কেই জানি।

ভাদ্র ও আশ্বিন দুইমাস মিলে শরতকাল।  পরিষ্কার নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, নদীর তীরে কাশফুল, বিলে শাপলার সমারোহ, গাছে পাকা তাল, সেই তাল দিয়ে তৈরি পিঠা, পায়েস আর ক্ষেতে ক্ষেতে আমন ধানের বেড়ে ওঠা চারা- শব্দগুলো একত্রিত করলে যে ঋতুর নাম আসে সেটা ঋতুরাণী শরৎ।

বাংলার প্রকৃতিতে শরতের আবির্ভাব কাল থেকে কালান্তরে মুগ্ধ করেছে আমাদের।শরতের প্রকৃতির অনিন্দ্য সৌন্দর্য বিমোহিত করেছে কবিকূলকেও। সৃষ্টি হয়েছে অজস্র কবিতা গান।  কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শরতের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে লিখেছেন- “শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি৷”

শরৎপ্রেমী মুস্তফা মনোয়ার বলেন-  শরৎ হচ্ছে চমৎকার মেঘের ঋতু, স্পষ্টতার ঋতু। কেননা শরতের আকাশ থাকে ঝকঝকে পরিষ্কার। নীল আকাশের মাঝে টুকরো টুকরো সাদা মেঘ যেন ভেসে বেড়ায়৷ তিনি বলেন, “গ্রামের বধূ যেমন মাটি লেপন করে নিজ গৃহকে নিপুণ করে তোলে, তেমনি শরৎকাল প্রকৃতিকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়৷ বর্ষার পরে গাছগুলো সজীব হয়ে ওঠে। আকাশে হালকা মেঘগুলো উড়ে উড়ে যায়৷’ কিন্তু সময়ের বিবর্তনে কাশফুলের আধিক্য যেমন কমে গেছে, তেমনি কমে গেছে শরতের উৎসবও।  আবহাওয়ার বৈরী লগ্ন রূপবতী শরৎকে করে তুলছে রূপহীন, এ যেন এক অচেনা শরৎ। রুপালি বাংলায় শরতের মহোৎসবকে বরণ করে নিতে  খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ’২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আজ ১৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টায় ক্যাম্পাসের হাদী চত্ত্বরে “শরৎ সান্বয়- ১৪২৯” শীর্ষক দিনব্যাপী শরৎকালীন পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতে কেটে উৎসবের উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এরপর তিনি একটি কেক কাটেন।

এসময় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমনসহ ’২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উৎসবে ভাজাপুলি, তালের বড়া, তালের পায়েস, বিস্কুট পিঠা, তালের রোলসহ প্রায় বিশ ধরনের শরতের পিঠার আয়োজন করা হয়। এর আগে সকাল ১০টায় “শরৎ শুভ্রতার উচ্ছ্বাসে সাজলো মহী নবোল্লাসে” মূলমন্ত্রে  শরতকে বরণ করে একটি শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।