বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৭০ বছর পর পৃথিবীর কাছে আসছে বৃহস্পতি 

সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। এবার পৃথিবীর কাছাকাছি আসছে সে। যা গত ৭০ বছরের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এই বিরল ঘটনাটি ঘটতে চলেছে। সেদিনই বৃহস্পতি পৃথিবীর অনেকটা কাছাকাছি আসবে। ওই দিন সারা রাতই আকাশে দেখা যাবে বৃহস্পতিকে। সূর্য এবং বৃহস্পতি উভয়েই একই দিকে থাকবে, পৃথিবীর বিপরীতে। ফলে, সূর্যের মতোই পৃথিবীর সাপেক্ষে বৃহস্পতিও পূর্ব দিকে উঠবে, পশ্চিমে অস্ত যাবে। 

নাসা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৬ সেপ্টেম্বর যেহেতু বৃহস্পতি পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসবে, পৃথিবী থেকে তাকে অনেক স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল দেখাবে। এই ঘটনা যথেষ্ট বিরল।  নাসা-সূত্রে আরও বলা হয়েছে, ওই দিন চাঁদ ছাড়া আকাশের অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রের মধ্যে বৃহস্পতিকেই সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখা যাবে। তবে পৃথিবী থেকে খালি চোখে বৃহস্পতিকে দেখা যাবে না। 

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্রহটি দেখতে চাইলে টেলিস্কোপের সাহায্য নিতে হবে। ভাল দূরবিনের মাধ্যমে মূল গ্রহ ছাড়াও বৃহস্পতির তিন-চারটি উপগ্রহও এই সময়ে দেখা যেতে পারে।

জানা যাচ্ছে, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরে পৃথিবী ও বৃহস্পতির মধ্যে দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ৫৮ কোটি কিলোমিটার। স্বাভাবিক অবস্থায় এই দূরত্ব থাকে ৯৬ কোটি কিলোমিটার।

পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব প্রায় ৫৯২.৬৯ মিলিয়ন কিলোমিটার। কিন্তু আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব থাকবে সবচেয়ে কম মাত্র ৩৬৫ মিলিয়ন কিলোমিটার। বৃহস্পতির এইরকম পৃথিবীর নিকটবর্তী হওয়ার ঘটনাটি মহাজাগতিক বলে জানিয়েছেন নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গবেষণারত জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যাডাম কোবেলস্কি। 

তিনি বলেছেন, “ভাল অর্থাৎ অত্যাধুনিক ব্যান্ডযুক্ত বাইনোকুলার ব্যবহার করলে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকেই সেদিন দেখতে পাওয়া যাবে গালিলিয়ান ৩-৪ টি উপগ্রহ।” এছাড়াও ৪ ইঞ্চি বড়ো এবং সবুজ নীল ফিল্টারযুক্ত টেলিস্কোপ ব্যবহার করলেও বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পট এবং ব্যান্ডগুলিকে আরও বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে সেদিন।

বৃহস্পতির ৭৯টি চাঁদ আবিষ্কার করা গিয়েছে। এর মধ্যে ৫৩টি নামকরণও করা হয়েছে। উক্ত চাঁদগুলির সবচেয়ে বড় যে চারটি চাঁদ রয়েছে–আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো এগুলিকে গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ বলা হয়।

সৌরজগতের বৃহত্তম বৃহস্পতি সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং আকার আয়তনের দিক দিয়ে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতির ব্যাস ১,৪২,৮০০ কিলোমিটার। আয়তনে পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ১,৩০০ গুন বড়। এটি সূর্য থেকে প্রায় ৭৭.৮ কোটি কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে। বৃহস্পতি ব্যতীত সৌর জগতের বাকি সবগুলো গ্রহের ভরকে একত্র করলে বৃহস্পতির ভর তা থেকে আড়াই গুণ বেশি হবে। বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে হাইড্রোজেন এবং সামান্য পরিমাণ হিলিয়াম।
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

৭০ বছর পর পৃথিবীর কাছে আসছে বৃহস্পতি 

প্রকাশিত সময় : ১২:৩৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। এবার পৃথিবীর কাছাকাছি আসছে সে। যা গত ৭০ বছরের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এই বিরল ঘটনাটি ঘটতে চলেছে। সেদিনই বৃহস্পতি পৃথিবীর অনেকটা কাছাকাছি আসবে। ওই দিন সারা রাতই আকাশে দেখা যাবে বৃহস্পতিকে। সূর্য এবং বৃহস্পতি উভয়েই একই দিকে থাকবে, পৃথিবীর বিপরীতে। ফলে, সূর্যের মতোই পৃথিবীর সাপেক্ষে বৃহস্পতিও পূর্ব দিকে উঠবে, পশ্চিমে অস্ত যাবে। 

নাসা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৬ সেপ্টেম্বর যেহেতু বৃহস্পতি পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসবে, পৃথিবী থেকে তাকে অনেক স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল দেখাবে। এই ঘটনা যথেষ্ট বিরল।  নাসা-সূত্রে আরও বলা হয়েছে, ওই দিন চাঁদ ছাড়া আকাশের অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রের মধ্যে বৃহস্পতিকেই সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখা যাবে। তবে পৃথিবী থেকে খালি চোখে বৃহস্পতিকে দেখা যাবে না। 

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্রহটি দেখতে চাইলে টেলিস্কোপের সাহায্য নিতে হবে। ভাল দূরবিনের মাধ্যমে মূল গ্রহ ছাড়াও বৃহস্পতির তিন-চারটি উপগ্রহও এই সময়ে দেখা যেতে পারে।

জানা যাচ্ছে, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরে পৃথিবী ও বৃহস্পতির মধ্যে দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ৫৮ কোটি কিলোমিটার। স্বাভাবিক অবস্থায় এই দূরত্ব থাকে ৯৬ কোটি কিলোমিটার।

পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব প্রায় ৫৯২.৬৯ মিলিয়ন কিলোমিটার। কিন্তু আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব থাকবে সবচেয়ে কম মাত্র ৩৬৫ মিলিয়ন কিলোমিটার। বৃহস্পতির এইরকম পৃথিবীর নিকটবর্তী হওয়ার ঘটনাটি মহাজাগতিক বলে জানিয়েছেন নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গবেষণারত জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যাডাম কোবেলস্কি। 

তিনি বলেছেন, “ভাল অর্থাৎ অত্যাধুনিক ব্যান্ডযুক্ত বাইনোকুলার ব্যবহার করলে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকেই সেদিন দেখতে পাওয়া যাবে গালিলিয়ান ৩-৪ টি উপগ্রহ।” এছাড়াও ৪ ইঞ্চি বড়ো এবং সবুজ নীল ফিল্টারযুক্ত টেলিস্কোপ ব্যবহার করলেও বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পট এবং ব্যান্ডগুলিকে আরও বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে সেদিন।

বৃহস্পতির ৭৯টি চাঁদ আবিষ্কার করা গিয়েছে। এর মধ্যে ৫৩টি নামকরণও করা হয়েছে। উক্ত চাঁদগুলির সবচেয়ে বড় যে চারটি চাঁদ রয়েছে–আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো এগুলিকে গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ বলা হয়।

সৌরজগতের বৃহত্তম বৃহস্পতি সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং আকার আয়তনের দিক দিয়ে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতির ব্যাস ১,৪২,৮০০ কিলোমিটার। আয়তনে পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ১,৩০০ গুন বড়। এটি সূর্য থেকে প্রায় ৭৭.৮ কোটি কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে। বৃহস্পতি ব্যতীত সৌর জগতের বাকি সবগুলো গ্রহের ভরকে একত্র করলে বৃহস্পতির ভর তা থেকে আড়াই গুণ বেশি হবে। বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে হাইড্রোজেন এবং সামান্য পরিমাণ হিলিয়াম।
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস