শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিপর্যয়ের মুখে বিশ্বের বড় বড় পানির আধার

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এশিয়ায় বিশ্বের সবচে বড় সুপেয় পানির আধারও বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় বের হয়ে আসে এ তথ্য। তারা জানান, এরইমধ্যে তিব্বত মালভূমি অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠ এবং ভূগর্ভস্থ দুই ক্ষেত্রেই কমছে পানির পরিমাণ। আগামী ৩০ বছরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করেছেন তারা। 

পয়াং লেক চীনের সুপেয় পানির সবচে বড় উৎস। সবুজ মাঠ, পাখির কোলাহলসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও লেকটির খ্যাতি কম নয়। তবে এ বছর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। পানি নেই বললেই চলে, মাটি ফেটে চৌচির। 

গবেষকরা জানান, তীব্র তাপদাহের কারণে জুলাই থেকে আগস্ট মাত্র ৪০ দিনেই ৭০ শতাংশ পানি উধাও হয়েছে লেক থেকে।

এ অবস্থায় শুধুমাত্র পয়াং লেকের ক্ষেত্রেই নয় বিশ্বের সবচে বড় সুপেয় পানির আধার তিব্বত মালভূমিতে ঘটতে যাচ্ছে একইরকম বিপর্যয়। যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট ও টেক্সাস ইউনিভার্সিটি এবং চীনের সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির এক দল বিজ্ঞানীর গবেষণা বলছে, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে তিব্বত মালভূমির কোনো কোনো স্থানে পানি হারানোর পরিমাণ ১৫ দশমিক ১৮ গিগাটনে পৌঁছেছে।

একইসঙ্গে মধ্য এশিয়া ও আফগানিস্তানে পানি সরবরাহ করা আমু দরিয়া অববাহিকার পানি সরবরাহের ক্ষমতা ১১৯ শতাংশ এবং ভারত-পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকার পানি সরবরাহ ক্ষমতা কমেছে ৭৯ শতাংশ।

গবেষকরা জানান, তীব্র তাপদাহ একই গতিতে অব্যাহত থাকলে এই শতাব্দীর মধ্যভাগে তিব্বত মালভূমির সঞ্চিত জল থেকে ২৩০ গিগাটন জল হারিয়ে যেতে পারে। বিপর্যয় ঘটতে পারে পুরো অঞ্চলে।

একমাত্র শক্তিশালী জলবায়ু নীতিই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবে বলে মত দিচ্ছেন গবেষকরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বিপর্যয়ের মুখে বিশ্বের বড় বড় পানির আধার

প্রকাশিত সময় : ১২:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এশিয়ায় বিশ্বের সবচে বড় সুপেয় পানির আধারও বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় বের হয়ে আসে এ তথ্য। তারা জানান, এরইমধ্যে তিব্বত মালভূমি অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠ এবং ভূগর্ভস্থ দুই ক্ষেত্রেই কমছে পানির পরিমাণ। আগামী ৩০ বছরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করেছেন তারা। 

পয়াং লেক চীনের সুপেয় পানির সবচে বড় উৎস। সবুজ মাঠ, পাখির কোলাহলসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও লেকটির খ্যাতি কম নয়। তবে এ বছর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। পানি নেই বললেই চলে, মাটি ফেটে চৌচির। 

গবেষকরা জানান, তীব্র তাপদাহের কারণে জুলাই থেকে আগস্ট মাত্র ৪০ দিনেই ৭০ শতাংশ পানি উধাও হয়েছে লেক থেকে।

এ অবস্থায় শুধুমাত্র পয়াং লেকের ক্ষেত্রেই নয় বিশ্বের সবচে বড় সুপেয় পানির আধার তিব্বত মালভূমিতে ঘটতে যাচ্ছে একইরকম বিপর্যয়। যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট ও টেক্সাস ইউনিভার্সিটি এবং চীনের সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির এক দল বিজ্ঞানীর গবেষণা বলছে, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে তিব্বত মালভূমির কোনো কোনো স্থানে পানি হারানোর পরিমাণ ১৫ দশমিক ১৮ গিগাটনে পৌঁছেছে।

একইসঙ্গে মধ্য এশিয়া ও আফগানিস্তানে পানি সরবরাহ করা আমু দরিয়া অববাহিকার পানি সরবরাহের ক্ষমতা ১১৯ শতাংশ এবং ভারত-পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকার পানি সরবরাহ ক্ষমতা কমেছে ৭৯ শতাংশ।

গবেষকরা জানান, তীব্র তাপদাহ একই গতিতে অব্যাহত থাকলে এই শতাব্দীর মধ্যভাগে তিব্বত মালভূমির সঞ্চিত জল থেকে ২৩০ গিগাটন জল হারিয়ে যেতে পারে। বিপর্যয় ঘটতে পারে পুরো অঞ্চলে।

একমাত্র শক্তিশালী জলবায়ু নীতিই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবে বলে মত দিচ্ছেন গবেষকরা।