রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণ মামলায় আদালতে মামুনুল হক

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্ট কাণ্ডে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে ধর্ষণ মামলায় সপ্তম দফায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছে। এদিন তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানার দুই পুলিশ সদস্য আদালতে সাক্ষ্য দেন।

সোমবার (০৩ অক্টোবর) কড়া নিরাপত্তায় তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে হাজির করা হয়। এ দিন তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানা পুলিশের উপ-প

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সোনারগাঁ থানার রয়েল রিসোর্টে ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মামুনুল হক। ঘটনার দিন সোনারগাঁ থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তা ভুক্তভোগীকে ঘটনাস্থলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, আসামি মামুনুল হক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে বিয়ের কথা বললে, তিনি বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।

তিনি আরও বলেন, মামুনুল হক মামলার বাদী জান্নাতুল ঝর্ণাকে নিজের স্ত্রী দাবি করলেও বাদী তা অস্বীকার করেন। আসামির আইনজীবী ও আসামি আজ পর্যন্ত বিয়ের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। আরও ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করবেন আদালত। আদালত আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

এদিকে আসামির আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আজ আদালতে মোট চারজন পুলিশের সাক্ষ্য গ্রহণ করার কথা ছিল। তবে দুইজন পুলিশের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। আমরা এজাহারের সঙ্গে সাক্ষীর কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা সাক্ষীদের সাক্ষ্যতে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যতা দেখতে পেয়েছি।

তিনি বলেন, সেদিন ঘটনাস্থলে তারা দুইজন আসামি মামুনুল হক ও ঝর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিযোগের সত্যতা পান বলে আদালতকে অবহিত করেন। কিন্তু সেদিন কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হলো না? অভিযোগের সত্যতা যদি তারা পেয়ে থাকেন, তবে সেদিন ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য থাকা সত্ত্বেও তারা তাকে কেন গ্রেপ্তার না করে যেতে দিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আল্লামা মামুনুল হকের সমর্থকরা তাকে ছিনিয়ে নেয়। আমার কথা হলো সেদিন তার সমর্থকরা পুলিশ আসার অনেক পরে ঘটনাস্থলে সমবেত হয়। এর আগে কেন তারা তাকে গ্রেপ্তার করেনি?

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে আটক করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ভাঙচুর করে তাকে ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে তিনি ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ধর্ষণ মামলায় আদালতে মামুনুল হক

প্রকাশিত সময় : ০৯:২৬:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০২২

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্ট কাণ্ডে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে ধর্ষণ মামলায় সপ্তম দফায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছে। এদিন তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানার দুই পুলিশ সদস্য আদালতে সাক্ষ্য দেন।

সোমবার (০৩ অক্টোবর) কড়া নিরাপত্তায় তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে হাজির করা হয়। এ দিন তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানা পুলিশের উপ-প

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সোনারগাঁ থানার রয়েল রিসোর্টে ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মামুনুল হক। ঘটনার দিন সোনারগাঁ থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তা ভুক্তভোগীকে ঘটনাস্থলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, আসামি মামুনুল হক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে বিয়ের কথা বললে, তিনি বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।

তিনি আরও বলেন, মামুনুল হক মামলার বাদী জান্নাতুল ঝর্ণাকে নিজের স্ত্রী দাবি করলেও বাদী তা অস্বীকার করেন। আসামির আইনজীবী ও আসামি আজ পর্যন্ত বিয়ের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। আরও ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করবেন আদালত। আদালত আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

এদিকে আসামির আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আজ আদালতে মোট চারজন পুলিশের সাক্ষ্য গ্রহণ করার কথা ছিল। তবে দুইজন পুলিশের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। আমরা এজাহারের সঙ্গে সাক্ষীর কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা সাক্ষীদের সাক্ষ্যতে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যতা দেখতে পেয়েছি।

তিনি বলেন, সেদিন ঘটনাস্থলে তারা দুইজন আসামি মামুনুল হক ও ঝর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিযোগের সত্যতা পান বলে আদালতকে অবহিত করেন। কিন্তু সেদিন কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হলো না? অভিযোগের সত্যতা যদি তারা পেয়ে থাকেন, তবে সেদিন ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য থাকা সত্ত্বেও তারা তাকে কেন গ্রেপ্তার না করে যেতে দিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আল্লামা মামুনুল হকের সমর্থকরা তাকে ছিনিয়ে নেয়। আমার কথা হলো সেদিন তার সমর্থকরা পুলিশ আসার অনেক পরে ঘটনাস্থলে সমবেত হয়। এর আগে কেন তারা তাকে গ্রেপ্তার করেনি?

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে আটক করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ভাঙচুর করে তাকে ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে তিনি ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেছেন।