কোটা সুবিধা নিতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মা বানানো আলোচিত সেই গৃহবধূ সোনালী খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মজনু মিয়ার আদালতে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে হলফনামা করার চেষ্টার অপরাধে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এ ঘটনায় আদালতের বেঞ্চ সহকারী লিয়াকত আলী বাদী হয়ে সোমবার রাতে সোনালী খাতুনসহ তিন জনকে আসামি করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। আসামিরা হলেন- সোনালী খাতুন, নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু এবং উলিপুর পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) নুরুল হুদা।
এর আগে সোনালীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক ও শাশুড়ি জমিলা বেগমকে নিজের বাবা-মা বানিয়ে উপজেলার সাপখাওয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হন। ২০১৩ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। পরে ২০১৪ সালে তিনি সেই এসএসসি সনদ দেখিয়ে ভোটার হন।
সোনালী খাতুন সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটি নাওডাঙা আমিরটারী তালেবেরহাট গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হকের বড় ছেলে আনিছুর রহমানের স্ত্রী। তিনি ২০১২ সাল থেকে রংপুর বেতারে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে সোনালী প্রকৃত বাবা-মার নাম দিয়ে হলফনামা করতে যান। তিনি জন্ম তারিখ ১৯৯৪ সাল পরিবর্তন করে নতুন জন্ম তারিখ ১৯৯০ সাল দেখিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি জন্মসনদ দাখিল করেন। তার সেই জন্ম অনুযায়ী নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু তাকে নাগরিকত্ব সনদ প্রদান করেন।
এ ছাড়া তার দাখিলকৃত কাবিন নামায় বয়সের ঘর পূরণে বাধ্যতামূলক থাকলেও সেটি ফাঁকা রেখেই কাজি কাবিননামার প্রতিলিপি সরবরাহ করেন। সরবরাহকৃত সব সরকারি কাগজপত্র জাল ও জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় আদালত সোনালী খাতুনকে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশে সোপর্দ করেন এবং আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, সোনালী খাতুনকে আজ মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হবে।

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 

























