সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মামলার চাপ কমাতে এডিআর পদ্ধতির প্রয়োগ বাড়াতে হবে: আইনমন্ত্রী

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আদালতে মামলার চাপ কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতির প্রয়োগ বাড়াতে হবে। দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে এ সেবা দিতে হবে। পাশাপাশি এ বিষয়ে জনগণকে ব্যাপকভাবে সচেতন করতে হবে। 

তিনি বলেন, এডিআর পদ্ধতির সফল প্রয়োগ আনুষ্ঠানিক মামলার বোঝা কমিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার ক্ষেত্রেও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।

শনিবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর লা মেরিডিয়েন হোটেলে ‘ডিসকাশন অন মিটিং দ্য নিডস অব জাস্টিস সিকারস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় ইউএসএআইডির প্রমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস (পিপিজে) অ্যাকটিভিটির উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ২০টি জেলার জেলা ও দায়রা জজ এবং লিগ্যাল এইড অফিসাররা অংশ নেন। সভার মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম আরও জোরদার করতে নিজ নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে মতামত তুলে ধরেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত সমাজ ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। তিনি ১৯৭২ সালে জাতিকে যে সংবিধান উপহার দেন তাতে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ বা ধর্ম নির্বিশেষে সবার জন্য সমান অধিকার, ন্যায়বিচারের প্রবেশাধিকার এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকার সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে সাংবিধানিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সব মানুষের জন্য সময়োপযোগী ও মানসম্পন্ন বিচার সেবা প্রদানে বিচার বিভাগকে সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি আইনগত সহায়তা প্রদান আইন এবং প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে আইনগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

আনিসুল হক বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ও জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার অক্ষুণ্ণ রাখতে সরকার সর্বতভাবে চেষ্টা করেছে। সেসময় জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে সরকার সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকেই প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় দ্রুততম সময়ে আদালত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ জারি করে এবং পরবর্তীতে তা আইনে পরিণত করা হয়।  এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থার প্রবর্তন হয় এবং এর মাধ্যমে জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার চালু রাখা সম্ভব হয়। ভরা করোনার সময় কারাগারে অতিরিক্ত ভিড় কমাতে এই আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভার্চুয়াল আদালত প্রবর্তন  বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাছাড়া লকডাউনের সময় অনলাইনে ২৪ ঘণ্টা সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছিল। লিগ্যাল এইড অফিসগুলোর হটলাইন  খোলা রাখা হয়েছিল।

আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে সভায় ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন পরিচালক  ক্যাথরিন ডি. স্টিভেনস, ইউএসএআইডি প্রমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিসের চিফ অফ পার্টি হেদার গোল্ডস্মিথ, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. শেখ গোলাম মাহবুব প্রমুখ বক্তৃতা করেন।-একুশে টেলিভিশন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মামলার চাপ কমাতে এডিআর পদ্ধতির প্রয়োগ বাড়াতে হবে: আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৮:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আদালতে মামলার চাপ কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতির প্রয়োগ বাড়াতে হবে। দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে এ সেবা দিতে হবে। পাশাপাশি এ বিষয়ে জনগণকে ব্যাপকভাবে সচেতন করতে হবে। 

তিনি বলেন, এডিআর পদ্ধতির সফল প্রয়োগ আনুষ্ঠানিক মামলার বোঝা কমিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার ক্ষেত্রেও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।

শনিবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর লা মেরিডিয়েন হোটেলে ‘ডিসকাশন অন মিটিং দ্য নিডস অব জাস্টিস সিকারস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় ইউএসএআইডির প্রমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস (পিপিজে) অ্যাকটিভিটির উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ২০টি জেলার জেলা ও দায়রা জজ এবং লিগ্যাল এইড অফিসাররা অংশ নেন। সভার মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম আরও জোরদার করতে নিজ নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে মতামত তুলে ধরেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত সমাজ ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। তিনি ১৯৭২ সালে জাতিকে যে সংবিধান উপহার দেন তাতে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ বা ধর্ম নির্বিশেষে সবার জন্য সমান অধিকার, ন্যায়বিচারের প্রবেশাধিকার এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকার সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে সাংবিধানিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সব মানুষের জন্য সময়োপযোগী ও মানসম্পন্ন বিচার সেবা প্রদানে বিচার বিভাগকে সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি আইনগত সহায়তা প্রদান আইন এবং প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে আইনগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

আনিসুল হক বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ও জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার অক্ষুণ্ণ রাখতে সরকার সর্বতভাবে চেষ্টা করেছে। সেসময় জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে সরকার সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকেই প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় দ্রুততম সময়ে আদালত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ জারি করে এবং পরবর্তীতে তা আইনে পরিণত করা হয়।  এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থার প্রবর্তন হয় এবং এর মাধ্যমে জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার চালু রাখা সম্ভব হয়। ভরা করোনার সময় কারাগারে অতিরিক্ত ভিড় কমাতে এই আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভার্চুয়াল আদালত প্রবর্তন  বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাছাড়া লকডাউনের সময় অনলাইনে ২৪ ঘণ্টা সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছিল। লিগ্যাল এইড অফিসগুলোর হটলাইন  খোলা রাখা হয়েছিল।

আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে সভায় ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন পরিচালক  ক্যাথরিন ডি. স্টিভেনস, ইউএসএআইডি প্রমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিসের চিফ অফ পার্টি হেদার গোল্ডস্মিথ, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. শেখ গোলাম মাহবুব প্রমুখ বক্তৃতা করেন।-একুশে টেলিভিশন