বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করছে না অস্ট্রেলিয়া

জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করছে না অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, ২০১৮ সালে পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিলো, তা ‌‌‘শান্তির জন্য ক্ষতিকর ও অন্যান্য দেশের তুলনায় বেমানান’ ছিলো।

দেশটির মধ্য-বামপন্থী নতুন সরকার এ সিদ্ধান্ত বাতিল করবে। ফলে ইসরাইলে তাদের দূতাবাস তেলআবিবেই থাকবে। খবর বিবিসির।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় ইসরাইলকে আশ্বস্ত করে বলেন, অস্ট্রেলিয়া আগের মতোই ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকবে।

কিন্তু তার এ সিদ্ধান্ত ঘোষণায় খুশি হতে পারেনি ইসরাইল। ক্ষুব্ধ হয়ে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে দেশটি। তবে এর প্রশংসা করেছে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব।

ইসরায়েল-ফিলিস্তনি সংকটে জেরুজালেম শহরের মর্যাদা খুবই সংবেদনশীল একটি বিষয়। ২০১৭ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েক দশকের মার্কিন নীতিতে পরিবর্তন এনে প্রাচীন এই শহরকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। সেই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছিলো।

পরের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে মার্কিন দূতাবাস তেলআবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হয়।

এর কয়েক মাস পরেই অস্ট্রেলিয়ার তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন এবং তাদের দূতাবাস ওই শহরে সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ক্ষমতাসীন মধ্য-বামপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুর পাল্টে বলছে যে, রাজনৈতিক কারণে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মরিসন। অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ওই সিদ্ধান্ত ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটি ভবিষ্যত সমঝোতা মীমাংসার জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রতিশ্রুতিকে ক্ষুণ্ণ করেছিল।

তবে অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সিদ্ধান্তকে ‘অদূরদর্শী ও হতাশাব্যাঞ্জক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসরাইল সরকার। অন্যদিকে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনিরা।

যুক্তরাষ্ট্রের পর এ পর্যন্ত মাত্র তিনটি দেশ তাদের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করেছে। ব্রিটেনের বর্তমান সরকারও তার দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে।

জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েল তার চিরন্তন অবিভক্ত রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে- যা ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের দখলে- তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখতে চায়।

জেরুজালেমের ওপর ইসরায়েলি কর্তৃত্ব কখনোই বৈশ্বিক স্বীকৃতি পায়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করছে না অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৯:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২

জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করছে না অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, ২০১৮ সালে পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিলো, তা ‌‌‘শান্তির জন্য ক্ষতিকর ও অন্যান্য দেশের তুলনায় বেমানান’ ছিলো।

দেশটির মধ্য-বামপন্থী নতুন সরকার এ সিদ্ধান্ত বাতিল করবে। ফলে ইসরাইলে তাদের দূতাবাস তেলআবিবেই থাকবে। খবর বিবিসির।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় ইসরাইলকে আশ্বস্ত করে বলেন, অস্ট্রেলিয়া আগের মতোই ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকবে।

কিন্তু তার এ সিদ্ধান্ত ঘোষণায় খুশি হতে পারেনি ইসরাইল। ক্ষুব্ধ হয়ে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে দেশটি। তবে এর প্রশংসা করেছে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব।

ইসরায়েল-ফিলিস্তনি সংকটে জেরুজালেম শহরের মর্যাদা খুবই সংবেদনশীল একটি বিষয়। ২০১৭ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েক দশকের মার্কিন নীতিতে পরিবর্তন এনে প্রাচীন এই শহরকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। সেই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছিলো।

পরের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে মার্কিন দূতাবাস তেলআবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হয়।

এর কয়েক মাস পরেই অস্ট্রেলিয়ার তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন এবং তাদের দূতাবাস ওই শহরে সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ক্ষমতাসীন মধ্য-বামপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুর পাল্টে বলছে যে, রাজনৈতিক কারণে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মরিসন। অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ওই সিদ্ধান্ত ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটি ভবিষ্যত সমঝোতা মীমাংসার জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রতিশ্রুতিকে ক্ষুণ্ণ করেছিল।

তবে অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সিদ্ধান্তকে ‘অদূরদর্শী ও হতাশাব্যাঞ্জক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসরাইল সরকার। অন্যদিকে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনিরা।

যুক্তরাষ্ট্রের পর এ পর্যন্ত মাত্র তিনটি দেশ তাদের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করেছে। ব্রিটেনের বর্তমান সরকারও তার দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে।

জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েল তার চিরন্তন অবিভক্ত রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে- যা ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের দখলে- তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখতে চায়।

জেরুজালেমের ওপর ইসরায়েলি কর্তৃত্ব কখনোই বৈশ্বিক স্বীকৃতি পায়নি।