সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবার শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় থানায় রাবি প্রশাসনের পাল্টা অভিযোগ

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের পর এবার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রাবি শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। শনিবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর রাজপাড়া থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ১৯ অক্টোবর আনুমানিক সাড়ে ৮টায় গুরুতর আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এম.জে.এম. শাহরিয়ারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত শাহরিয়ারকে চিকিৎসার জন্য আইসিইউ’তে না নিয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসক ও নার্স বিলম্বে আসে এবং নানা অযুহাতে চিকিৎসা প্রদানে কালক্ষেপণ করতে থাকে। ফলে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিলম্ব ও বিনা চিকিৎসায় শাহরিয়ার মৃত্যুবরণ করে।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, শাহরিয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি সাধারণ ছাত্রদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছায় এবং চিকিৎসকের অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু ঘটায় স্বাভাবিকভাবেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। সেই সময় ৮ নম্বর ওয়ার্ড ও তার আশেপাশের ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক, ইন্টার্নী, নার্স, আনসার ও তাদের উচ্ছৃঙ্খল সহযোগীরা ন্যাক্কারজনকভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শোকার্ত শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করে, অকথ্য গালিগালাজ করে এবং আকস্মিকভাবে হামলা চালায়।

হামলায় তারা লাঠি এবং শল্যচিকিৎসায় ব্যবহৃত ধারালো যন্ত্রসামগ্রী দিয়ে আনুমানিক শতাধিক শিক্ষার্থীকে গুরুতরভাবে আহত করে। আহত শিক্ষার্থীদের অনেককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র, বারিন্দ মেডিকেলসহ রাজশাহীর অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তবে তা এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি। পর্যালোচনা চলছে। দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

গত ২০ অক্টোবর একই থানায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ এনে একটি অভিযোগ দায়ের করে রামেক কর্তৃপক্ষ। সেখানে অজ্ঞাতনামা ৩০০ জন শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

এবার শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় থানায় রাবি প্রশাসনের পাল্টা অভিযোগ

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৩:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের পর এবার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রাবি শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। শনিবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর রাজপাড়া থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ১৯ অক্টোবর আনুমানিক সাড়ে ৮টায় গুরুতর আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এম.জে.এম. শাহরিয়ারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত শাহরিয়ারকে চিকিৎসার জন্য আইসিইউ’তে না নিয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসক ও নার্স বিলম্বে আসে এবং নানা অযুহাতে চিকিৎসা প্রদানে কালক্ষেপণ করতে থাকে। ফলে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিলম্ব ও বিনা চিকিৎসায় শাহরিয়ার মৃত্যুবরণ করে।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, শাহরিয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি সাধারণ ছাত্রদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছায় এবং চিকিৎসকের অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু ঘটায় স্বাভাবিকভাবেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। সেই সময় ৮ নম্বর ওয়ার্ড ও তার আশেপাশের ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক, ইন্টার্নী, নার্স, আনসার ও তাদের উচ্ছৃঙ্খল সহযোগীরা ন্যাক্কারজনকভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শোকার্ত শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করে, অকথ্য গালিগালাজ করে এবং আকস্মিকভাবে হামলা চালায়।

হামলায় তারা লাঠি এবং শল্যচিকিৎসায় ব্যবহৃত ধারালো যন্ত্রসামগ্রী দিয়ে আনুমানিক শতাধিক শিক্ষার্থীকে গুরুতরভাবে আহত করে। আহত শিক্ষার্থীদের অনেককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র, বারিন্দ মেডিকেলসহ রাজশাহীর অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তবে তা এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি। পর্যালোচনা চলছে। দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

গত ২০ অক্টোবর একই থানায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ এনে একটি অভিযোগ দায়ের করে রামেক কর্তৃপক্ষ। সেখানে অজ্ঞাতনামা ৩০০ জন শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়।