ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এর পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর এবং দেশের নদীবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখানো হয়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) এই সতর্কতা সংকেত দেখিয়েছে আবহাওয়া অফিস। একে কেন্দ্র করে খুলনা জেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার মধ্যরাত থেকে খুলনাসহ আশপাশ এলাকায় কখনো হালকা, কখনো মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রার আশপাশের নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক বাড়ছে চলেছে উপকূলবাসীর মনে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত খুলনা ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় সিত্রাং পৌঁছাতে পারে বলে অশংকা করছে আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা। এছাড়া, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন। সিত্রাং এর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার দুপুর ২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি এড়াতে দাকোপে ১১৮, বটিয়াঘাটায় ২৭, কয়রায় ১১৭, ডুমুরিয়ায় ২৫, পাইকগাছায় ৩২, তেরখাদায় ২২, রূপসায় ৩৯, ফুলতলায় ১৩ ও দিঘলিয়ায় ১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয় হচ্ছে। সাইক্লোন শেল্টারে ও আশ্রয় কেন্দ্র যারা আসবেন তাদের শুকনো খাবারে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের যাতে দ্রুত সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে পাওে সেই জন্য উপজেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আজ সোমবারের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার । খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, খুলনার ৯টি উপজেলায় ৪০৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখানে যারা আশ্রয় নিবেন তাদের জন্য শুকনো খাবার, চাল ও টাকা বরাদ্দ আছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ সোমবার দুপুর দুইটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা করা হবে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকায় সিত্রাংয়ের প্রভাব শুরু হয়েছে। এর প্রভাবে খুলনার বেশিরভাগ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সোমবার দুপুরের পর থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা আছে। উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৭ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছেও বলে জানিয়েছেন এই আবহাওয়াবিদ।