সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রামেক হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় রাবি অধ্যাপকের প্রতীকী অনশন

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতীকী অনশনে বসেছেন রাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন খান। সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বরের পশ্চিম পাশে তিনি এই অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। কর্মসূচিটি বিকাল ৫টা পর্যন্ত তিনি পালন করবেন বলে তিনি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেন।

অনশন কর্মসূচি থেকে অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন খান সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার অনিয়ম, অবহেলা ও রোগীর স্বজনদের সাথে অশোভন আচরণের প্রতিবাদ জানান। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।

অনশন কর্মসূচির বিষয়ে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, সারাদেশে ডাক্তারদের অনীহা ও অবহেলায় সাধারণ মানুষেরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। হাসপাতালে কোন দূর্ঘটনায় রোগীর স্বজনরা প্রতিবাদ জানালে তারা দলবেঁধে তাদের ওপর চড়াও হচ্ছে। বিষয়টা ন্যাক্কারজনক। সর্বশেষ রামেক হাসপাতালে আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর যে ঘটনাটি ঘটেছে তা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ডাক্তার মানুষের জীবন রক্ষা করবে কিন্তু তারা অপরেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি নিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা করেছে, তা খুবই নিন্দনীয়। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দরকার এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। যাতে করে আগামী দিনে এ ধরণের ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হয়রানির স্বীকার না হয়।

রাবি এই অধ্যাপক বলেন, এর আগেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক শিক্ষককে ইন্টার্ন ডাক্তাররা চরম লাঞ্চিত করেছিলো। সে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কিন্তু প্রতিবাদ করেনি। আমাদের সকলের এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করা উচিত। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া আমাদের মৌলিক অধিকার কিন্তু আমরা তা পাচ্ছি না। প্রতিবছর আমাদের মেডিকেল খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে দরিদ্র সীমার নিচে চলে যাচ্ছে শুধুমাত্র চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করতে

গত ১৯ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান উপরের বারান্দা থেকে পড়ে যান রাবির মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার। পরে তাকে উদ্ধার রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু তার মৃত্যুর ঘটনায় কালক্ষেপনের অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ রাবি শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স, আনসাররা রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। হামলায় রাবির মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশ নাথ, নাজমুল হোসেন, আব্দুল আহাদ, রাকিব হাসানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রামেক হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় রাবি অধ্যাপকের প্রতীকী অনশন

প্রকাশিত সময় : ১১:৩৮:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতীকী অনশনে বসেছেন রাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন খান। সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বরের পশ্চিম পাশে তিনি এই অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। কর্মসূচিটি বিকাল ৫টা পর্যন্ত তিনি পালন করবেন বলে তিনি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেন।

অনশন কর্মসূচি থেকে অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন খান সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার অনিয়ম, অবহেলা ও রোগীর স্বজনদের সাথে অশোভন আচরণের প্রতিবাদ জানান। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।

অনশন কর্মসূচির বিষয়ে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, সারাদেশে ডাক্তারদের অনীহা ও অবহেলায় সাধারণ মানুষেরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। হাসপাতালে কোন দূর্ঘটনায় রোগীর স্বজনরা প্রতিবাদ জানালে তারা দলবেঁধে তাদের ওপর চড়াও হচ্ছে। বিষয়টা ন্যাক্কারজনক। সর্বশেষ রামেক হাসপাতালে আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর যে ঘটনাটি ঘটেছে তা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ডাক্তার মানুষের জীবন রক্ষা করবে কিন্তু তারা অপরেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি নিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা করেছে, তা খুবই নিন্দনীয়। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দরকার এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। যাতে করে আগামী দিনে এ ধরণের ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হয়রানির স্বীকার না হয়।

রাবি এই অধ্যাপক বলেন, এর আগেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক শিক্ষককে ইন্টার্ন ডাক্তাররা চরম লাঞ্চিত করেছিলো। সে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কিন্তু প্রতিবাদ করেনি। আমাদের সকলের এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করা উচিত। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া আমাদের মৌলিক অধিকার কিন্তু আমরা তা পাচ্ছি না। প্রতিবছর আমাদের মেডিকেল খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে দরিদ্র সীমার নিচে চলে যাচ্ছে শুধুমাত্র চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করতে

গত ১৯ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান উপরের বারান্দা থেকে পড়ে যান রাবির মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার। পরে তাকে উদ্ধার রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু তার মৃত্যুর ঘটনায় কালক্ষেপনের অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ রাবি শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স, আনসাররা রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। হামলায় রাবির মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশ নাথ, নাজমুল হোসেন, আব্দুল আহাদ, রাকিব হাসানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।