প্রায় অর্ধযুগ পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের ২৬ তম সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। আগামী ১২ নভেম্বর রাবি ছাত্রলীগের সম্মেলনের দিন ঠিক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপরমহলে পদপ্রত্যাশীদের নেতাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। ক্যাম্পাসে অনুসারীদের নিয়ে নিয়মিত শোডাউন দিচ্ছেন তারা। দিনরাত ক্যাম্পাসে চলছে বিভিন্ন পদপ্রত্যাশী ভাইয়ের নামে স্লোগান। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জায়গায় টাঙানো হয়েছে ব্যানার, হলের ব্লকে ব্লকে চলছে নেতাদের পোস্টার সাঁটানো। কে হবেন সভাপতি, কে হবেন সাধারণ সম্পাদক? এনিয়ে রাবি ক্যাম্পাসে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, সম্মেলনের দিন ঘোষণার পর থেকে রাবি শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা ক্যাম্পাসে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। ক্যাম্পাসে নিজ অনুসারীদের নিয়ে দিচ্ছেন শোডাউন। মোটরসাইকেলে চড়ে ক্যাম্পাসে চলছে নেতাদের নামে স্লোগান। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক, প্যারিস রোডসহ বিভিন্ন চত্বর ছেঁয়ে গেছে ব্যানারে, আবসিক হলের ব্লকে ব্লকে চলছে পোস্টার সাঁটানো। এছাড়া পদপ্রত্যাশীরা নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই আবার অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন মিছিল, মিটিং, সমাবেশ করছেন। কেউ সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সমাবেশ থেকে।
রাবি ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর রাবি শাখা ছাত্রলীগের ২৫তম সম্মেলন হয়। সম্মেলনের ৩ দিন পর গোলাম কিবরিয়াকে সভাপতি ও ফয়সাল আহমেদ রুনুকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছর মেয়াদী ১৩ সদস্যের আংশিক কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরবর্তীতে প্রায় ছয় মাস পর ২০১৭ সালের ১৯ জুন ২৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়। প্রায় দীর্ঘ ৬ বছর পর গত ২৫ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১২ নভেম্বর রাবি শাখা ছাত্রলীগের ২৬ তম সম্মেলনের ঘোষণা দেন।
দৈনিক দেশ নিউজ’র সাথে একান্ত সাক্ষাকার দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়(রাবি) ছাত্রলীগের সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোঃ মঈনুদ্দিন রাহাত , সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক দেশ নিউজ প্রকাশক রায়হান রোহান।
কেন পদপার্থী জন্য আবেদন করছেন?
মোঃ মঈনুদ্দিন রাহাত: সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী
আপনি নেতৃত্বে আসলে রাজনীতিতে কিরূপ ভূমিকা রাখবেন?
মোঃ মঈনুদ্দিন রাহাত: ছাত্রলীগ একটি বৃহৎ সংগঠন। সময়ের প্রয়োজনে ছাত্রলীগের সৃষ্টি। ছাত্রলীগ সবসময় সাধারন জনগন ও শিক্ষার্থীদের ন্যায়ের পক্ষে কাজ করে। যেহেতু দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের হয়ে রাজপথে পরিশ্রম করেছি ,শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবিতে পাশে থেকেছি তাই ভবিষ্যতে ও সাধারন শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে চাই।
শোনা যায় যে হলের ছিট বানিজ্য কথা আপনি নেতৃত্ব আসলে কতটুকু ভূমিকা রাখবেন ?
মোঃ মঈনুদ্দিন রাহাত:নেতৃত্ব মানে একজন মানুষের অন্যদের প্রভাবিত ও অনুপ্রাণিত করা।আমার লক্ষ্য হবে ছাত্রলীগের সবাইকে সবসময় ভালো কাজে অনুপ্রাণিত করা।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবিতে যেমনভাবে পাশে থাকবো তেমনি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবো।সর্বোপরি, দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সবসময় কাজ করতে চাই এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে রোল মডেল হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চাই। মূলত হলগুলাই ক্যাম্পাস রাজনীতির প্রাণ।হলে সিট বাণিজ্যের বিষয়ে যেহেতু সঠিক কোনো তথ্য আমার জানা নাই।তারপরেও চেষ্টা করবো সিট বানিজ্য হয়ে থাকলে সেই ব্যাপারে জিরো টলারেন্স পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চলতি বছরে শিক্ষার্থী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্যসহ অন্তত ৪০টি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা?
মোঃ মঈনুদ্দিন রাহাত: ছাত্রলীগ একটি বৃহৎ সংগঠন। এখানে অনেক ধরনের সমালোচনা হবে। ছাত্রলীগ ভালো কাজ করে দেখেই সামান্য নিষয়েও সমালোচনা হয়ে থাকে।কিন্তু, আমি মনে করে ছাত্রলীগের ইতিবাচক দিকটাই বেশি।আর কেনো ব্যক্তির দায়ভার সংগঠন নিবে না।নিজের ও দলের ইমেজের কথা ভাবে।তাহলে অপরাধ প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে।সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে অপরাধ প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করি।আমারও সেই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ থাকবে।
আপনি বলছেন কেনো কর্মীর ব্যক্তিগত দায় ভার সংগঠন নিবে না, সে কর্মী তো আপনার অনুসারী হতে পারে তখন কি করবেন?
মোঃ মঈনুদ্দিন রাহাত:অন্যায় যে করবে সে যেই হোক দল তাকে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নাই।
সর্বোপরি, আমি মনে করি আগামী ১২ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে সৎ, যোগ্য, সাংগঠনিক ও ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব উঠে আসবে।