মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাজিলে শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ

ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, কংগ্রেস ও সুপ্রিম কোর্টে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় দেশটিতে চলছে গণগ্রেপ্তার। আর এর মধ্যেই দেশটির বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ওই নির্দেশের পরপরই ব্রাজিলের সামরিক পুলিশের সাবেক কমান্ডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্রাসিলিয়ার সাবেক জননিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন টরেসসহ অন্যান্যরাও রয়েছেন। তবে টরেস বলেছেন, দাঙ্গায় তার কোনও ভূমিকা ছিল না।

এছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালানোর পরে পুলিশ কমান্ডার কর্নেল ফাবিও অগাস্টোকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

প্রবীণ বামপন্থি নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার এক সপ্তাহ পরই এই দাঙ্গা শুরু হয়।

বিবিসি বলছে, দাঙ্গার পরে গ্রেপ্তারকৃত প্রায় ১৫০০ জনকে পুলিশ একাডেমিতে আনা হয়। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জনকে পৃথক জায়গায় নেওয়া হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনার জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা পাঁচ দিন সময় পাবেন।

এর আগে মঙ্গলবার ব্রাসিলিয়ার সাবেক জননিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন টরেসের বিরুদ্ধে ‘কাঠামোগত নাশকতা অভিযান’ পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়। ব্রাসিলিয়াতে নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে নিযুক্ত রিকার্ডো ক্যাপেলি বলছেন, সরকারি ভবনেগুলোতে হামলার আগে টরেসের ‘কমান্ডের অভাব’ ছিল।এদিকে ব্রাজিলিয়ান কংগ্রেস ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলার দায় বলসোনারোর ঘাড়ে চাপিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুলা। তবে লুলার সেই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বলসোনারো। পাশাপাশি তিনি এই ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছেন। তবে তিনি এও দাবি করেছেন, তার সমর্থকদের ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে’র অধিকার রয়েছে। এদিকে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্ব ফেডারেল বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন লুলা দা সিলভা।  এর আগে গত অক্টোবরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জিতে তৃতীয়বারের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হন লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। এই নির্বাচনে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো পান ৪৯.১ শতাংশ ভোট। এদিকে জয়ী লুলা পান ৫০.৯ শতাংশ ভোট। ব্রাজিলে এই প্রথম কোনও প্রার্থী প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন নির্বাচনে হেরে যান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ব্রাজিলে শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ

প্রকাশিত সময় : ০৪:০০:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, কংগ্রেস ও সুপ্রিম কোর্টে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় দেশটিতে চলছে গণগ্রেপ্তার। আর এর মধ্যেই দেশটির বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ওই নির্দেশের পরপরই ব্রাজিলের সামরিক পুলিশের সাবেক কমান্ডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্রাসিলিয়ার সাবেক জননিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন টরেসসহ অন্যান্যরাও রয়েছেন। তবে টরেস বলেছেন, দাঙ্গায় তার কোনও ভূমিকা ছিল না।

এছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালানোর পরে পুলিশ কমান্ডার কর্নেল ফাবিও অগাস্টোকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

প্রবীণ বামপন্থি নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার এক সপ্তাহ পরই এই দাঙ্গা শুরু হয়।

বিবিসি বলছে, দাঙ্গার পরে গ্রেপ্তারকৃত প্রায় ১৫০০ জনকে পুলিশ একাডেমিতে আনা হয়। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জনকে পৃথক জায়গায় নেওয়া হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনার জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা পাঁচ দিন সময় পাবেন।

এর আগে মঙ্গলবার ব্রাসিলিয়ার সাবেক জননিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন টরেসের বিরুদ্ধে ‘কাঠামোগত নাশকতা অভিযান’ পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়। ব্রাসিলিয়াতে নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে নিযুক্ত রিকার্ডো ক্যাপেলি বলছেন, সরকারি ভবনেগুলোতে হামলার আগে টরেসের ‘কমান্ডের অভাব’ ছিল।এদিকে ব্রাজিলিয়ান কংগ্রেস ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলার দায় বলসোনারোর ঘাড়ে চাপিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুলা। তবে লুলার সেই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বলসোনারো। পাশাপাশি তিনি এই ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছেন। তবে তিনি এও দাবি করেছেন, তার সমর্থকদের ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে’র অধিকার রয়েছে। এদিকে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্ব ফেডারেল বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন লুলা দা সিলভা।  এর আগে গত অক্টোবরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জিতে তৃতীয়বারের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হন লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। এই নির্বাচনে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো পান ৪৯.১ শতাংশ ভোট। এদিকে জয়ী লুলা পান ৫০.৯ শতাংশ ভোট। ব্রাজিলে এই প্রথম কোনও প্রার্থী প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন নির্বাচনে হেরে যান।