সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারীর যে গোপন রোগ সম্পর্কে জানা জরুরি

নারীদের গোপনাঙ্গের একটি রোগ হলো ভ্যাজাইনাইটিস। এ সমস্যায় ভ্যাজাইনাতে প্রদাহ, চুলকানি, ব্যথা অথবা স্রাবের পরিমাণ ও গন্ধ পরিবর্তিত হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য কারণেও এসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন: ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, ছত্রাক সংক্রমণ, যৌনবাহিত সংক্রমণ (ট্রাইকোমোনিয়াসিস, ক্ল্যামাইডিয়া ও গনোরিয়া), সোরিয়াসিস, একজিমা, ডিটারজেন্ট কিংবা সাবানের প্রভাব ও যৌনক্রিয়া। একারণে ভ্যাজাইনার উপসর্গ বিবেচনায় প্রকৃত সমস্যা শনাক্ত করাটা একটু কঠিনই বটে।

প্রায় সকল বয়সের নারীদের ভ্যাজাইনাইটিস হতে পারে। ভালো খবর হলো- অনেক ভ্যাজাইনাইটিসই চিকিৎসা ছাড়া সেরে ওঠে। প্রায়ই এ রোগে ভুগলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ভ্যাজাইনাইটিস হলে গোপনাঙ্গে কিছু ব্যবহার করতে হবে?

যদি বেশি ব্যথা না থাকে, তাহলে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে- ভ্যাজাইনাকে নিজ থেকে নিরাময়ের সুযোগ দিন। সাবান বা শাওয়ার জেল ব্যবহার করবেন না, কারণ গোপনাঙ্গ আরো উক্ত্যক্ত হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, ভ্যাজাইনার বাহ্যিক অংশ (ভালভার এরিয়া) খুবই সংবেদনশীল।

ডুশে ব্যবহার করবেন না। চিকিৎসকদের মতে, ডুশিং ভ্যাজাইনাইটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে অথবা বিদ্যমান সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। যারা ডুশিং করেন তাদের গোপনাঙ্গে সংক্রমণের প্রবণতা বেশি, কারণ যেসব ব্যাকটেরিয়া ভ্যাজাইনার পরিবেশকে স্বাভাবিক রাখে তা কমে যায়।

অনেক নারীই ভ্যাজাইনাইটিস হলে উক্ত্যক্ততা প্রশমনে ওষুধের দোকান থেকে ওটিসি ছত্রাক সংক্রমণের ওষুধ ব্যবহার করেন। কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ উনজালি মালহোত্রা বলেন, ‘অনেকেই গোপনাঙ্গের চুলকানি ও অস্বাভাবিক স্রাব দেখে মনে করেন যে, এটি ছত্রাক সংক্রমণ।’ প্রথমবারের জন্য সেলফ-ট্রিটমেন্ট ঠিক আছে। কিন্তু উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী হলে অথবা ফিরে আসলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, কারণ এটি ছত্রাক সংক্রমণ না হয়ে আরো বড় কিছু হতে পারে। উক্ত্যক্ত ভ্যাজাইনাল টিস্যু সেরে না ওঠলে সহজেই সংক্রমণের প্রবণতা বেড়ে যায়।

কেবল একজন চিকিৎসকই ভ্যাজাইনাইটিসের প্রকৃত কারণ শনাক্ত করতে পারেন। তিনি ভ্যাজাইনা ও ভালভার পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। তিনি গোপনাঙ্গের লালতা অথবা অস্বাভাবিক পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। তিনি ভ্যাজাইনাইটিস সৃষ্টিকারী কারণ (যেমন- ব্যাকটেরিয়ার অতিবৃদ্ধি অথবা ট্রাইকোমোনিয়াসিস নামক যৌনবাহিত পরজীবী) শনাক্তকরণে ভ্যাজাইনাল কালচার নিতে পারেন।

ভ্যাজাইনাইটিসের উৎস শনাক্ত হলে এটি সহজেই চিকিৎসা করা যায়। সাধারণত ভ্যাজাইনাকে কেবল পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিলে সমস্যাটি সেরে ওঠে। পানিতে এপসম সল্টও মেশাতে পারেন । তবে উপসর্গ উপশমে দেরী হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক, একজিমার মতো চর্মরোগের জন্য স্টেরয়েড ক্রিম অথবা ছত্রাকের অতিবৃদ্ধির জন্য ছত্রাকনাশক ওষুধ দিতে পারেন।

তথ্যসূত্র: বেস্ট হেলথ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

নারীর যে গোপন রোগ সম্পর্কে জানা জরুরি

প্রকাশিত সময় : ০৯:৪৩:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩

নারীদের গোপনাঙ্গের একটি রোগ হলো ভ্যাজাইনাইটিস। এ সমস্যায় ভ্যাজাইনাতে প্রদাহ, চুলকানি, ব্যথা অথবা স্রাবের পরিমাণ ও গন্ধ পরিবর্তিত হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য কারণেও এসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন: ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, ছত্রাক সংক্রমণ, যৌনবাহিত সংক্রমণ (ট্রাইকোমোনিয়াসিস, ক্ল্যামাইডিয়া ও গনোরিয়া), সোরিয়াসিস, একজিমা, ডিটারজেন্ট কিংবা সাবানের প্রভাব ও যৌনক্রিয়া। একারণে ভ্যাজাইনার উপসর্গ বিবেচনায় প্রকৃত সমস্যা শনাক্ত করাটা একটু কঠিনই বটে।

প্রায় সকল বয়সের নারীদের ভ্যাজাইনাইটিস হতে পারে। ভালো খবর হলো- অনেক ভ্যাজাইনাইটিসই চিকিৎসা ছাড়া সেরে ওঠে। প্রায়ই এ রোগে ভুগলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ভ্যাজাইনাইটিস হলে গোপনাঙ্গে কিছু ব্যবহার করতে হবে?

যদি বেশি ব্যথা না থাকে, তাহলে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে- ভ্যাজাইনাকে নিজ থেকে নিরাময়ের সুযোগ দিন। সাবান বা শাওয়ার জেল ব্যবহার করবেন না, কারণ গোপনাঙ্গ আরো উক্ত্যক্ত হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, ভ্যাজাইনার বাহ্যিক অংশ (ভালভার এরিয়া) খুবই সংবেদনশীল।

ডুশে ব্যবহার করবেন না। চিকিৎসকদের মতে, ডুশিং ভ্যাজাইনাইটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে অথবা বিদ্যমান সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। যারা ডুশিং করেন তাদের গোপনাঙ্গে সংক্রমণের প্রবণতা বেশি, কারণ যেসব ব্যাকটেরিয়া ভ্যাজাইনার পরিবেশকে স্বাভাবিক রাখে তা কমে যায়।

অনেক নারীই ভ্যাজাইনাইটিস হলে উক্ত্যক্ততা প্রশমনে ওষুধের দোকান থেকে ওটিসি ছত্রাক সংক্রমণের ওষুধ ব্যবহার করেন। কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ উনজালি মালহোত্রা বলেন, ‘অনেকেই গোপনাঙ্গের চুলকানি ও অস্বাভাবিক স্রাব দেখে মনে করেন যে, এটি ছত্রাক সংক্রমণ।’ প্রথমবারের জন্য সেলফ-ট্রিটমেন্ট ঠিক আছে। কিন্তু উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী হলে অথবা ফিরে আসলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, কারণ এটি ছত্রাক সংক্রমণ না হয়ে আরো বড় কিছু হতে পারে। উক্ত্যক্ত ভ্যাজাইনাল টিস্যু সেরে না ওঠলে সহজেই সংক্রমণের প্রবণতা বেড়ে যায়।

কেবল একজন চিকিৎসকই ভ্যাজাইনাইটিসের প্রকৃত কারণ শনাক্ত করতে পারেন। তিনি ভ্যাজাইনা ও ভালভার পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। তিনি গোপনাঙ্গের লালতা অথবা অস্বাভাবিক পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। তিনি ভ্যাজাইনাইটিস সৃষ্টিকারী কারণ (যেমন- ব্যাকটেরিয়ার অতিবৃদ্ধি অথবা ট্রাইকোমোনিয়াসিস নামক যৌনবাহিত পরজীবী) শনাক্তকরণে ভ্যাজাইনাল কালচার নিতে পারেন।

ভ্যাজাইনাইটিসের উৎস শনাক্ত হলে এটি সহজেই চিকিৎসা করা যায়। সাধারণত ভ্যাজাইনাকে কেবল পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিলে সমস্যাটি সেরে ওঠে। পানিতে এপসম সল্টও মেশাতে পারেন । তবে উপসর্গ উপশমে দেরী হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক, একজিমার মতো চর্মরোগের জন্য স্টেরয়েড ক্রিম অথবা ছত্রাকের অতিবৃদ্ধির জন্য ছত্রাকনাশক ওষুধ দিতে পারেন।

তথ্যসূত্র: বেস্ট হেলথ