প্রথম পর্বের ইজতেমার সময় কুড়িল বিশ্বরোড ও রেডিসন ব্লু হোটেলের সামনে থেকে গণপরিবহন বন্ধ ছিল। তবে আজ রোববার এ রুটে সব ধরনের গণপরিবহন চলছে। এতে করে গণপরিবহনে চড়ে ইজতেমা ময়দানে আসতে পারছেন মুসল্লিরা। ‘মাত্র এক ঘণ্টায় মোহাম্মদপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর চলে এসেছি। ভালো কাজে এসেছি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়েছে। এখন মাঠে গিয়ে বয়ান শুনবো তারপরে আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করবো।’ কথাগুলো বলছিলেন ইজতেমা ময়দানের উদ্দেশে আসা মুসল্লি এনায়েত হোসেন শাওন। রোববার (২২জানুয়ারি) সকালে টঙ্গি ইজতেমা মাঠের উদ্দেশে এসে আব্দুল্লাহপুর নামেন এ মুসল্লি। যানজট ছাড়াই মোহাম্মদপুর থেকে পরিবার নিয়ে আসেন এ ব্যক্তি। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত আজ হলেও সকাল থেকে বিমানবন্দর সড়কে নেই যানজট। ফলে কষ্ট ও ভোগান্তি ছাড়াই বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের বয়ান ও মোনাজাতে অংশ নিতে দল বেধে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে যাচ্ছেন মুসল্লিরা। রোববার (২২জানুয়ারি) সকাল ৭ টা থেকে ৯টা পর্যন্ত খিলক্ষেত, বিমানবন্দর, উত্তরা ও আব্দুল্লাহপুর সড়কে এই দৃশ্য দেখা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিমানবন্দর সড়কের সব গণপরিবহন উত্তরা ও আব্দুল্লাহপুর হয়ে ইজতেমার মাঠ পর্যন্ত যেতে পারছে। তবে যানজট এড়াতে কিছু কিছু বাস আব্দুল্লাহপুরেই যাত্রা শেষ করছে। যাত্রী থাকা সাপেক্ষে কিছু বাস ইজতেমা মাঠের দিকে যাচ্ছে। আব্দুল্লাহপুর ব্রিজ পেরিয়ে রাস্তায় দায়িত্ব পালন করা এক পুলিশ সদস্য বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত খুব বেশি যানজট দেখা না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাস ও অন্যান্য যানবাহন চলতে দিচ্ছি। তবে মানুষের চাপ বাড়লে আমরা যানচলাচল বন্ধ করে দেবো। সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে আসা তুরাগ পরিবহনের চালক সজিবুর রহমান বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম কুড়িল থেকে রাস্তা বন্ধ থাকবে। কিন্তু কোথাও রাস্তা বন্ধ পাইনি। সরাসরি আব্দুল্লাহপুর পেরিয়ে ইজতেমা মাঠের কাছে চলে আসতে পেরেছি। যাত্রীতেও ভর্তি পুরো বাস। প্রথম পর্বের ইজতেমার মতো এখন পর্যন্ত আজ কোথাও রাস্তা বন্ধ নেই। এদিকে রামপুরা থেকে ইজতেমা ময়দানের কাছাকাছি এসে নেমেছেন রিয়াদুল ইসলাম নামের এক মুসল্লি। তিনি বলেন, তুরাগ বাসে চড়ে এলাম। অন্যান্যবার যেমন রাস্তা বন্ধ থাকে আজ তা তেমনটা দেখলাম না। তবে আব্দুল্লাহপুর থেকে অনেক মুসল্লি হেঁটে ইজতেমার মাঠে যাচ্ছেন। বর্তমানে ইজতেমার শেষ দিনের বয়ান চলছে। ভারতের মোরসালিন নিজামুদ্দিনের বয়ান তাৎক্ষণিকভাবে বাংলায় তরজমা করছেন বাংলাদেশের মাওলানা আশরাফুল। বয়ানের পর নাস্তার বিরতি দিয়ে ৯টা থেকে তালিম করবেন মাওলানা মোশাররফ। সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হবে হেদায়েতের কথা। বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত শুরু হবে। আখেরি মোনাজাত ও হেদায়েতি বয়ান করবেন ইজতেমায় আদি তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বি দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী। ৬২ দেশের প্রায় ৮ হাজার ও দেশের লাখ লাখ মুসল্লির আগমনে মুখর ইজতেমা ময়দানসহ টঙ্গীর আশপাশ। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শনিবার (২১ জানুয়ারি) রাত থেকেই ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। শীত উপেক্ষা বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে জড়ো হয়েছেন লাখো মুসল্লি। গত ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। মাওলানা যোবাইরের অনুসারীরা এতে অংশগ্রহণ করেন। এরপর চারদিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পক্ষের (মাওলানা সাদ অনুসারী) বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন। আজ আখেরি মোনাজাতে মধ্য দিয়ে এই পর্ব শেষ হবে।