ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এদেশ কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, ব্যক্তি সম্পত্তি নয়। এটা জনগণের সম্পত্তি। জনগণ এ দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। এখানে যা ইচ্ছা তাই করে কেউ পার পেয়ে যাবে, চলে যাবে তা হতে পারে না। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে, আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। রবিবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ শিরোনামে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে ‘জনগণের সার্বভৌমত্ব’ প্রতিষ্ঠা করতে আইনজীবীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, এ দেশে আমরা যে আইনের শাসনের কথা বলি তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আইন সবার জন্য সমান। আইনের বইয়ে লেখা এক আইন আর বাস্তবায়ন হবে আরেক আইন তা হবে না। ফখরুল বলেন, আজকে তথাকথিত উন্নয়নের কথা বলে লুটপাট চলছে। মেগা প্রজেক্ট দিয়ে দিয়ে মেগা দুর্নীতি চলছে এবং সুপরিকল্পিতভাবে শুধু কথার জোরে এ সরকার টিকে আছে। যাদের জোর বেশি তাদের চাপার জোর, এই চাপার জোরে তারা নাকি এখন অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করে ফেলেছে। যে দেশের এখনো ৪২% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, দুই বেলা দুই মুঠো ভালো খেতে পায় না, সেই দেশে নাকি উন্নয়নের লহরী বয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি বলতে চাই—এ দেশটা আমাদের। এ দেশে গণতন্ত্র আমরা নিয়ে এসেছি, আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে, আমরা স্বাধীনতা নিয়ে এসেছি, সেই স্বাধীনতা আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। এই দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান আমাদেরই উন্নত করতে হবে। আমাদের পথ দেখিয়েছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আমাদের পথ দেখিয়েছেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। এখন সেই সুদূর থেকে দিনরাত পরিশ্রম করে যিনি আমাদের পথ দেখাচ্ছেন একটা সত্যিকার অর্থেই সুখী সমৃদ্ধ উন্নত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করবার সেই যুদ্ধ আমাদেরই সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আইনজীবীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের ওপরে জাতির অনেক আশা, অনেক আকাঙ্ক্ষা। এখানে ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বলেছেন, সভ্যতার সময়ে যুগে যুগে পরিবর্তনে আপনাদের ভূমিকা ছিল অসাধারণ, এই বাংলাদেশেই বহু আইনজীবী আছেন ছিলেন যারা অবস্থার পরিবর্তন করেছেন, সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজকে সময় চায়, আজকে যুগ চাচ্ছে, জাতি চাচ্ছে যে, আপনারা এগিয়ে আসুন। সামনে এগিয়ে এসে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। এটা আমাদের প্রত্যাশা, জনগণের প্রত্যাশা। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমি যখনই কারাগারে গেছি, আপনারা আমাকে বের করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। আমাদের যত নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন তাদের সকলকে কারাগার থেকে আইনের মাধ্যমে বের করে নিয়ে আসার জন্য সর্বাত্মক শক্তি নিয়োগ করেছেন, করে চলেছেন এখনো। সেজন্য আমি আপনাদের প্রতি কতৃজ্ঞ।