মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্পে প্রাণহানি ৮ হাজার ছাড়িয়েছে

সময় যত গড়াচ্ছে, ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে ৬ হাজার এবং সিরিয়ায় ২ হাজার ৩২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুই দেশে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৩৪ হাজারের বেশি। দেশটিতে অন্তত পাঁচ হাজার ৬০৬টি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৩২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দেশটিতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার এলাকায় ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা। এসব এলাকায় প্রায় ১১ হাজার ভবন ধসে পড়েছে। আর ভূমিকম্পে সিরিয়ায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা দেশটিতে ১১ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে বেশি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মানচিত্র থেকে দেখা যাচ্ছে, এসব এলাকায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পের কারণে সেখানকার সবাই কোনো না কোনোভাবে সংকটে পড়েছেন। দুই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লাখো মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে আছেন।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশটিতে ভূমিকম্পে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ। আহত হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ।

এদিকে ভূমিকম্পের পর তুরস্কের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্ধারকারী দল দেশটিতে পাঠাতে শুরু করেছে। জরুরি চিকিৎসক দল পাঠানোর কথাও ভাবছেন অনেক দেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন।

এরপর দফায় দফায় আরও কয়েকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে তুরস্কে। এতে ধসে পড়েছে হাজার হাজার ভবন। এসব ভবনের নিচে আটকা পড়েছে বহু মানুষ। তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করে যাচ্ছেন উদ্ধারকারী ও সাধারণ মানুষ। তবে উদ্ধারকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র ঠান্ডা, তুষারপাত ও বৃষ্টি।

উদ্ধারকর্মীদের মতে, মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে সীমান্তের আজমারিন শহর। তাছাড়া, ক্ষয়ক্ষতির শিকার আলেপ্পো, লাতাকিয়া ও হামা শহরও। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটের দাবি, ধ্বংসাবশেষ সরানো গেলে বাড়বে প্রাণহানি।

উল্লেখ্য, তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা বরাবরই ভূমিকম্প প্রবণ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

এনসিপির মুখপাত্র হলেন আসিফ মাহমুদ, করবেন না নির্বাচন

ভূমিকম্পে প্রাণহানি ৮ হাজার ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত সময় : ১০:৪৫:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সময় যত গড়াচ্ছে, ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে ৬ হাজার এবং সিরিয়ায় ২ হাজার ৩২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুই দেশে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৩৪ হাজারের বেশি। দেশটিতে অন্তত পাঁচ হাজার ৬০৬টি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৩২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দেশটিতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার এলাকায় ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা। এসব এলাকায় প্রায় ১১ হাজার ভবন ধসে পড়েছে। আর ভূমিকম্পে সিরিয়ায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা দেশটিতে ১১ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে বেশি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মানচিত্র থেকে দেখা যাচ্ছে, এসব এলাকায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পের কারণে সেখানকার সবাই কোনো না কোনোভাবে সংকটে পড়েছেন। দুই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লাখো মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে আছেন।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশটিতে ভূমিকম্পে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ। আহত হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ।

এদিকে ভূমিকম্পের পর তুরস্কের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্ধারকারী দল দেশটিতে পাঠাতে শুরু করেছে। জরুরি চিকিৎসক দল পাঠানোর কথাও ভাবছেন অনেক দেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন।

এরপর দফায় দফায় আরও কয়েকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে তুরস্কে। এতে ধসে পড়েছে হাজার হাজার ভবন। এসব ভবনের নিচে আটকা পড়েছে বহু মানুষ। তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করে যাচ্ছেন উদ্ধারকারী ও সাধারণ মানুষ। তবে উদ্ধারকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র ঠান্ডা, তুষারপাত ও বৃষ্টি।

উদ্ধারকর্মীদের মতে, মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে সীমান্তের আজমারিন শহর। তাছাড়া, ক্ষয়ক্ষতির শিকার আলেপ্পো, লাতাকিয়া ও হামা শহরও। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটের দাবি, ধ্বংসাবশেষ সরানো গেলে বাড়বে প্রাণহানি।

উল্লেখ্য, তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা বরাবরই ভূমিকম্প প্রবণ।