মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজ বিশ্ব কিডনি দিবস : দেশে প্রতি ঘণ্টায় কিডনি রোগে মারা যান পাঁচজন

প্রতি বছর মার্চের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হচ্ছে। এবার কিডনি দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সবার জন্য সুস্থ কিডনি’। বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালসহ (বিএসএমএমইউ) বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনি রোগ প্রায় উপসর্গ বিহীন। কিডনির কার্যক্ষমতা প্রায় ৯০ শতাংশ কমলে উপসর্গ প্রকাশ পায়। কিডনি বিকল হওয়ার অন্যতম কারণ কিডনি প্রদাহ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক সেবনেও কিডনি বিকল হতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ১৭ শতাংশ মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে ভুগছেন। ইউনাইটেড স্টেটস রেনাল ডাটা সিস্টেম’র তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০২০ সালের শেষ পর্যায়ে কিডনি বিকল রোগী ছিলেন প্রতি মিলিয়নে ১০৯ জন। ২০১০-২০২০ এই ১০ বছরে এ রোগী বেড়েছে প্রায় আড়াইগুণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশে ১০ হাজার ৮৪১ জন কিডনি রোগে মৃত্যুবরণ করেছে। ২০২১ সালে প্রকাশিত নেফ্রোলজি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড বইয়ে নেফ্রোলজি ইন বাংলাদেশ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, কিডনি বিকল রোগীদের মাত্র ৫ শতাংশ প্রতিস্থাপনের সুযোগ পান। এর প্রধান কারণ গুলো হলো, কিডনি রোগের চিকিৎসার উচ্চ ব্যয়ভার, সারা দেশে কিডনি রোগের অপ্রতুল চিকিৎসা সুবিধা, প্রশিক্ষিত ডাক্তার-নার্স ও টেকনিশিয়ানের স্বল্পতা। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ইউরোলজি’র তথ্য মতে, দেশের ১২ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে আক্রান্ত। প্রতিদিনই এ রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতি ঘণ্টায় পাঁচজন কিডনিজনিত জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন। দেশে প্রায় দুই কোটিরও বেশি লোক কোনো না কোনো কিডনি রোগে ভুগছেন। প্রতিবছর নতুন করে ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কিডনি ডায়ালাইসিস প্রয়োজন। প্রতি বছর প্রাপ্তবয়স্ক ১০০ জনের মধ্যে ১০ থেকে ১৪ জন কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষজ্ঞরা ৮টি গোল্ডেন রুলের কথা বলছেন, এসব হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম করা ও সক্রিয় থাকা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, পরিমিত পরিমাণে পানি পান করা, ধূমপান পরিহার করা, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন না করা, স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত কিডনির কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

এনসিপির মুখপাত্র হলেন আসিফ মাহমুদ, করবেন না নির্বাচন

আজ বিশ্ব কিডনি দিবস : দেশে প্রতি ঘণ্টায় কিডনি রোগে মারা যান পাঁচজন

প্রকাশিত সময় : ০৩:৫৫:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩

প্রতি বছর মার্চের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হচ্ছে। এবার কিডনি দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সবার জন্য সুস্থ কিডনি’। বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালসহ (বিএসএমএমইউ) বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনি রোগ প্রায় উপসর্গ বিহীন। কিডনির কার্যক্ষমতা প্রায় ৯০ শতাংশ কমলে উপসর্গ প্রকাশ পায়। কিডনি বিকল হওয়ার অন্যতম কারণ কিডনি প্রদাহ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক সেবনেও কিডনি বিকল হতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ১৭ শতাংশ মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে ভুগছেন। ইউনাইটেড স্টেটস রেনাল ডাটা সিস্টেম’র তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০২০ সালের শেষ পর্যায়ে কিডনি বিকল রোগী ছিলেন প্রতি মিলিয়নে ১০৯ জন। ২০১০-২০২০ এই ১০ বছরে এ রোগী বেড়েছে প্রায় আড়াইগুণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশে ১০ হাজার ৮৪১ জন কিডনি রোগে মৃত্যুবরণ করেছে। ২০২১ সালে প্রকাশিত নেফ্রোলজি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড বইয়ে নেফ্রোলজি ইন বাংলাদেশ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, কিডনি বিকল রোগীদের মাত্র ৫ শতাংশ প্রতিস্থাপনের সুযোগ পান। এর প্রধান কারণ গুলো হলো, কিডনি রোগের চিকিৎসার উচ্চ ব্যয়ভার, সারা দেশে কিডনি রোগের অপ্রতুল চিকিৎসা সুবিধা, প্রশিক্ষিত ডাক্তার-নার্স ও টেকনিশিয়ানের স্বল্পতা। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ইউরোলজি’র তথ্য মতে, দেশের ১২ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে আক্রান্ত। প্রতিদিনই এ রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতি ঘণ্টায় পাঁচজন কিডনিজনিত জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন। দেশে প্রায় দুই কোটিরও বেশি লোক কোনো না কোনো কিডনি রোগে ভুগছেন। প্রতিবছর নতুন করে ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কিডনি ডায়ালাইসিস প্রয়োজন। প্রতি বছর প্রাপ্তবয়স্ক ১০০ জনের মধ্যে ১০ থেকে ১৪ জন কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষজ্ঞরা ৮টি গোল্ডেন রুলের কথা বলছেন, এসব হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম করা ও সক্রিয় থাকা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, পরিমিত পরিমাণে পানি পান করা, ধূমপান পরিহার করা, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন না করা, স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত কিডনির কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করা।