সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যে রাজমুকুট বসবে চার্লসের মাথায়

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পরপরই রাজা হন তৃতীয় চার্লস। এখন অপেক্ষা অভিষেক অনুষ্ঠানের। এর মাধ্যমে মূলত প্রতীকীভাবে তার রাজত্বকাল শুরু হবে। অভিষেক অনুষ্ঠানে চার্লসকে সেইন্ট এডওয়ার্ডের ঐতিহাসিক রাজমুকুট পরিয়ে দেওয়া হবে। ৬ মে দুপুরে শতবর্ষের পুরনো রীতি অনুযায়ী এই অনুষ্ঠানে রাজা এক ঘণ্টারও কম সময় মুকুটটি পরে থাকবেন। এই সোনার মুকুট সাধারণত টাওয়ার অব লন্ডনের বাইরে আসে না। পরবর্তী সম্রাটের অভিষেকের আগে এই মুকুট আর দেখা যাবে না। সেইন্ট এডওয়ার্ডের এই রাজমুকুট সর্বশেষ পরেছিলেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, ১৯৫৩ সালে তার অভিষেকের সময়। তারপরের ৭০ বছরে এই মুকুট টাওয়ার অব লন্ডন থেকে খুব একটা বাইরে যায়নি। মুকুটের গোলকে চারটি ক্রস ও লিলি ফুল এবং একেবারে কেন্দ্রে দুটি খিলান রয়েছে। খিলানগুলো ছোট স্বর্ণের পুঁতি দিয়ে ঢাকা, যা আগে কৃত্রিম মুক্তার সারি দিয়ে ঘেরা ছিল। মুকুটের উপরে রয়েছে একটি ক্রস, ঝুলে থাকা পুঁতি এবং একটি ‘মন্ড’ যা রাজার রাজত্বের পরিধির প্রতীক। ৩৬২ বছরের পুরনো রাজমুকুটটি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের তৈরি। দৈর্ঘ্যে এই রাজমুকুট ৩০ সেমি বা এক ফুট। এর ওজন প্রায় ৫ পাউন্ড বা সোয়া দুই কেজি। এর ওজন এতই যে, এক তথ্যচিত্র নির্মাণের সময় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ আরেকবার সেই রাজমুকুট দেখে প্রশ্ন করেছিলেন, এটা কি এখনো ভারী? এরপর নিজে হাতে তুলে নিয়ে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন, অনেক ভারী। বহুমূল্য স্যাফায়ার, রুবি, অ্যামেথিস্ট ও টোপাজের মতো ৪৪৪টি রত্ন রয়েছে এই রাজমুকুটে। এদের বেশিরভাগই হালকা নীল বা নীলচে সবুজ রংয়ের। এনামেল ও স্বর্ণের খোপে বসানো হয়েছে এসব রত্ন। মুকুটটি ১৬৬১ সালে দ্বিতীয় চার্লসের জন্য তৈরি হয়েছিলো। এর নাম রাখা হয় অ্যাংলো-স্যাক্সন রাজা ও সেইন্ট এডওয়ার্ড দ্য কনফেসারের নামে। একাদশ শতকে বেইয়ো ট্যাপেস্ট্রিতে সেইন্ট এডওয়ার্ডের মুকুট পরা একটি ছবি আছে। এডওয়ার্ডের এই মুকুটকে পবিত্র বলে গণ্য করা হয়, এবং কয়েকশ বছর ধরে অভিষেকে ব্যবহার করা হচ্ছে এই মুকুট। মুকুটের সামনে আর পেছনে একই রকম। গোলকের চারপাশের কাপড়ের নকশাটি এরমেন থেকে তৈরি করা, যা এক ধরনের সাদা পশম, বহুকাল ধরে যা আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে আছে। সামনের অংশ কোনটি তা বোঝা যাবে নানা রংয়ের রত্ন দেখে। তবে আগে এ নিয়ে সংশয় তৈরি হত। ব্রিটিশ পাসপোর্টে, কিংবা চিঠির বাক্স আর রয়্যাল মেইলের ভ্যানে ডাক বিভাগের লোগোতে এর চিহ্ন আছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

যে রাজমুকুট বসবে চার্লসের মাথায়

প্রকাশিত সময় : ১০:৪৪:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পরপরই রাজা হন তৃতীয় চার্লস। এখন অপেক্ষা অভিষেক অনুষ্ঠানের। এর মাধ্যমে মূলত প্রতীকীভাবে তার রাজত্বকাল শুরু হবে। অভিষেক অনুষ্ঠানে চার্লসকে সেইন্ট এডওয়ার্ডের ঐতিহাসিক রাজমুকুট পরিয়ে দেওয়া হবে। ৬ মে দুপুরে শতবর্ষের পুরনো রীতি অনুযায়ী এই অনুষ্ঠানে রাজা এক ঘণ্টারও কম সময় মুকুটটি পরে থাকবেন। এই সোনার মুকুট সাধারণত টাওয়ার অব লন্ডনের বাইরে আসে না। পরবর্তী সম্রাটের অভিষেকের আগে এই মুকুট আর দেখা যাবে না। সেইন্ট এডওয়ার্ডের এই রাজমুকুট সর্বশেষ পরেছিলেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, ১৯৫৩ সালে তার অভিষেকের সময়। তারপরের ৭০ বছরে এই মুকুট টাওয়ার অব লন্ডন থেকে খুব একটা বাইরে যায়নি। মুকুটের গোলকে চারটি ক্রস ও লিলি ফুল এবং একেবারে কেন্দ্রে দুটি খিলান রয়েছে। খিলানগুলো ছোট স্বর্ণের পুঁতি দিয়ে ঢাকা, যা আগে কৃত্রিম মুক্তার সারি দিয়ে ঘেরা ছিল। মুকুটের উপরে রয়েছে একটি ক্রস, ঝুলে থাকা পুঁতি এবং একটি ‘মন্ড’ যা রাজার রাজত্বের পরিধির প্রতীক। ৩৬২ বছরের পুরনো রাজমুকুটটি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের তৈরি। দৈর্ঘ্যে এই রাজমুকুট ৩০ সেমি বা এক ফুট। এর ওজন প্রায় ৫ পাউন্ড বা সোয়া দুই কেজি। এর ওজন এতই যে, এক তথ্যচিত্র নির্মাণের সময় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ আরেকবার সেই রাজমুকুট দেখে প্রশ্ন করেছিলেন, এটা কি এখনো ভারী? এরপর নিজে হাতে তুলে নিয়ে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন, অনেক ভারী। বহুমূল্য স্যাফায়ার, রুবি, অ্যামেথিস্ট ও টোপাজের মতো ৪৪৪টি রত্ন রয়েছে এই রাজমুকুটে। এদের বেশিরভাগই হালকা নীল বা নীলচে সবুজ রংয়ের। এনামেল ও স্বর্ণের খোপে বসানো হয়েছে এসব রত্ন। মুকুটটি ১৬৬১ সালে দ্বিতীয় চার্লসের জন্য তৈরি হয়েছিলো। এর নাম রাখা হয় অ্যাংলো-স্যাক্সন রাজা ও সেইন্ট এডওয়ার্ড দ্য কনফেসারের নামে। একাদশ শতকে বেইয়ো ট্যাপেস্ট্রিতে সেইন্ট এডওয়ার্ডের মুকুট পরা একটি ছবি আছে। এডওয়ার্ডের এই মুকুটকে পবিত্র বলে গণ্য করা হয়, এবং কয়েকশ বছর ধরে অভিষেকে ব্যবহার করা হচ্ছে এই মুকুট। মুকুটের সামনে আর পেছনে একই রকম। গোলকের চারপাশের কাপড়ের নকশাটি এরমেন থেকে তৈরি করা, যা এক ধরনের সাদা পশম, বহুকাল ধরে যা আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে আছে। সামনের অংশ কোনটি তা বোঝা যাবে নানা রংয়ের রত্ন দেখে। তবে আগে এ নিয়ে সংশয় তৈরি হত। ব্রিটিশ পাসপোর্টে, কিংবা চিঠির বাক্স আর রয়্যাল মেইলের ভ্যানে ডাক বিভাগের লোগোতে এর চিহ্ন আছে।