বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২০০ কি.মি. বেগে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। এটি অত্যন্ত তীব্র হবে এবং বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার থাকতে পারে। কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন এ তথ্য। দুটি আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি জানান, খুবই শক্তিশালী হতে পারে এ ঘূর্ণিঝড়। তার মতে, আগামী রোববার (১৪ মে) সকাল ৬টার পর থেকে ১৫ মে সকাল ৬টার মধ্যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে মোখা ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে। এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত Ensemble (সংকলন/সমষ্টিগত) আবহাওয়া পূর্বাভাসের ওপর তিনি পূর্ণ আস্থা রাখছেন বলেও জানান। স্থলভাগে আঘাতের স্থানটি নিয়ে এখনও সামান্য পরিমাণ অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে জানিয়ে মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, যার কারণে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারের দিকে কিংবা বরিশাল বিভাগের দিকে সামান্য পরিমাণ ঝুঁকে পড়তে পারে। অর্থাৎ, ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। একইভাবে এটি কিছুটা ডান দিকে সরে গিয়ে কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মোখা কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে। তবে টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা প্রবল। এ জলবায়ু গবেষক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলো কত ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে তাও জানিয়েছেন। তার মতে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো ৭ থেকে ১০ ফুট এবং খুলনা বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবারের (৯ মে) মধ্যে এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আগামীকাল বুধবারের মধ্যে এটি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগর সংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে। এরপর ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে বাঁক নিতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস উঠেছে জনজীবনে। সোমবার (৮ মে) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায়। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই। বৃষ্টিহীনতায় ঢাকায়ও দুঃসহ গরম। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরম বেড়ে ৬৪ জেলায়ই ছড়িয়ে পড়েছে তাপপ্রবাহ। দেশের ৫ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়ে তীব্র হয়েছে তাপপ্রবাহ। যা আগামী আরও দু’দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

২০০ কি.মি. বেগে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’

প্রকাশিত সময় : ০৩:১৯:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। এটি অত্যন্ত তীব্র হবে এবং বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার থাকতে পারে। কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন এ তথ্য। দুটি আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি জানান, খুবই শক্তিশালী হতে পারে এ ঘূর্ণিঝড়। তার মতে, আগামী রোববার (১৪ মে) সকাল ৬টার পর থেকে ১৫ মে সকাল ৬টার মধ্যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে মোখা ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে। এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত Ensemble (সংকলন/সমষ্টিগত) আবহাওয়া পূর্বাভাসের ওপর তিনি পূর্ণ আস্থা রাখছেন বলেও জানান। স্থলভাগে আঘাতের স্থানটি নিয়ে এখনও সামান্য পরিমাণ অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে জানিয়ে মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, যার কারণে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারের দিকে কিংবা বরিশাল বিভাগের দিকে সামান্য পরিমাণ ঝুঁকে পড়তে পারে। অর্থাৎ, ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। একইভাবে এটি কিছুটা ডান দিকে সরে গিয়ে কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মোখা কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে। তবে টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা প্রবল। এ জলবায়ু গবেষক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলো কত ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে তাও জানিয়েছেন। তার মতে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো ৭ থেকে ১০ ফুট এবং খুলনা বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবারের (৯ মে) মধ্যে এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আগামীকাল বুধবারের মধ্যে এটি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগর সংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে। এরপর ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে বাঁক নিতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস উঠেছে জনজীবনে। সোমবার (৮ মে) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায়। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই। বৃষ্টিহীনতায় ঢাকায়ও দুঃসহ গরম। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরম বেড়ে ৬৪ জেলায়ই ছড়িয়ে পড়েছে তাপপ্রবাহ। দেশের ৫ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়ে তীব্র হয়েছে তাপপ্রবাহ। যা আগামী আরও দু’দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।