বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে টুইটার-ফেসবুক-ইউটিউব বন্ধ

পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের (পিটিআই) ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি শহরে ক্রমবর্ধমান সহিংস আন্দোলন ও বিক্ষোভের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব বন্ধ করে দেয় সরকার। পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটির (পিটিএ) এ সিদ্ধান্ত এখনো বলবৎ রয়েছে। জিও নিউজের খবরে বলা হয়, শনিবার (১৩ মে) পিটিএর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন তারা টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব চালু করার ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত পাননি। তবে সারা দেশে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে গত ৯ মে পুরো পাকিস্তানে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা সীমিত করে সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কারণে পাকিস্তানের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) সেক্টরটি ১০ বিলিয়ন রুপির ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার ওপর বিধিনিষেধের কারণে এ সেক্টরটির ক্ষতি আড়াই বিলিয়ন রুপি। এতে দেশটির সংশ্লিষ্ট ব্যবসাসমূহও ব্যাপক ক্ষতির মুখ দেখেছে। এদিকে পাকিস্তানের টেলিকম শিল্পের সূত্রগুলোর দাবি, ইন্টারনেট পরিষেবা ও সামাজিক মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকায় ৮৬০ মিলিয়ন রুপি রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১১ মে) সরকার ও পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কর্তৃপক্ষের (পিটিএ) কাছে ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিতের বিষয়ে জবাব চান লাহোর হাইকোর্ট। বিচারপতি আবিদ আজিজ শেখ ২২ মে’র মধ্যে পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া বিচারক প্রাসঙ্গিক আইন ও সংবিধানের বিভিন্ন বিধানের ব্যাখ্যায় সহায়তার জন্য পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেলকেও একটি নোটিশ জারি করেছেন। অ্যাডভোকেট আবুজার সালমান নিয়াজির আবেদনের প্রেক্ষিতে লাহোর হাইকোর্ট সরকার ও পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে নির্দেশ দেন। আবুজার সালমান নিয়াজি আবেদনে জানতে চান ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবসহ সব সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কেন বন্ধ করা হয়েছে। আবেদনে তিনি যুক্তি দিয়ে উল্লেখ করেন ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাক্সেস ব্লক করা দেশের আইন ও সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। আবেদনকারী অবিলম্বে সারাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়ে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করতে বলেন। গত মঙ্গলবার (৯ মে) সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে গ্রেপ্তার হন। বুধবার (১০ মে) আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তোশাখানা মামলাতেও অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। ইমরানের গ্রেপ্তার ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে পাকিস্তান। ইমরানের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। সেনানিবাসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছেন তারা। এ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি লোক গ্রেপ্তার হয়েছেন, প্রাণ গেছে আটজনের।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পাকিস্তানে টুইটার-ফেসবুক-ইউটিউব বন্ধ

প্রকাশিত সময় : ০৫:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩

পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের (পিটিআই) ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি শহরে ক্রমবর্ধমান সহিংস আন্দোলন ও বিক্ষোভের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব বন্ধ করে দেয় সরকার। পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটির (পিটিএ) এ সিদ্ধান্ত এখনো বলবৎ রয়েছে। জিও নিউজের খবরে বলা হয়, শনিবার (১৩ মে) পিটিএর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন তারা টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব চালু করার ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত পাননি। তবে সারা দেশে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে গত ৯ মে পুরো পাকিস্তানে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা সীমিত করে সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কারণে পাকিস্তানের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) সেক্টরটি ১০ বিলিয়ন রুপির ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার ওপর বিধিনিষেধের কারণে এ সেক্টরটির ক্ষতি আড়াই বিলিয়ন রুপি। এতে দেশটির সংশ্লিষ্ট ব্যবসাসমূহও ব্যাপক ক্ষতির মুখ দেখেছে। এদিকে পাকিস্তানের টেলিকম শিল্পের সূত্রগুলোর দাবি, ইন্টারনেট পরিষেবা ও সামাজিক মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকায় ৮৬০ মিলিয়ন রুপি রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১১ মে) সরকার ও পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কর্তৃপক্ষের (পিটিএ) কাছে ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিতের বিষয়ে জবাব চান লাহোর হাইকোর্ট। বিচারপতি আবিদ আজিজ শেখ ২২ মে’র মধ্যে পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া বিচারক প্রাসঙ্গিক আইন ও সংবিধানের বিভিন্ন বিধানের ব্যাখ্যায় সহায়তার জন্য পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেলকেও একটি নোটিশ জারি করেছেন। অ্যাডভোকেট আবুজার সালমান নিয়াজির আবেদনের প্রেক্ষিতে লাহোর হাইকোর্ট সরকার ও পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে নির্দেশ দেন। আবুজার সালমান নিয়াজি আবেদনে জানতে চান ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবসহ সব সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কেন বন্ধ করা হয়েছে। আবেদনে তিনি যুক্তি দিয়ে উল্লেখ করেন ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাক্সেস ব্লক করা দেশের আইন ও সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। আবেদনকারী অবিলম্বে সারাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়ে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করতে বলেন। গত মঙ্গলবার (৯ মে) সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে গ্রেপ্তার হন। বুধবার (১০ মে) আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তোশাখানা মামলাতেও অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। ইমরানের গ্রেপ্তার ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে পাকিস্তান। ইমরানের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। সেনানিবাসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছেন তারা। এ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি লোক গ্রেপ্তার হয়েছেন, প্রাণ গেছে আটজনের।