বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং পর্যটন খাতের সম্প্রসারণে পুনরায় সরাসরি ফ্লাইট চালুর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে নিজ কার্যালয়ে উজবেকিস্তানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাখরম অ্যালোয়েভের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি এ আহ্বান জানান। সাক্ষাৎকালে উজবেকিস্তানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং ভিসা সহজ করা হলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা সফর করে বিনিয়োগের ক্ষেত্র বের করতে পারবেন। সরকার টু সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী টু ব্যবসায়ী যোগাযোগ বৃদ্ধি হবে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৫২টির বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার বিশাল সুযোগ আছে বলেও উল্লেখ করেন সালমান এফ রহমান। উজবেকিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু ও বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ঢাকা-তাসখন্দ সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা। দেশটিতে টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার সুযোগ আছে। তৈরি পোশাক, ওষুধ, আইসিটি পণ্যের বড় বাজার হতে পারে উজবেকিস্তান। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার হবে। সালমান এফ রহমান বলেন, ‘উভয় দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন খাত বিকাশের প্রচুর সম্ভাবনা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করেছেন। তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় প্রণোদনা প্যাকেজ এবং সুবিধা ঘোষণা দিয়েছেন। তাই, উজবেকিস্তানের বিনিয়োগকারীরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগ করতে পারেন।’ বাণিজ্য সম্প্রসারণে উজবেকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু এবং বাংলাদেশিদের সহজ শর্তে ভিসা সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছেন উজবেকিস্তান উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাখরম অ্যালোয়েভ। বাখরম অ্যালোয়েভে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সব সূচকে সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য বিশ্বে সুনাম ধরে রেখেছে।’ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদেরকে উজবেকিস্তানে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও বন্ধত্বপূর্ণ এবং দৃঢ় অবস্থানে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। বৈঠকে উজবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বিস্তৃত করার সময় এসেছে। পরিবহন ও যোগাযোগ একটি উদ্বেগের বিষয় ছিল। আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য জোরদার করার জন্য প্রস্তুত আমরা। মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তান। স্থলবেষ্টিত দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মানের তুলা উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশের পোশাক খাতে ক্রমবর্ধমান সুতার চাহিদা মেটাতে বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলা প্রয়োজন। এর বিপরীতে উৎপাদন হয় মাত্র পৌনে ২ লাখ বেল। ঘাটতি মেটাতে বছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকার তুলা আমদানি করতে হয়, যা বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ তুলা আমদানিকারক দেশে পরিণত করেছে। এ অবস্থায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে উচ্চ পযায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করছেন উজবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী।