সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ ও প্রকৃতির সহাবস্থান। মানুষ ও প্রকৃতি মিলিয়েই এই সুন্দর ধরণী। একটি ছাড়া অন্যটির অস্তিত্ব অর্থহীন। কিন্তু ক্রমাগতভাবে নিজের স্বার্থে মানুষ নানাভাবে জীববৈচিত্র্য ধংস করে নিজেদেরকেই প্রকৃতির বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছে। বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস আজ। জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি প্রতিবছর ২২ মে দিবসটি উদযাপন করে আসছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বাস্তবায়ন করি অঙ্গীকার, জীববৈচিত্র্য হবে পুনরুদ্ধার’। চারদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, নদীভাঙন, নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার, বহু বন্য প্রাণীর সংকটাপন্ন অবস্থায় চলে যাওয়া—সব মিলিয়ে এবার দিবসটি বাড়তি গুরুত্ব বহন করছে। প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে বন অধিদপ্তরের উদ্যোগে আজ সকালে বর্ণাঢ্য র্যালি ও বন ভবনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ সেল ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ১৯৯২ সালের ২২ মে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে বায়োডাইভার্সিটি (সিবিডি) চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এরপর ৫ জুন ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচীর ধরিত্রী সম্মেলনে সিবিডি বিভিন্ন দেশের স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিশ্বের প্রায় ১৬৮টি দেশ সিবিডি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে এবং সিবিডি ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বর্তমানে এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশের সংখ্যা ১৯৫টি। ১৯৯৩ সালের শেষ দিকে দিবসটি পালনের জন্য ২৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশে এই দিবস পালন বন্ধ করে দিলে ২০০২ সালের ২২ মে পালনের জন্য দিবসটি পুনঃনির্ধারণ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। মূলত ১৯৯২ সালের ২২ মে কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কনভেনশনে দিনটিকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।