সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতালিতে বন্যায় ১৩ জনের মৃত্যু

ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় এমিলিয়া-রোমানিইয়া অঞ্চলে বন্যায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশ কোটি ডলার। বিশেষ করে কৃষিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এই বন্যা, জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নর। সতর্কতা জারি করা হয়েছে সিসিলিতেও। বন্যা পরিস্থিতিতে টোকিওতে জি-৭ সম্মেলন থেকে দ্রুত দেশে ফিরেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জ মেলোনি। দেশে ফিরে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে তার। যেতে পারেন বন্যায় বিপর্যস্ত ফোরলি শহরে। চলতি সপ্তাহের মুষলধারে বৃষ্টিতে রোমানিইয়ার পূর্বাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩০০টি ভূমিধস হয়েছে, ২৩টি নদীর পানি উপচে পড়েছে, প্রায় ৪০০টি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে, ৪২টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। অনেক রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলোকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরি করতে হবে বলে ভূতত্ত্ববিদ পারিদ আন্তোলিনি বার্তা সংস্থা আনসাকে জানিয়েছেন। বোলোনিইয়া, রাভে, ফোরলি সেসেনা, রিমিনিতে উদ্ধার কাজ চলছে। গত শনিবার তীব্র ঝড় ও বন্যার কবলে পড়া রাভেনা প্রদেশে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বেটি নামে এক নারী স্থানীয় এক কৃষি সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘খরার কারণে মাটি শুকনো ছিল। ফাটল তৈরি হয়েছিল। শুকনো মাটি দুর্ভেদ্য হয়ে ওঠে। তারপর জল এসে সবকিছু ধ্বংস করে।’ বাগান, আঙুর খেত ও ফসল কাটার জন্য প্রস্তুত জমিও নষ্ট হয়েছে। হাজার হাজার খামার এখনো পানির নিচে, অগণিত গবাদিপশু মারা গেছে বা অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। উত্তর-পূর্ব ইতালির এই মারাত্মক বন্যায় ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ এখন ঘরছাড়া। আঞ্চলিক কর্মকর্তারা বলেছেন, পানির স্রোত আরও ঘরবাড়ি প্লাবিত করেছে।ভূমিধসের ফলে একাধিক এলাকা জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।এমিলিয়ার একাধিক শহরের রাস্তাগুলো জলে ভেসে যাচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ার কারণে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ আবহাওয়ার লাল চিহ্নিত সতর্কতা রোববার পর্যন্ত বাড়িয়েছে। অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলে কিছু অংশে সর্বোচ্চ সতর্কতার স্তর এখনো কার্যকর রয়েছে বলে ইতালির নাগরিক সুরক্ষা বিভাগ (প্রোতেতজিয়নে চিভিলে) জানিয়েছে। কোথাও কোথাও পানি ধীরে ধীরে নামছে। শতাধিক উদ্ধারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করছেন। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জ মেলোনি জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় শনিবার জাপানে জি সেভেন শীর্ষ সম্মেলন থেকে মাঝপথে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি এমন সময়ে ইতালি থেকে এত দূরে থাকতে পারি না।’ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য উদ্ধারকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। সূত্র: ডয়চে ভেলে

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইতালিতে বন্যায় ১৩ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত সময় : ০২:৪২:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩

ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় এমিলিয়া-রোমানিইয়া অঞ্চলে বন্যায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশ কোটি ডলার। বিশেষ করে কৃষিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এই বন্যা, জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নর। সতর্কতা জারি করা হয়েছে সিসিলিতেও। বন্যা পরিস্থিতিতে টোকিওতে জি-৭ সম্মেলন থেকে দ্রুত দেশে ফিরেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জ মেলোনি। দেশে ফিরে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে তার। যেতে পারেন বন্যায় বিপর্যস্ত ফোরলি শহরে। চলতি সপ্তাহের মুষলধারে বৃষ্টিতে রোমানিইয়ার পূর্বাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩০০টি ভূমিধস হয়েছে, ২৩টি নদীর পানি উপচে পড়েছে, প্রায় ৪০০টি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে, ৪২টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। অনেক রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলোকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরি করতে হবে বলে ভূতত্ত্ববিদ পারিদ আন্তোলিনি বার্তা সংস্থা আনসাকে জানিয়েছেন। বোলোনিইয়া, রাভে, ফোরলি সেসেনা, রিমিনিতে উদ্ধার কাজ চলছে। গত শনিবার তীব্র ঝড় ও বন্যার কবলে পড়া রাভেনা প্রদেশে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বেটি নামে এক নারী স্থানীয় এক কৃষি সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘খরার কারণে মাটি শুকনো ছিল। ফাটল তৈরি হয়েছিল। শুকনো মাটি দুর্ভেদ্য হয়ে ওঠে। তারপর জল এসে সবকিছু ধ্বংস করে।’ বাগান, আঙুর খেত ও ফসল কাটার জন্য প্রস্তুত জমিও নষ্ট হয়েছে। হাজার হাজার খামার এখনো পানির নিচে, অগণিত গবাদিপশু মারা গেছে বা অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। উত্তর-পূর্ব ইতালির এই মারাত্মক বন্যায় ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ এখন ঘরছাড়া। আঞ্চলিক কর্মকর্তারা বলেছেন, পানির স্রোত আরও ঘরবাড়ি প্লাবিত করেছে।ভূমিধসের ফলে একাধিক এলাকা জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।এমিলিয়ার একাধিক শহরের রাস্তাগুলো জলে ভেসে যাচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ার কারণে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ আবহাওয়ার লাল চিহ্নিত সতর্কতা রোববার পর্যন্ত বাড়িয়েছে। অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলে কিছু অংশে সর্বোচ্চ সতর্কতার স্তর এখনো কার্যকর রয়েছে বলে ইতালির নাগরিক সুরক্ষা বিভাগ (প্রোতেতজিয়নে চিভিলে) জানিয়েছে। কোথাও কোথাও পানি ধীরে ধীরে নামছে। শতাধিক উদ্ধারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করছেন। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জ মেলোনি জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় শনিবার জাপানে জি সেভেন শীর্ষ সম্মেলন থেকে মাঝপথে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি এমন সময়ে ইতালি থেকে এত দূরে থাকতে পারি না।’ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য উদ্ধারকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। সূত্র: ডয়চে ভেলে