বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে অস্ত্রসহ র‌্যাবের হাতে ধরা রাসেল বাহিনী

কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, কার্তুজ ও ইয়াবাসহ স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনীর প্রধান শেখ রাসেল ও তার ৬ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

ওই সময় তাদের কাছে ৬টি দেশে তৈরি একনলা বড় বন্দুক, দুটি এলজি, ১২ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ৭ রাউন্ড রাইফেলের কার্তুজ ও এক রাউন্ড খালি কার্তুজ, একটি রামদা পাওয়া যায়। এসবের পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে ২০ হাজার ইয়াবা এবং চারটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা গ্রামের বটতলীর অদূরের পাহাড়ী এলাকা থেকে এসব উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারদের উখিয়া থানায় সোপার্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রাসেল বাহিনীর প্রধান একই ইউনিয়নের থাইংখালি গ্রামের শেখ রাসেল প্রকাশ ওরফে ডাকাত রাসেল (৩২), টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালি গ্রামের মো. ছলিম (৩৮), নুরুল আমিন (৪২) ও তার ছেলে কায়সার উদ্দিন (২০), মো. সাদেক হোসেন (৩০), টেকনাফের সদর ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়ার সাহাব উদ্দিন (২৫) এবং উখিয়ার থাইংখালীর ঘোনারপাড়া গ্রামের আবদুর শরিফের ছেলে নুরুল হাকিম (৪০)।

র‌্যাব বলছে, কক্সবাজার জেলায় প্রায়ই ডাকাতি, অপহরণ, মাদক পাচার, ছিনতাই ও ধর্ষণের মতো অপরাধের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই প্রেক্ষিতে বটতলী গহীন পাহাড়ে র‌্যাব রাসেল বাহিনীকে ধরতে অভিযান চালায় এবং সক্ষম হয়।

র‌্যাবের তথ্যমতে, রাসেল বাহিনীর উখিয়ার তেলখোলা বটতলী ও টেকনাফের রঙ্গীখালী গহীন পাহাড়ী এলাকায় আস্তানা রয়েছে। সেখান থেকে মূলহোতা ডাকাত রাসেলের নেতৃত্বে খুন, অপহরণ, ডাকাতি ও দস্যুতা, চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কাজ চালায় তারা।

এ ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে উখিয়ার থাইংখালী বনের বিভিন্ন স্পটে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একাধিক মামলার আসামী রাসেল।

র‌্যাব জানিয়েছে, শেখ রাসেল প্রকাশ ডাকাত রাসেল একজন তালিকাভুক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এবং ডাকাত রাসেল নামে খ্যাত। ডাকাত রাসেলের সঙ্গে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধির সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাদের ছত্র-ছায়ায় সে নানা অপরাধ করে থাকে। এমনকি একাধিকবার বিজিবি, পুলিশ এবং বন বিভাগের ফোর্সদের ওপর হামলা করেছে তারা।

র‌্যাব-১৫-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবদুস সালাম চৌধুরী বলেন, ডাকাত রাসেলের বিরুদ্ধে ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, খুনসহ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় নারীদের অপহরণসহ ধর্ষণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। রাসেল একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামী। গেল বছরের ২১ সেপ্টেম্বর উখিয়ার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে অভিযানে রাসেলের কয়েকটি আস্তানার মধ্যে একটি থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, রাসেল বাহিনীর সদস্য মো. ছলিমের বিরুদ্ধে তিনটি, নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে পাঁচটি, সাদেক হোসেনের বিরুদ্ধে ৬টি, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে তিনটি এবং নুরুল হাকিমের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

কক্সবাজারে অস্ত্রসহ র‌্যাবের হাতে ধরা রাসেল বাহিনী

প্রকাশিত সময় : ০৩:৫৩:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩

কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, কার্তুজ ও ইয়াবাসহ স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনীর প্রধান শেখ রাসেল ও তার ৬ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

ওই সময় তাদের কাছে ৬টি দেশে তৈরি একনলা বড় বন্দুক, দুটি এলজি, ১২ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ৭ রাউন্ড রাইফেলের কার্তুজ ও এক রাউন্ড খালি কার্তুজ, একটি রামদা পাওয়া যায়। এসবের পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে ২০ হাজার ইয়াবা এবং চারটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা গ্রামের বটতলীর অদূরের পাহাড়ী এলাকা থেকে এসব উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারদের উখিয়া থানায় সোপার্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রাসেল বাহিনীর প্রধান একই ইউনিয়নের থাইংখালি গ্রামের শেখ রাসেল প্রকাশ ওরফে ডাকাত রাসেল (৩২), টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালি গ্রামের মো. ছলিম (৩৮), নুরুল আমিন (৪২) ও তার ছেলে কায়সার উদ্দিন (২০), মো. সাদেক হোসেন (৩০), টেকনাফের সদর ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়ার সাহাব উদ্দিন (২৫) এবং উখিয়ার থাইংখালীর ঘোনারপাড়া গ্রামের আবদুর শরিফের ছেলে নুরুল হাকিম (৪০)।

র‌্যাব বলছে, কক্সবাজার জেলায় প্রায়ই ডাকাতি, অপহরণ, মাদক পাচার, ছিনতাই ও ধর্ষণের মতো অপরাধের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই প্রেক্ষিতে বটতলী গহীন পাহাড়ে র‌্যাব রাসেল বাহিনীকে ধরতে অভিযান চালায় এবং সক্ষম হয়।

র‌্যাবের তথ্যমতে, রাসেল বাহিনীর উখিয়ার তেলখোলা বটতলী ও টেকনাফের রঙ্গীখালী গহীন পাহাড়ী এলাকায় আস্তানা রয়েছে। সেখান থেকে মূলহোতা ডাকাত রাসেলের নেতৃত্বে খুন, অপহরণ, ডাকাতি ও দস্যুতা, চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কাজ চালায় তারা।

এ ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে উখিয়ার থাইংখালী বনের বিভিন্ন স্পটে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একাধিক মামলার আসামী রাসেল।

র‌্যাব জানিয়েছে, শেখ রাসেল প্রকাশ ডাকাত রাসেল একজন তালিকাভুক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এবং ডাকাত রাসেল নামে খ্যাত। ডাকাত রাসেলের সঙ্গে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধির সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাদের ছত্র-ছায়ায় সে নানা অপরাধ করে থাকে। এমনকি একাধিকবার বিজিবি, পুলিশ এবং বন বিভাগের ফোর্সদের ওপর হামলা করেছে তারা।

র‌্যাব-১৫-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবদুস সালাম চৌধুরী বলেন, ডাকাত রাসেলের বিরুদ্ধে ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, খুনসহ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় নারীদের অপহরণসহ ধর্ষণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। রাসেল একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামী। গেল বছরের ২১ সেপ্টেম্বর উখিয়ার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে অভিযানে রাসেলের কয়েকটি আস্তানার মধ্যে একটি থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, রাসেল বাহিনীর সদস্য মো. ছলিমের বিরুদ্ধে তিনটি, নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে পাঁচটি, সাদেক হোসেনের বিরুদ্ধে ৬টি, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে তিনটি এবং নুরুল হাকিমের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।