রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে কানাডা, ভারতের নালিশ

ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী ও চরমপন্থীদের জন্য নিরাপদ ‘স্বর্গরাজ্য’ হয়ে উঠছে কানাডা, যা দিন দিন দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে নয়াদিল্লির। যুক্তরাষ্ট্রের থিঙ্কট্যাংক সংস্থা হাডসন ইনস্টিটিউটকে দেওয়া এক বক্তব্যে এই নালিশ জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শুক্রবার হাডসন ইনস্টিটিউটে বক্তব্য দেন জয়শঙ্কর। তার বক্তব্য শেষে একজন সাংবাদিক কানাডার সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি কিছু অভিযোগ করেছেন। এর আগে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন, সম্প্রতি জনসমক্ষে তা প্রকাশ করেছেন।’ ‘আমরা তাকে বলেছি— যে অভিযোগ তিনি তুলেছেন, তা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির মধ্যে পড়ে না। তারপরও যদি অভিযোগের পক্ষে তার কাছে যথাযথ সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে এবং সেসব যদি তিনি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেন, আমরা অবশ্যই এ ব্যাপারটি দেখব।’ ‘কিন্তু সমস্যা হলো, দীর্ঘদিন ধরে কানাডা এমন সব লোকজনকে আশ্রয় দিচ্ছে, যারা অপরাধী ও সন্ত্রাসনমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত। আমাদের দূতাবাসে তারা হামলা করছে, দূতাবাসকর্মীদের প্রকাশ্যে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, মানবপাচার, সহিংসতা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাস তৎপরতা— এ সব কিছুর সঙ্গে যুক্ত এই অপরাধীরা। এমনকি সুদূর কানাডায় বসে তারা ভারতে তাদের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক চালাচ্ছে এমন তথ্যও রয়েছে।’ ‘কানাডা দিন দিন সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে। আপনাদের, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নাগরিকদের জন্য হয়তো এ ব্যাপারগুলো খানিকটা ভিন্ন, কিন্তু এই সন্ত্রাসীদের কারণে ভারত যে ভুক্তভোগী— এটা পুরোপুরি সত্য। আমি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানকেও এসব কথা জানিয়েছি।’ কানাডার নাগরিক ও সেখানকার শিখ ধর্মাবলম্বীদের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক টানাপোড়েন চলছে কানাডা ও ভারতের মধ্যে। দুই মিত্র রাষ্ট্রের এই দ্বন্দ্বে অস্বস্তিতে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা কানাডাকে সহায়তা করার জন্য ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে। জয়শঙ্করের শুক্রবারের বক্তব্যের মাধ্যমে এই ইস্যুতে ভারতের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট হলো। গত জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যের রাজধানী ভ্যানকুভারে একটি গুরুদুয়ারার (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) সামনে আততায়ীর গুলিতে নিহত হরদীপ সিং নিজ্জর ছিলেন দেশটিতে বসবাসকারী শিখদের একজন নেতা। ১৯৭৭ সালে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধর জেলা থেকে কানাডা গিয়েছিলেন হরদীপ, পরে সেখানাকার নাগরিকত্বও অর্জন করেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে কানাডা, ভারতের নালিশ

প্রকাশিত সময় : ১১:৩৯:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী ও চরমপন্থীদের জন্য নিরাপদ ‘স্বর্গরাজ্য’ হয়ে উঠছে কানাডা, যা দিন দিন দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে নয়াদিল্লির। যুক্তরাষ্ট্রের থিঙ্কট্যাংক সংস্থা হাডসন ইনস্টিটিউটকে দেওয়া এক বক্তব্যে এই নালিশ জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শুক্রবার হাডসন ইনস্টিটিউটে বক্তব্য দেন জয়শঙ্কর। তার বক্তব্য শেষে একজন সাংবাদিক কানাডার সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি কিছু অভিযোগ করেছেন। এর আগে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন, সম্প্রতি জনসমক্ষে তা প্রকাশ করেছেন।’ ‘আমরা তাকে বলেছি— যে অভিযোগ তিনি তুলেছেন, তা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির মধ্যে পড়ে না। তারপরও যদি অভিযোগের পক্ষে তার কাছে যথাযথ সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে এবং সেসব যদি তিনি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেন, আমরা অবশ্যই এ ব্যাপারটি দেখব।’ ‘কিন্তু সমস্যা হলো, দীর্ঘদিন ধরে কানাডা এমন সব লোকজনকে আশ্রয় দিচ্ছে, যারা অপরাধী ও সন্ত্রাসনমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত। আমাদের দূতাবাসে তারা হামলা করছে, দূতাবাসকর্মীদের প্রকাশ্যে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, মানবপাচার, সহিংসতা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাস তৎপরতা— এ সব কিছুর সঙ্গে যুক্ত এই অপরাধীরা। এমনকি সুদূর কানাডায় বসে তারা ভারতে তাদের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক চালাচ্ছে এমন তথ্যও রয়েছে।’ ‘কানাডা দিন দিন সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে। আপনাদের, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নাগরিকদের জন্য হয়তো এ ব্যাপারগুলো খানিকটা ভিন্ন, কিন্তু এই সন্ত্রাসীদের কারণে ভারত যে ভুক্তভোগী— এটা পুরোপুরি সত্য। আমি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানকেও এসব কথা জানিয়েছি।’ কানাডার নাগরিক ও সেখানকার শিখ ধর্মাবলম্বীদের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক টানাপোড়েন চলছে কানাডা ও ভারতের মধ্যে। দুই মিত্র রাষ্ট্রের এই দ্বন্দ্বে অস্বস্তিতে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা কানাডাকে সহায়তা করার জন্য ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে। জয়শঙ্করের শুক্রবারের বক্তব্যের মাধ্যমে এই ইস্যুতে ভারতের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট হলো। গত জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যের রাজধানী ভ্যানকুভারে একটি গুরুদুয়ারার (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) সামনে আততায়ীর গুলিতে নিহত হরদীপ সিং নিজ্জর ছিলেন দেশটিতে বসবাসকারী শিখদের একজন নেতা। ১৯৭৭ সালে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধর জেলা থেকে কানাডা গিয়েছিলেন হরদীপ, পরে সেখানাকার নাগরিকত্বও অর্জন করেন তিনি।