রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হামাসকে সহায়তা করছে রাশিয়া : দাবি জেলেনস্কির

ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে সহায়তা করছে রাশিয়া, এমন অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি।

ফ্রান্স ২ টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে রাশিয়া কোনো না কোনোভাবে হামাসের অভিযানে সমর্থন দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আস সারা দুনিয়ায় অস্থিতিশীল কাজে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেতিনি আরো বলেন, ইসরাইল ও গাজার সৃষ্ট সহিংসতা তার নিজের দেশে চলমান যুদ্ধ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার হুমকি সৃষ্টি করছে।তিনি বলেন, ইউক্রেন থেকৈ আন্তর্জাতিক মনোযোগ সরে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এর ভয়াবহ পরিণাম রয়েছে।তিনি বলেন, ইউক্রেন ও ইসরাইলে ঘটা ট্রাজেডি ‘ভিন্ন হলেও উভয়টিই ভয়াবহ।এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইল বৃষ্টির মতো বোমা ফেলছে। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেখানে অবরুদ্ধ লোকজন।

 

 

ইসরাইলের আক্রমণের ভয়াবহতা তুলে ধরে গাজা থেকে মারাম হুমাইদ কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় লিখেছেন :গাজায় অব্যাহত বোমা হামলায় তৃতীয় দিন সোমবার রাতে আমরা আমাদের বাবা-মায়ের বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত জেগেছিলাম। আমি, আমার ছোট্ট ছেলে, ভাই-বোন, ভাতিজা-ভাতিজারা এবং আমার মা-বাবা অন্ধকার ঘরে একত্রিত হয়ে ছিলাম। আর শুনতেছিলাম আমাদের শহরে অব্যাহতভাবে বোমা মারা হচ্ছে। মারা যাচ্ছিল আমাদের মানুষজন।

একসময় ক্লান্ত হয়ে বিছানায় গেলেও, কোনো নীরবতা ছিল না।আমরা আমাদের বড় বাচ্চাদের এটা বোঝাতে চাইছিলাম যে এগুলো আতশবাজি। কিন্তু ওরা তা বিশ্বাস করেনি।এক ঘণ্টারও কম ঘুমাতে পেরেছিলাম। এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর শব্দে ঘুম ভেঙে যায়।আমি আমার বাচ্চাকে মুহূর্তে কোলে তুলে নিলাম। আমরা সবাই মিলে দৌড়াতে থাকলাম।মুহূর্তেই আকাশ ময়লায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়, গানপাউডার দ্বারা। পরিস্থিতি খুবই জটিল হয়ে যায়।আমরা শুনতে পেলাম আমাদের প্রতিবেশীরা চিৎকার করছে আর কাঁদছে। তবে আমরা বুঝতে পারিনি তারা কী বলছে।

আমরা কিছু দেখতেও পাচ্ছিলাম না। ধ্বংসাবশেষের ময়লা-আবর্জনায় আমাদের চোখ ভরে যায়। পরিস্থিতি আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনেক বেশি ভয়াবহ ছিল।

রাস্তায় বের হয়ে আমরা দৌড়াতে থাকা আমাদের প্রতিবেশীদের অনুসরণ করছিলাম। এরই মাঝে আমার মা-বাবার বাড়ির একটি বাড়ি পরের চারতলা বাড়িতে আক্রমণ চালানো হলো।

এরকম অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা। বোমার শব্দ চলতে থাকল সারা রাত জুড়ে। যেন বোমার বৃষ্টি।

এদিকে, গাজা থেকে মোহাম্মদ আর মহাইশ জানিয়েছেন, গাজার জনগণ চান বিশ্ব স্বীকৃতি দিক যে তাদের সংগ্রাম রাজনীতি বা পক্ষ নিয়ে নয়; এটা তাদের জীবন বাঁচানোর বিষয়ে।

 

তারা বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হয়, যাতে মৃত্যু ও সন্ত্রাস থেকে পালিয়ে আসা লোকেরা তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করতে। নিষ্পাপ জীবনগুলো ভারসাম্যের মধ্যে ঝুলছে, এবং সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

হামাসকে সহায়তা করছে রাশিয়া : দাবি জেলেনস্কির

প্রকাশিত সময় : ১০:০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে সহায়তা করছে রাশিয়া, এমন অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি।

ফ্রান্স ২ টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে রাশিয়া কোনো না কোনোভাবে হামাসের অভিযানে সমর্থন দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আস সারা দুনিয়ায় অস্থিতিশীল কাজে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেতিনি আরো বলেন, ইসরাইল ও গাজার সৃষ্ট সহিংসতা তার নিজের দেশে চলমান যুদ্ধ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার হুমকি সৃষ্টি করছে।তিনি বলেন, ইউক্রেন থেকৈ আন্তর্জাতিক মনোযোগ সরে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এর ভয়াবহ পরিণাম রয়েছে।তিনি বলেন, ইউক্রেন ও ইসরাইলে ঘটা ট্রাজেডি ‘ভিন্ন হলেও উভয়টিই ভয়াবহ।এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইল বৃষ্টির মতো বোমা ফেলছে। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেখানে অবরুদ্ধ লোকজন।

 

 

ইসরাইলের আক্রমণের ভয়াবহতা তুলে ধরে গাজা থেকে মারাম হুমাইদ কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় লিখেছেন :গাজায় অব্যাহত বোমা হামলায় তৃতীয় দিন সোমবার রাতে আমরা আমাদের বাবা-মায়ের বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত জেগেছিলাম। আমি, আমার ছোট্ট ছেলে, ভাই-বোন, ভাতিজা-ভাতিজারা এবং আমার মা-বাবা অন্ধকার ঘরে একত্রিত হয়ে ছিলাম। আর শুনতেছিলাম আমাদের শহরে অব্যাহতভাবে বোমা মারা হচ্ছে। মারা যাচ্ছিল আমাদের মানুষজন।

একসময় ক্লান্ত হয়ে বিছানায় গেলেও, কোনো নীরবতা ছিল না।আমরা আমাদের বড় বাচ্চাদের এটা বোঝাতে চাইছিলাম যে এগুলো আতশবাজি। কিন্তু ওরা তা বিশ্বাস করেনি।এক ঘণ্টারও কম ঘুমাতে পেরেছিলাম। এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর শব্দে ঘুম ভেঙে যায়।আমি আমার বাচ্চাকে মুহূর্তে কোলে তুলে নিলাম। আমরা সবাই মিলে দৌড়াতে থাকলাম।মুহূর্তেই আকাশ ময়লায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়, গানপাউডার দ্বারা। পরিস্থিতি খুবই জটিল হয়ে যায়।আমরা শুনতে পেলাম আমাদের প্রতিবেশীরা চিৎকার করছে আর কাঁদছে। তবে আমরা বুঝতে পারিনি তারা কী বলছে।

আমরা কিছু দেখতেও পাচ্ছিলাম না। ধ্বংসাবশেষের ময়লা-আবর্জনায় আমাদের চোখ ভরে যায়। পরিস্থিতি আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনেক বেশি ভয়াবহ ছিল।

রাস্তায় বের হয়ে আমরা দৌড়াতে থাকা আমাদের প্রতিবেশীদের অনুসরণ করছিলাম। এরই মাঝে আমার মা-বাবার বাড়ির একটি বাড়ি পরের চারতলা বাড়িতে আক্রমণ চালানো হলো।

এরকম অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা। বোমার শব্দ চলতে থাকল সারা রাত জুড়ে। যেন বোমার বৃষ্টি।

এদিকে, গাজা থেকে মোহাম্মদ আর মহাইশ জানিয়েছেন, গাজার জনগণ চান বিশ্ব স্বীকৃতি দিক যে তাদের সংগ্রাম রাজনীতি বা পক্ষ নিয়ে নয়; এটা তাদের জীবন বাঁচানোর বিষয়ে।

 

তারা বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হয়, যাতে মৃত্যু ও সন্ত্রাস থেকে পালিয়ে আসা লোকেরা তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করতে। নিষ্পাপ জীবনগুলো ভারসাম্যের মধ্যে ঝুলছে, এবং সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।