বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী থেকে চুরি হওয়া সিএনজিসহ ৫টি অটোরিকশা উদ্ধার, গ্রেফতার ৫

রাজশাহী মহানগরীতে সংঘবদ্ধ  আন্ত:জেলা অটোরিক্সা চোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  নগরীর  শাহ্‌মখদুম থানা পুলিশ বেশ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এসময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে চোরাই ৫ টি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা, অটোরিক্সার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা  হলো মো: মামুন তালুকদার (৫২), মো: রেজাউল খান (৩৫), মো: মিজানুর রহমান মিজান (২২), মো: আকাশ (২২) ও মো: বাবুল প্রামানিক (৪২)। মামুন বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার দুধাল গ্রামের মো: মোতালেব তালুকদারের ছেলে। সে বর্তমানে বগুড়া জেলার সদর থানার ইচাইদহ গ্রামের বাসিন্দা। রেজাউল পাবনা জেলার ঈশ্বর্দী থানার বাবুলচারা গ্রামের আব্দুল ওহাব খানের ছেলে, মিজানুর রহমান কুষ্টিয়া জেলার সদর থানার কুষ্টিয়া মহিনি মিলপাড়ার মো: আব্দুর রশিদের ছেলে, আকাশ একই এলাকার পশ্চিম মজমপুরের মৃত মোহাম্মদ জোয়ার্দারের ছেলে ও বাবুল পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার গোপাল নগরের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর সকাল ৯ টায় শাহমখদুম থানার ভুগরইল মোড় হতে এক ব্যক্তি  জাহিদুল ইসলামের ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা উঠে। এসময় সেই ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ দিয়ে দিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলতে থাকে। পথিমধ্যে নওদাপাড়া আমচত্বর ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে সেই ব্যক্তি অটোরিক্সা চালক জাহিদুলকে থামতে বলে। এখনে সে একজনের সাথে দেখা করে। এরপর আবার জাহিদুলকে  আমচত্বরের দিকে যেতে বলে। জাহিদুল অটোরিক্সা নিয়ে একটু এগিয়ে গেলে সেই ব্যক্তি তাঁকে থামতে বলে এবং যার সাথে সে দেখা করছে তাঁকে ডেকে আনতে বলে। তখন জাহিদুল ওই ব্যক্তিকে ডাকার জন্য অটোরিক্সার চাবি নিয়ে ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গিয়ে তাঁকে না পেয়ে ফিরে এসে দেখে তাঁর অটোরিক্সাটি নাই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অটোকিক্সা না পেয়ে জাহিদুল  শাহ্‌মখদুম থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর নগরীর শাহ্‌মখদুম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার নুর আলম সিদ্দিকীর নির্দেশে এসআই আব্দুল মতিন ও তার টিম আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেন।

শাহ্‌মখদুম থানা পুলিশের ওই টিম গত ১২ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২  টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে শাহ্‌মখদুম থানার বড় বনগ্রাম এলাকা হতে একটি সিএনজিসহ আসামি  মিজানুর রহমান মিজান ও আকাশকে গ্রেফতার করে। এ সময় দুইজন কৌশলে পালিয়ে যায়।

তারপর শাহমখদুম থানা পুলিশের ওই টিম রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও সাইবার ক্রাইম ইউনিটের তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় গত ১২ অক্টোবর  সকাল ৯ টায় পাবনা জেলার ফরিদপুর থানা এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে আসামি  মামুন তালুকদার ও রেজাউলকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে রাজশাহী মহানগর এলাকা হতে প্রায় ২০ টি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা পুলিশ পরিচয়ে সু-কৌশলে চুরির কথা স্বীকার করে। তারা চুরি করা অটোরিক্সাগুলো বিক্রির জন্য পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার গোপালপুর গ্রামের মো: বাবুল প্রামানিকের গ্যারেজে রাখে বলে জানায়।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে দুপুর আড়াইটায় পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার গোপালপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি বাবুলকে গ্রেফতার করে। এসময় আসামির কাছ থেকে ৫ টি চোরাই অটোরিক্সা ও অটোরিক্সার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানায়, তাদের ব্যবহৃত সিএনজি’র মধ্যে দেশীয় অস্ত্র রাখা আছে। যদি কখনো চুরি করার সময় বিপদ পড়ে তাহলে সে অস্ত্র ব্যবহার করবে। ধৃত আসামিদের তথ্য মতে সেই সিএনজি তল্লাশি করে সিটের নীচ হতে ৩ টি রামদা উদ্ধার হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শাহ্‌মখদুম থানায় অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাজশাহী থেকে চুরি হওয়া সিএনজিসহ ৫টি অটোরিকশা উদ্ধার, গ্রেফতার ৫

প্রকাশিত সময় : ০৮:৪২:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩

রাজশাহী মহানগরীতে সংঘবদ্ধ  আন্ত:জেলা অটোরিক্সা চোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  নগরীর  শাহ্‌মখদুম থানা পুলিশ বেশ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এসময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে চোরাই ৫ টি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা, অটোরিক্সার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা  হলো মো: মামুন তালুকদার (৫২), মো: রেজাউল খান (৩৫), মো: মিজানুর রহমান মিজান (২২), মো: আকাশ (২২) ও মো: বাবুল প্রামানিক (৪২)। মামুন বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার দুধাল গ্রামের মো: মোতালেব তালুকদারের ছেলে। সে বর্তমানে বগুড়া জেলার সদর থানার ইচাইদহ গ্রামের বাসিন্দা। রেজাউল পাবনা জেলার ঈশ্বর্দী থানার বাবুলচারা গ্রামের আব্দুল ওহাব খানের ছেলে, মিজানুর রহমান কুষ্টিয়া জেলার সদর থানার কুষ্টিয়া মহিনি মিলপাড়ার মো: আব্দুর রশিদের ছেলে, আকাশ একই এলাকার পশ্চিম মজমপুরের মৃত মোহাম্মদ জোয়ার্দারের ছেলে ও বাবুল পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার গোপাল নগরের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর সকাল ৯ টায় শাহমখদুম থানার ভুগরইল মোড় হতে এক ব্যক্তি  জাহিদুল ইসলামের ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা উঠে। এসময় সেই ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ দিয়ে দিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলতে থাকে। পথিমধ্যে নওদাপাড়া আমচত্বর ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে সেই ব্যক্তি অটোরিক্সা চালক জাহিদুলকে থামতে বলে। এখনে সে একজনের সাথে দেখা করে। এরপর আবার জাহিদুলকে  আমচত্বরের দিকে যেতে বলে। জাহিদুল অটোরিক্সা নিয়ে একটু এগিয়ে গেলে সেই ব্যক্তি তাঁকে থামতে বলে এবং যার সাথে সে দেখা করছে তাঁকে ডেকে আনতে বলে। তখন জাহিদুল ওই ব্যক্তিকে ডাকার জন্য অটোরিক্সার চাবি নিয়ে ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গিয়ে তাঁকে না পেয়ে ফিরে এসে দেখে তাঁর অটোরিক্সাটি নাই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অটোকিক্সা না পেয়ে জাহিদুল  শাহ্‌মখদুম থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর নগরীর শাহ্‌মখদুম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার নুর আলম সিদ্দিকীর নির্দেশে এসআই আব্দুল মতিন ও তার টিম আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেন।

শাহ্‌মখদুম থানা পুলিশের ওই টিম গত ১২ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২  টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে শাহ্‌মখদুম থানার বড় বনগ্রাম এলাকা হতে একটি সিএনজিসহ আসামি  মিজানুর রহমান মিজান ও আকাশকে গ্রেফতার করে। এ সময় দুইজন কৌশলে পালিয়ে যায়।

তারপর শাহমখদুম থানা পুলিশের ওই টিম রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও সাইবার ক্রাইম ইউনিটের তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় গত ১২ অক্টোবর  সকাল ৯ টায় পাবনা জেলার ফরিদপুর থানা এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে আসামি  মামুন তালুকদার ও রেজাউলকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে রাজশাহী মহানগর এলাকা হতে প্রায় ২০ টি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা পুলিশ পরিচয়ে সু-কৌশলে চুরির কথা স্বীকার করে। তারা চুরি করা অটোরিক্সাগুলো বিক্রির জন্য পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার গোপালপুর গ্রামের মো: বাবুল প্রামানিকের গ্যারেজে রাখে বলে জানায়।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে দুপুর আড়াইটায় পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার গোপালপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি বাবুলকে গ্রেফতার করে। এসময় আসামির কাছ থেকে ৫ টি চোরাই অটোরিক্সা ও অটোরিক্সার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানায়, তাদের ব্যবহৃত সিএনজি’র মধ্যে দেশীয় অস্ত্র রাখা আছে। যদি কখনো চুরি করার সময় বিপদ পড়ে তাহলে সে অস্ত্র ব্যবহার করবে। ধৃত আসামিদের তথ্য মতে সেই সিএনজি তল্লাশি করে সিটের নীচ হতে ৩ টি রামদা উদ্ধার হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শাহ্‌মখদুম থানায় অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।