বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টেলিফোন অপারেটরের ছেলে প্রতিমন্ত্রী

অতিরিক্ত ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্ব পাওয়ার পর আবেগতাড়িত হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, তার বাবা ফয়েজউদ্দিন আহমেদ পেশায় একজন টেলিকম অপারেটর ছিলেন। তাই এ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তার হৃদয়ের সম্পর্ক।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বাবার সেই স্মৃতির কথা স্মরণ করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দায়িত্ব দেওয়ার সুখবরটি জানালেন তখন নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। আমি ভীষণ আবেগতাড়িত হয়ে যাই। কারণ আমার বাবা গ্রামের ছেলে। তিনি চলনবিলের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন। নাটোর থেকে গিয়ে পড়ালেখা করেছেন বগুড়া আজিজুল হক কলেজে। এইচএসসি পাশ করে রাজশাহীতে একটি ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন আমার বাবা। তিনি খুব বেশি ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান ছিলেন না। তখন টেলিফোন এক্সচেঞ্জে অপারেটর পদে চাকরি পেয়ে দিনাজপুরে জয়েন করেন। এ কারণে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের লেখাপড়া শেষ করা হয়নি। তারপর বদলি হয়ে বগুড়ায় আসেন। ১৯৫৭ সালে শান্তাহার, নাটোর, চুয়াডাঙ্গা এক্সচেঞ্জেও তিনি টেলিফোন অপারেটরের পদে চাকরি করেছেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক আরও বলেন, আমি সকালে মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে আব্বার বেতন কত ছিল। উত্তরে তিনি বললেন, ১২৫ টাকা। যাইহোক, এসব কারণে টেলিকম খাতের সঙ্গে আমার একটা আবেগের সম্পর্ক রয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে পলক বলেন, আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি- যেদিন দায়িত্ব নেওয়ার খবর পাই, মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলাম। মা মনে করেছিলেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমি আসলে আনন্দটা প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না।

আমি আইসিটি বিভাগে ১০ বছর কাজ করছি। টেলিকম খাতও কিন্তু আইসিটিরই একটি সহায়ক বিভাগ এবং একই মন্ত্রণালয়ের আওতায়। ২০১৪ সালে এটি ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তারপর সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী এটির নাম দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। পরে দুটি বিভাগ ও দুটি মন্ত্রণালয়কে এক করে দিলেন।

সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং অধীন দপ্তর-সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমি সবাইকে অনুরোধ করব এই দৈনন্দিন দায়িত্বগুলো সততা, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন, যেন নির্বাচনকালীন আমাদের কোনো ধরনের যোগাযোগ এবং সেবার বিঘ্ন না ঘটে। আমাদের রাষ্ট্রীয়, সরকার এবং জনগণের কোনো সেবা যেন ব্যাহত না হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

টেলিফোন অপারেটরের ছেলে প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত সময় : ১০:৪১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

অতিরিক্ত ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্ব পাওয়ার পর আবেগতাড়িত হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, তার বাবা ফয়েজউদ্দিন আহমেদ পেশায় একজন টেলিকম অপারেটর ছিলেন। তাই এ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তার হৃদয়ের সম্পর্ক।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বাবার সেই স্মৃতির কথা স্মরণ করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দায়িত্ব দেওয়ার সুখবরটি জানালেন তখন নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। আমি ভীষণ আবেগতাড়িত হয়ে যাই। কারণ আমার বাবা গ্রামের ছেলে। তিনি চলনবিলের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন। নাটোর থেকে গিয়ে পড়ালেখা করেছেন বগুড়া আজিজুল হক কলেজে। এইচএসসি পাশ করে রাজশাহীতে একটি ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন আমার বাবা। তিনি খুব বেশি ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান ছিলেন না। তখন টেলিফোন এক্সচেঞ্জে অপারেটর পদে চাকরি পেয়ে দিনাজপুরে জয়েন করেন। এ কারণে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের লেখাপড়া শেষ করা হয়নি। তারপর বদলি হয়ে বগুড়ায় আসেন। ১৯৫৭ সালে শান্তাহার, নাটোর, চুয়াডাঙ্গা এক্সচেঞ্জেও তিনি টেলিফোন অপারেটরের পদে চাকরি করেছেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক আরও বলেন, আমি সকালে মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে আব্বার বেতন কত ছিল। উত্তরে তিনি বললেন, ১২৫ টাকা। যাইহোক, এসব কারণে টেলিকম খাতের সঙ্গে আমার একটা আবেগের সম্পর্ক রয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে পলক বলেন, আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি- যেদিন দায়িত্ব নেওয়ার খবর পাই, মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলাম। মা মনে করেছিলেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমি আসলে আনন্দটা প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না।

আমি আইসিটি বিভাগে ১০ বছর কাজ করছি। টেলিকম খাতও কিন্তু আইসিটিরই একটি সহায়ক বিভাগ এবং একই মন্ত্রণালয়ের আওতায়। ২০১৪ সালে এটি ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তারপর সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী এটির নাম দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। পরে দুটি বিভাগ ও দুটি মন্ত্রণালয়কে এক করে দিলেন।

সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং অধীন দপ্তর-সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমি সবাইকে অনুরোধ করব এই দৈনন্দিন দায়িত্বগুলো সততা, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন, যেন নির্বাচনকালীন আমাদের কোনো ধরনের যোগাযোগ এবং সেবার বিঘ্ন না ঘটে। আমাদের রাষ্ট্রীয়, সরকার এবং জনগণের কোনো সেবা যেন ব্যাহত না হয়।