সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতালের দিন ভোরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে চলন্ত ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।এতে পুড়ে মারা যান মা-ছেলেসহ চারজন। ছাই হয়ে যায় তিনটি কোচ। তারপরও আগুন নিয়েই বিমানবন্দর এলাকা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ছুটে চলে ট্রেনটি। কারণ, আতঙ্কিত যাত্রীদের চিৎকার-চেঁচামেচিতেও ট্রেনের চালক বুঝতেই পারেননি আগুন লেগেছে।
আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার পর দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। এর আগে গতকাল সোমবার রাতে নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসে ট্রেনটি।
তেজগাঁও থানা পুলিশ বলছে, ট্রেনটি বিমানবন্দর স্টেশন পার হয়ে ক্যান্টনমেন্টের কাছাকাছি আসলে যাত্রীরা আগুন দেওয়ার বিষয়টি টের পায়। যাত্রীরা ছোটাছুটি করে অন্য বগিতে চলে যায়। ট্রেন চালক আগুনের বিষয়টি বুঝতে না পেরে ট্রেনটি চালিয়ে তেজগাঁও স্টেশনে থামায়। ততক্ষণে ট্রেনের মাঝামাঝি তিনটি বগি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
তবে একটির ভেতরে আটকা পড়েন চারজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তেজগাঁও ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌনে সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ভেতর থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ট্রেনটির কয়েকজন যাত্রী জানান, ট্রেনটি বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁওয়ে উদ্দেশে রওনা হওয়ার পরই তারা দুই বগির মাঝে থাকা ফাঁকা জায়গায় হঠাৎ আগুন দেখতে পান। যাত্রীরা তখন আগুন বলে চিৎকার দিলেও চালক ট্রেনটি তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের কাছে নিয়ে থামান। এরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে ছুটে যান। তখন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। এরপর দমকল বাহিনী আগুন নির্বাপণ করতে সক্ষম হন।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, ‘আজ ভোর ৫টা ৪ মিনিটে আমাদের কাছে সংবাদ আসে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। আমাদের তিনটি ইউনিট সকাল পৌনে ৭টার দিকে আগুন নির্বাপণ করে। একটি বগি থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’
মরদেহগুলোর মধ্যে একটি শিশু, একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার তিন বছরের শিশু সন্তান ইয়াসিন।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক মো. ফেরদৌস বলেন, তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা গেছেন। তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী ইনচার্জ (এএসআই) মো. মাসুদ জানান, মরদেহ চারটি সকালে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 






















