শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বালুচিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের, ‘গুরুতর পরিণতির’ হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

পাকিস্তানের বালুচিস্তান এলাকায় জঙ্গি ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই শিশু নিহত হয়েছে। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। হামলার পর ইরানকে ‘গুরুতর পরিণতির’ হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। এএফপি, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ‘অবৈধ’ হামলায় দুই শিশু নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ বুধবার ভোরে জানিয়েছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রতিবাদ জানাতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত তেহরানের শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করেছে দেশটি।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের দেওয়া এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, এই ঘটনার ‘গুরুতর পরিণতি’ হতে পারে এবং এটি ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’।

বিবৃতিতে হামলাটি কোথায় হয়েছে তা বলা হয়নি। তবে পাকিস্তানের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বেলুচিস্তান প্রদেশে বিস্ফোরণের খবর দেওয়া হয়েছে। সেখানে দুই দেশের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার (৬২০ মাইল) জনবহুল সীমান্ত রয়েছে।

ইরাকের কুর্দিস্তান ও সিরিয়ায় ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের গোপন ডেরায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।তবে ইরানের এই পদক্ষেপকে বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তান বলছে,‌ ‘এর ফল ভালো হবে না।’

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের প্রতি এই লঙ্ঘন সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।’

তেহরান ও ইসলামাবাদ প্রায়ই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে, তারা জঙ্গিদের অন্যের ভূখণ্ড থেকে আক্রমণ চালানোর সুযোগ দেয়। তবে উভয় দেশের সরকারি বাহিনীর মধ্যে এই ধরনের হামলা বা সংঘাতের ঘটনা বেশ বিরল।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইরানের এই হামলা আরও বেশি উদ্বেগজনক, কারণ পাকিস্তান এবং ইরানের মধ্যে যোগাযোগের বিভিন্ন চ্যানেল থাকা সত্ত্বেও এই অবৈধ হামলাটি ঘটেছে।’

মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘পাকিস্তান সবসময় বলেছে যে, সন্ত্রাসবাদ এই অঞ্চলের সমস্ত দেশের জন্য অভিন্ন হুমকি যার জন্য সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন। এই ধরনের একতরফা হামলা ভালো প্রতিবেশীমূলক সম্পর্কের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং দ্বিপাক্ষিক আস্থা ও বিশ্বাসকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’

এদিকে এই হামলার কথা স্বীকার করেননি বালুচিস্তানের তথ্যমন্ত্রী জান আচাকজাই। আবার অস্বীকারও করেননি তিনি। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে বালুচিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেন,‘এ নিয়ে বিবৃতি দেবে পাকিস্তানি সেনা।’ যদিও দেশটির সেনার তরফ থেকে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি মেলেনি।

এ ঘটনায় অবশ্য ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বালুচিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের, ‘গুরুতর পরিণতির’ হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

প্রকাশিত সময় : ১১:৩৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

পাকিস্তানের বালুচিস্তান এলাকায় জঙ্গি ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই শিশু নিহত হয়েছে। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। হামলার পর ইরানকে ‘গুরুতর পরিণতির’ হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। এএফপি, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ‘অবৈধ’ হামলায় দুই শিশু নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ বুধবার ভোরে জানিয়েছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রতিবাদ জানাতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত তেহরানের শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করেছে দেশটি।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের দেওয়া এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, এই ঘটনার ‘গুরুতর পরিণতি’ হতে পারে এবং এটি ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’।

বিবৃতিতে হামলাটি কোথায় হয়েছে তা বলা হয়নি। তবে পাকিস্তানের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বেলুচিস্তান প্রদেশে বিস্ফোরণের খবর দেওয়া হয়েছে। সেখানে দুই দেশের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার (৬২০ মাইল) জনবহুল সীমান্ত রয়েছে।

ইরাকের কুর্দিস্তান ও সিরিয়ায় ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের গোপন ডেরায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।তবে ইরানের এই পদক্ষেপকে বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তান বলছে,‌ ‘এর ফল ভালো হবে না।’

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের প্রতি এই লঙ্ঘন সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।’

তেহরান ও ইসলামাবাদ প্রায়ই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে, তারা জঙ্গিদের অন্যের ভূখণ্ড থেকে আক্রমণ চালানোর সুযোগ দেয়। তবে উভয় দেশের সরকারি বাহিনীর মধ্যে এই ধরনের হামলা বা সংঘাতের ঘটনা বেশ বিরল।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইরানের এই হামলা আরও বেশি উদ্বেগজনক, কারণ পাকিস্তান এবং ইরানের মধ্যে যোগাযোগের বিভিন্ন চ্যানেল থাকা সত্ত্বেও এই অবৈধ হামলাটি ঘটেছে।’

মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘পাকিস্তান সবসময় বলেছে যে, সন্ত্রাসবাদ এই অঞ্চলের সমস্ত দেশের জন্য অভিন্ন হুমকি যার জন্য সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন। এই ধরনের একতরফা হামলা ভালো প্রতিবেশীমূলক সম্পর্কের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং দ্বিপাক্ষিক আস্থা ও বিশ্বাসকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’

এদিকে এই হামলার কথা স্বীকার করেননি বালুচিস্তানের তথ্যমন্ত্রী জান আচাকজাই। আবার অস্বীকারও করেননি তিনি। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে বালুচিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেন,‘এ নিয়ে বিবৃতি দেবে পাকিস্তানি সেনা।’ যদিও দেশটির সেনার তরফ থেকে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি মেলেনি।

এ ঘটনায় অবশ্য ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।