শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গদি হারানোর পথে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট!

দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হিয়ের কাণ্ডে মহাবিতর্কের মুখে পড়েছেন তার স্বামী ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হিকে একজন উপহার হিসেবে বিখ্যাত ও বিলাসবহুল ‘ডিওর’ হাতব্যাগ উপহার দিয়েছেন। আর এতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলেছে যে, হি প্রায় আড়াই লাখ টাকা দামের এই উপহার নেয়ার কারণে চাপের মুখে পড়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি)। সরগরম দেশটির রাজনীতি। কিছু বিশ্লেষক বলছেন, এই কেলেঙ্কারি এপ্রিলের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের দলের আবারও নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ভোটাররা ইউনের কাছ থেকে এর ব্যাখ্যা চান এবং বিরোধীরা তাকে আক্রমণ করার জন্য এ বিষয়টি ব্যবহার করছে। বামপন্থী ইউটিউব চ্যানেল ভয়েস অব সিউল দ্বারা প্রকাশিত ভিডিওটি যাজক চোই জায়ে ইয়ং তার ঘড়িতে লুকানো একটি ক্যামেরা ব্যবহার করে গোপনে শুট করেছেন বলে জানা গেছে।

এতে দেখা যায়- চোই ধূসর-নীল বাছুরের চামড়ার একটি ব্যাগ কেনার জন্য একটি দোকানে হেঁটে যাচ্ছেন একটি রসিদসহ। ব্যাগটির দাম ৩ মিলিয়ন কোরিয়ান ওন (২২০০ মার্কিন ডলার)। দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা এবং তাদের স্ত্রীদের জন্য একবারে ১ মিলিয়ন ওনের বেশি মূল্যের উপহার এবং এক আর্থিক বছরের মধ্যে মোট ৩ মিলিয়ন ওনের উপহার গ্রহণ করা অবৈধ।

বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টিও ইউন এবং তার দলকে আক্রমণ করার জন্য বিষয়টি ব্যবহার করছে। স্থানীয় মিডিয়ার তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যাগটি প্রথম কিমকে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও ভিডিওটিতে স্পষ্টভাবে কিম উপহারটি গ্রহণ করছেন তা দেখায় না, কোরিয়া হেরাল্ড রিপোর্ট করেছে, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ব্যাগটি নেওয়ার বিষয় নিশ্চিত করেছে এবং বলেছে, ব্যাগটি সরকারের সম্পত্তি হিসাবে রাখা হয়েছে এবং সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশের যোগ্য ভোটারদের ৬৯ শতাংশ তার স্ত্রীর এই উপহার সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির কাছে ব্যাখ্যা চান।

ডিসেম্বরে একটি পূর্ববর্তী জরিপ দেখা যায়, যে ৫৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বিশ্বাস করেন কিমের কাজটি করা ঠিক হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার আইনসভা নির্বাচনের মাত্র তিন মাস আগে এই কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটছে। ইউনের অনুমোদনের হার গত বছর ধরে ক্রমাগত হ্রাস পাওয়ার পরও এ ঘটনা সম্মক্ষে এলো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

গদি হারানোর পথে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট!

প্রকাশিত সময় : ০৬:১৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হিয়ের কাণ্ডে মহাবিতর্কের মুখে পড়েছেন তার স্বামী ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হিকে একজন উপহার হিসেবে বিখ্যাত ও বিলাসবহুল ‘ডিওর’ হাতব্যাগ উপহার দিয়েছেন। আর এতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলেছে যে, হি প্রায় আড়াই লাখ টাকা দামের এই উপহার নেয়ার কারণে চাপের মুখে পড়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি)। সরগরম দেশটির রাজনীতি। কিছু বিশ্লেষক বলছেন, এই কেলেঙ্কারি এপ্রিলের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের দলের আবারও নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ভোটাররা ইউনের কাছ থেকে এর ব্যাখ্যা চান এবং বিরোধীরা তাকে আক্রমণ করার জন্য এ বিষয়টি ব্যবহার করছে। বামপন্থী ইউটিউব চ্যানেল ভয়েস অব সিউল দ্বারা প্রকাশিত ভিডিওটি যাজক চোই জায়ে ইয়ং তার ঘড়িতে লুকানো একটি ক্যামেরা ব্যবহার করে গোপনে শুট করেছেন বলে জানা গেছে।

এতে দেখা যায়- চোই ধূসর-নীল বাছুরের চামড়ার একটি ব্যাগ কেনার জন্য একটি দোকানে হেঁটে যাচ্ছেন একটি রসিদসহ। ব্যাগটির দাম ৩ মিলিয়ন কোরিয়ান ওন (২২০০ মার্কিন ডলার)। দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা এবং তাদের স্ত্রীদের জন্য একবারে ১ মিলিয়ন ওনের বেশি মূল্যের উপহার এবং এক আর্থিক বছরের মধ্যে মোট ৩ মিলিয়ন ওনের উপহার গ্রহণ করা অবৈধ।

বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টিও ইউন এবং তার দলকে আক্রমণ করার জন্য বিষয়টি ব্যবহার করছে। স্থানীয় মিডিয়ার তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যাগটি প্রথম কিমকে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও ভিডিওটিতে স্পষ্টভাবে কিম উপহারটি গ্রহণ করছেন তা দেখায় না, কোরিয়া হেরাল্ড রিপোর্ট করেছে, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ব্যাগটি নেওয়ার বিষয় নিশ্চিত করেছে এবং বলেছে, ব্যাগটি সরকারের সম্পত্তি হিসাবে রাখা হয়েছে এবং সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশের যোগ্য ভোটারদের ৬৯ শতাংশ তার স্ত্রীর এই উপহার সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির কাছে ব্যাখ্যা চান।

ডিসেম্বরে একটি পূর্ববর্তী জরিপ দেখা যায়, যে ৫৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বিশ্বাস করেন কিমের কাজটি করা ঠিক হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার আইনসভা নির্বাচনের মাত্র তিন মাস আগে এই কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটছে। ইউনের অনুমোদনের হার গত বছর ধরে ক্রমাগত হ্রাস পাওয়ার পরও এ ঘটনা সম্মক্ষে এলো।