“যুক্তিই হোক শক্তি” শ্লোগানকে ধারণ করে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির আয়োজনে “ভাষা শহীদ স্মৃতি আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২৪” এর চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী হয়েছে আইন বিভাগ। গতকাল বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩:৩০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উক্ত প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত পর্বে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়েছে আইন বিভাগ ও স্থাপত্য বিভাগ। বিতর্কের বিষয় ছিল: এই সংসদ মনে করে, বাংলা ভাষা বিস্তারে বিশ্বায়নই প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বশেমুরবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির এ আয়োজন নিয়ে জানতে চাইলে আয়োজনের আহ্বায়ক সাজিদ শুভ বলেন, ‘প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এশিয়ান সংসদীয় পদ্ধতিতে আন্ত:বিভাগ বিতর্ক আয়োজনের অভিজ্ঞতা রোমাঞ্চকর ছিল।’ শুভ আরও বলেন, ‘একইদিনে ৩৬টি বিতর্ক পরিচালনা সহ প্রাথমিক পর্ব থেকে চূড়ান্ত পর্ব সফল করতে যেসকল বিতার্কিক, বিচারক ও আয়োজকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
সেই সাথে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে চাই মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের প্রতি যিনি এই পুরো আয়োজনের প্রাথমিক পরিকল্পনা থেকে আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন ও আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে সামনেও এরকম আয়োজনে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে ও ৮০০ সদস্যের সংগঠন বশেমুরবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটি অতি দ্রুত বাৎসরিক বাজেট ও স্থায়ী রুমের বরাদ্দ পাবে।’ উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ ফায়েকুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান, গবেষণা ও মুক্ত বুদ্ধি চর্চার একটি তীর্থভুমি। বিতর্ক করার গুরুত্ব বলতে তিনি বলেন যারা বিতার্কিক তাদের কাছে জোরের যুক্তি নয় বরং যুক্তির জোরই আসল।’
এ সময় তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের স্মরণ করে বলেন, ‘এখন পৃথিবীতে দুটি সাম্রাজ্যবাদ বা ঔপনিবেশবাদ আছে। একটি হলো অর্থনৈতিক ও আরেকটা ভাষিক সাম্রাজ্যবাদ। এই ভাষিক সম্রাজ্যবাদই মূলত বিশ্বায়নের জায়গা দখল করেছে। যার সব থেকে বড় আঘাত এসেছিল আমাদের এই বাংলা ভাষাতে।’ অনুষ্ঠানে আইন বিভাগের সভাপতি ডঃ রাজিউর রহমান বলেন, ‘এই যে আমরা শহীদ মিনারে কথা বলছি, এখানে কিন্তু বিশ্বায়ন কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। আমাদের যে সংবিধান আছে সেখানে জাতীয় ভাষা কিন্তু বাংলা। আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যুগে প্রবেশ করেছি, সেখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি নিয়ে এখন সবাই মাতোয়ারা। কিন্তু আমরা মনে করি বাঙ্গালী জাতির যে উদ্ভব হয়েছে তা বাঙ্গালী সংস্কৃতিকে ধারন করে। তিনি আরো বলেন, ডিবেটিং সোসাইটি একটি সুসংগঠিত সংগঠন যেখানে অনেক বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা হয়।
‘ প্রসঙ্গত, বশেমুরবিপ্রবির সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতর্কচর্চা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে এই সংগঠনটি তাদের যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে বশেমুরবিপ্রবিতে নিয়মিত বিতর্ক চর্চা, প্রতিযোগিতা ও পাঠচক্র আয়োজনের পাশাপাশি বিভিন্ন সেবাধর্মী কার্যক্রমও পরিচালনা করে আসছে সংগঠনটি