শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাতে প্রেমিকার ঘরে গিয়ে ধরা, প্রেমিককে নিয়ে শাশুড়িকে খুন

ঘুমন্ত অবস্থায় গৃহবধূ হাজেরা বেগমকে (৫০) গলাকেটে হত্যা মামলায় তার পুত্রবধূসহ পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজবাড়ী আদালত। সেই সাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র দায়রা জজ মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের নিহত হাজেরা বেগমের বড় ছেলে মো. হাফিজুল শেখের স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও স্বপ্নার পরকীয়া প্রেমিক সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের কোমরপাড়া গ্রামের মো. হোসেন মিয়ার ছেলে মো. সোহেল মিয়া। আদালত সূত্রে জানা গেছে, হাজেরা বেগমের বড় ছেলে ও স্বপ্নার স্বামী মো. হাফিজুল শেখ বিদেশে থাকতেন। হাফিজুলের স্ত্রী তার ছেলের জন্ম নিবন্ধন করার জন্য ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে ফিরে আসার সময় সোহেলের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে সোহেল স্বপ্নার ছেলের জন্ম নিবন্ধন করে দেন। তখন থেকেই স্বপ্না ও সোহেলের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি হয়। তারা নিয়মিত ফোনে কথা বলতেন। এর মধ্যেই সোহেল একদিন রাতে স্বপ্নার বাড়িতে যায় কিন্তু স্বপ্নার শাশুড়ি টের পেলে তিনি ফিরে আসেন। এরপর ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট রাতে স্বপ্না তার শিশুসন্তান নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে সোহেল স্বপ্নার ঘরে প্রবেশ করে স্বপ্নার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে স্বপ্নার শাশুড়ি টের পেয়ে যান। এ সময় সোহেল ও স্বপ্না মিলে হাজেরা বেগমকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে। এ ঘটনার পরদিন ১৭ আগস্ট হাজেরা বেগমের স্বামী তমিজ উদ্দিন শেখ বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ডিবির সদস্যরা সোহেলকে গ্রেপ্তার করে। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর ডিবির একটি দল স্বপ্নাকে গ্রেপ্তার করে। ওইদিন তাকে আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া কবির নামে একজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। বিষয়ে রাজবাড়ী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট উজির আলী শেখ বলেন, মামলাটি তদন্তপূর্বক থানা পুলিশ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালত দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় স্বপ্না বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এ সময় রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলাদীপুর গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে কবির শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাতে প্রেমিকার ঘরে গিয়ে ধরা, প্রেমিককে নিয়ে শাশুড়িকে খুন

প্রকাশিত সময় : ১০:৩৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

ঘুমন্ত অবস্থায় গৃহবধূ হাজেরা বেগমকে (৫০) গলাকেটে হত্যা মামলায় তার পুত্রবধূসহ পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজবাড়ী আদালত। সেই সাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র দায়রা জজ মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের নিহত হাজেরা বেগমের বড় ছেলে মো. হাফিজুল শেখের স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও স্বপ্নার পরকীয়া প্রেমিক সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের কোমরপাড়া গ্রামের মো. হোসেন মিয়ার ছেলে মো. সোহেল মিয়া। আদালত সূত্রে জানা গেছে, হাজেরা বেগমের বড় ছেলে ও স্বপ্নার স্বামী মো. হাফিজুল শেখ বিদেশে থাকতেন। হাফিজুলের স্ত্রী তার ছেলের জন্ম নিবন্ধন করার জন্য ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে ফিরে আসার সময় সোহেলের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে সোহেল স্বপ্নার ছেলের জন্ম নিবন্ধন করে দেন। তখন থেকেই স্বপ্না ও সোহেলের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি হয়। তারা নিয়মিত ফোনে কথা বলতেন। এর মধ্যেই সোহেল একদিন রাতে স্বপ্নার বাড়িতে যায় কিন্তু স্বপ্নার শাশুড়ি টের পেলে তিনি ফিরে আসেন। এরপর ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট রাতে স্বপ্না তার শিশুসন্তান নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে সোহেল স্বপ্নার ঘরে প্রবেশ করে স্বপ্নার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে স্বপ্নার শাশুড়ি টের পেয়ে যান। এ সময় সোহেল ও স্বপ্না মিলে হাজেরা বেগমকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে। এ ঘটনার পরদিন ১৭ আগস্ট হাজেরা বেগমের স্বামী তমিজ উদ্দিন শেখ বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ডিবির সদস্যরা সোহেলকে গ্রেপ্তার করে। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর ডিবির একটি দল স্বপ্নাকে গ্রেপ্তার করে। ওইদিন তাকে আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া কবির নামে একজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। বিষয়ে রাজবাড়ী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট উজির আলী শেখ বলেন, মামলাটি তদন্তপূর্বক থানা পুলিশ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালত দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় স্বপ্না বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এ সময় রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলাদীপুর গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে কবির শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।