বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেন্ট মার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ

মিয়ানমারের রাখাইনের চলমান সংঘর্ষে মর্টারশেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপ। এতে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে গত সোমবার ও মঙ্গলবার টেকনাফের পৌরসভা, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং সীমান্তে রাতে ও দিনের বেলায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ আজ বুধবার (২৭ মার্চ) ভোর এবং বিকালে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয় দ্বীপের মানুষ। একই ভাবে সীমান্তের হোয়াইক্যংয়ের ওপারে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্র জানায়, স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে থাকা রাখাইনের অধিকাংশ অঞ্চলসহ বিজিপির ক্যাম্প ও চৌকি পুনরুদ্ধার করতে দেশটির সেনাবাহিনী প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে। রাখাইনের আকিয়াব, মংডু শহরের বলি বাজারে আশপাশের সেনা ক্যাম্পগুলোতে আরাকান আর্মি দখল নিতে হামলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি দেশটির সেনাবাহিনী সেগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাল্টা আক্রমণ করছে। এতে হেলিকপ্টার থেকে নিক্ষেপ করা হচ্ছে গোলা। এমন ঘটনায় ওপার থেকে সীমান্তের এপারে থেমে থেমে রাতে ও দিনে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা রফিক উদ্দিন বলেন, ‘শাহপরীর দ্বীপ থেকে মিয়ানমারের সীমানার মধ্যে দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। এর ২-৩ কিলোমিটার ভেতরে মংডু শহরের বলিবাজারে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যেই গোলাগুলি চলছে। সেখানে চলা সংঘাতের থেমে থেমে শাহপরীর দ্বীপের এপারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে। এতে দ্বীপের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে।’ সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে সংঘাত চললেও দ্বীপের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু মাঝে মাঝে বিকট শব্দ আসছিল সেন্টমার্টিন দ্বীপেও। তবে চারপাশে সাগর হওয়ায় দ্বীপে তেমন আতংক নেই।’ টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অণুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদীসহ সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার রয়েছে।’ টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, রাখাইন রাজ্যে বিস্ফোরণে ঘটনা ঘটলেও টেকনাফ সীমান্তের গ্রামেগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ইউএনও।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সেন্ট মার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ

প্রকাশিত সময় : ১১:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

মিয়ানমারের রাখাইনের চলমান সংঘর্ষে মর্টারশেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপ। এতে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে গত সোমবার ও মঙ্গলবার টেকনাফের পৌরসভা, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং সীমান্তে রাতে ও দিনের বেলায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ আজ বুধবার (২৭ মার্চ) ভোর এবং বিকালে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয় দ্বীপের মানুষ। একই ভাবে সীমান্তের হোয়াইক্যংয়ের ওপারে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্র জানায়, স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে থাকা রাখাইনের অধিকাংশ অঞ্চলসহ বিজিপির ক্যাম্প ও চৌকি পুনরুদ্ধার করতে দেশটির সেনাবাহিনী প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে। রাখাইনের আকিয়াব, মংডু শহরের বলি বাজারে আশপাশের সেনা ক্যাম্পগুলোতে আরাকান আর্মি দখল নিতে হামলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি দেশটির সেনাবাহিনী সেগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাল্টা আক্রমণ করছে। এতে হেলিকপ্টার থেকে নিক্ষেপ করা হচ্ছে গোলা। এমন ঘটনায় ওপার থেকে সীমান্তের এপারে থেমে থেমে রাতে ও দিনে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা রফিক উদ্দিন বলেন, ‘শাহপরীর দ্বীপ থেকে মিয়ানমারের সীমানার মধ্যে দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। এর ২-৩ কিলোমিটার ভেতরে মংডু শহরের বলিবাজারে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যেই গোলাগুলি চলছে। সেখানে চলা সংঘাতের থেমে থেমে শাহপরীর দ্বীপের এপারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে। এতে দ্বীপের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে।’ সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে সংঘাত চললেও দ্বীপের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু মাঝে মাঝে বিকট শব্দ আসছিল সেন্টমার্টিন দ্বীপেও। তবে চারপাশে সাগর হওয়ায় দ্বীপে তেমন আতংক নেই।’ টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অণুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদীসহ সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার রয়েছে।’ টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, রাখাইন রাজ্যে বিস্ফোরণে ঘটনা ঘটলেও টেকনাফ সীমান্তের গ্রামেগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ইউএনও।