মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ৫২ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড

সর্বোচ্চ এ তাপমাত্রার রেকর্ড হয় রাজশাহীতে। এটি এখনও এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। এত বছর পর আমের দেশে তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হয়, ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাজশাহীর ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ে। আজ এ অঞ্চলের মানুষ লু-হাওয়ার মুখোমুখি হয়েছে।

এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে রাজশাহীতে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। মাসের শেষদিনও এটি বহমান। মাসের শুরুতে মৃদু, দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহে রূপ নেয়। এরপর শুরু তীব্র তাপপ্রবাহ। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্রতা প্রবাহ।

সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অর্থাৎ স্মরণকালের মধ্যে এ বছর গ্রীষ্মের শুরু থেকেই পুড়তে শুরু করে পদ্মা পাড়ের রাজশাহী। আজকের দিনে আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যক্ষেক গাওসুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আগামীকাল বুধবার (১ মে) তাপমাত্রার পারদ এর চেয়ে বেশি উঠতে পারে। তা না হলে আজকের মতোই তাপপ্রবাহ (৪৩ ডি.সে) থাকতে পারে। রাজশাহীতে আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ফলে তাপমাত্রা সামনে আরও কয়েকদিন এমন উত্তপ্ত থাকতে পারে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাকারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল রাজশাহীতেই। ওই দিন রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তাপমাত্রার এ রেকর্ড ভাঙেনি। ২০০৫ সাল থেকে আবহাওয়ার পরিসংখ্যান সংরক্ষণ করছে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। এর আগের তথ্য আমাদের কাছে নেই। এর আগে এ অঞ্চলে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠার রেকর্ড নেই।

২০০৫ সালের ২ জুন রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১০ সালের ১০ এপ্রিল রেকর্ড হয়েছিল ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ২০১৪ সালের ২১ মে, ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল এবং ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

স্থানীয়রা বলছে, মরূদ্যানের মতো তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে। সকাল থেকেই বইছে লু-হাওয়া। বৈশাখের দিনগুলো কাটছে দুঃসহ গরমে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ ও পশুপাখি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাজশাহীতে ৫২ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড

প্রকাশিত সময় : ০৭:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
সর্বোচ্চ এ তাপমাত্রার রেকর্ড হয় রাজশাহীতে। এটি এখনও এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। এত বছর পর আমের দেশে তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হয়, ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাজশাহীর ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ে। আজ এ অঞ্চলের মানুষ লু-হাওয়ার মুখোমুখি হয়েছে।

এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে রাজশাহীতে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। মাসের শেষদিনও এটি বহমান। মাসের শুরুতে মৃদু, দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহে রূপ নেয়। এরপর শুরু তীব্র তাপপ্রবাহ। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্রতা প্রবাহ।

সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অর্থাৎ স্মরণকালের মধ্যে এ বছর গ্রীষ্মের শুরু থেকেই পুড়তে শুরু করে পদ্মা পাড়ের রাজশাহী। আজকের দিনে আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যক্ষেক গাওসুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আগামীকাল বুধবার (১ মে) তাপমাত্রার পারদ এর চেয়ে বেশি উঠতে পারে। তা না হলে আজকের মতোই তাপপ্রবাহ (৪৩ ডি.সে) থাকতে পারে। রাজশাহীতে আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ফলে তাপমাত্রা সামনে আরও কয়েকদিন এমন উত্তপ্ত থাকতে পারে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাকারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল রাজশাহীতেই। ওই দিন রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তাপমাত্রার এ রেকর্ড ভাঙেনি। ২০০৫ সাল থেকে আবহাওয়ার পরিসংখ্যান সংরক্ষণ করছে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। এর আগের তথ্য আমাদের কাছে নেই। এর আগে এ অঞ্চলে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠার রেকর্ড নেই।

২০০৫ সালের ২ জুন রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১০ সালের ১০ এপ্রিল রেকর্ড হয়েছিল ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ২০১৪ সালের ২১ মে, ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল এবং ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

স্থানীয়রা বলছে, মরূদ্যানের মতো তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে। সকাল থেকেই বইছে লু-হাওয়া। বৈশাখের দিনগুলো কাটছে দুঃসহ গরমে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ ও পশুপাখি।