শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আফ্রিকার দেশ নাইজারের একটি বিমানঘাঁটিতে ঢুকে পড়েছে যেখানে অবস্থান করছে মার্কিন সেনারা। একজন সিনিয়র মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজারের সেনা শাসকরা তাদের দেশ থেকে মার্কিন বাহিনীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পর এ ঘটনা ঘটেছে। নাইজারে বর্তমানে শাসনকারী সামরিক কর্মকর্তারা মার্চ মাসে ওয়াশিংটনকে তাদের দেশে অবস্থানরত প্রায় এক হাজার মার্কিন সেনা সদস্যকে প্রত্যাহার করতে বলেছিলেন। ইতোমধ্যে নাইজারের নতুন জান্তা সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরো গভীর করছে।

গত বছরের জুলাইয়ে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের আগে, নাইজার আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে জঙ্গিগোষ্ঠী এবং আল-কায়েদার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধে আফ্রিকার দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। যা বর্তমানে মারাত্মক সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রুশ সেনারা ওই বিমানঘাঁটিতে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে একত্রে অবস্থান করছেন না।

কারণ হিসেবে জানা গেছে, তারা নাইজারের রাজধানী নিয়ামীতে দিওরি হামানি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের পাশে অবস্থিত এয়ারবেস ১০১ নামে পরিচিত সামরিক স্থাপনায় আলাদা হ্যাঙ্গার ব্যবহার করছেন। একই ঘাঁটিতে রুশ সামরিক কর্মীদের মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্র ও মস্কো বাহিনীকে এমন এক সময়ে ঘনিষ্ঠ করে তোলে যখন ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পরে কিয়েভের ঘনিষ্ঠমিত্র ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক প্রতিনিয়ত উত্তেজনাপূর্ণ ও সংঘাতপূর্ণ হয়ে পড়ে। এর আগে নাইজারের সামরিক জান্তা সরকারের দাবিতে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সে দেশ থেকে তাদের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারে সম্মত হয়। মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেল গত মাসের শেষ দিকে নাইজারের প্রধানমন্ত্রী আলি লামিন জেইনের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

তবে কবে নাগাদ সেনা প্রত্যাহার করা হবে সে বিষয়টি এখনো জানানো হয়নি। আগামী দিনে প্রত্যাহারের সময়সীমা নিয়ে প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এরপর সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে। নাইজারে এক হাজারের বেশি মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহারে আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে। গত বছরের ২৬ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের সদস্যরা। অভ্যুত্থানের পর নাইজারের প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের প্রধান আবদোরাহমানে চিয়ানি নিজেকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেন, যা যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অভ্যুত্থান হিসেবে দেখছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৭:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আফ্রিকার দেশ নাইজারের একটি বিমানঘাঁটিতে ঢুকে পড়েছে যেখানে অবস্থান করছে মার্কিন সেনারা। একজন সিনিয়র মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজারের সেনা শাসকরা তাদের দেশ থেকে মার্কিন বাহিনীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পর এ ঘটনা ঘটেছে। নাইজারে বর্তমানে শাসনকারী সামরিক কর্মকর্তারা মার্চ মাসে ওয়াশিংটনকে তাদের দেশে অবস্থানরত প্রায় এক হাজার মার্কিন সেনা সদস্যকে প্রত্যাহার করতে বলেছিলেন। ইতোমধ্যে নাইজারের নতুন জান্তা সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরো গভীর করছে।

গত বছরের জুলাইয়ে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের আগে, নাইজার আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে জঙ্গিগোষ্ঠী এবং আল-কায়েদার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধে আফ্রিকার দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। যা বর্তমানে মারাত্মক সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রুশ সেনারা ওই বিমানঘাঁটিতে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে একত্রে অবস্থান করছেন না।

কারণ হিসেবে জানা গেছে, তারা নাইজারের রাজধানী নিয়ামীতে দিওরি হামানি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের পাশে অবস্থিত এয়ারবেস ১০১ নামে পরিচিত সামরিক স্থাপনায় আলাদা হ্যাঙ্গার ব্যবহার করছেন। একই ঘাঁটিতে রুশ সামরিক কর্মীদের মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্র ও মস্কো বাহিনীকে এমন এক সময়ে ঘনিষ্ঠ করে তোলে যখন ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পরে কিয়েভের ঘনিষ্ঠমিত্র ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক প্রতিনিয়ত উত্তেজনাপূর্ণ ও সংঘাতপূর্ণ হয়ে পড়ে। এর আগে নাইজারের সামরিক জান্তা সরকারের দাবিতে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সে দেশ থেকে তাদের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারে সম্মত হয়। মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেল গত মাসের শেষ দিকে নাইজারের প্রধানমন্ত্রী আলি লামিন জেইনের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

তবে কবে নাগাদ সেনা প্রত্যাহার করা হবে সে বিষয়টি এখনো জানানো হয়নি। আগামী দিনে প্রত্যাহারের সময়সীমা নিয়ে প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এরপর সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে। নাইজারে এক হাজারের বেশি মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহারে আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে। গত বছরের ২৬ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের সদস্যরা। অভ্যুত্থানের পর নাইজারের প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের প্রধান আবদোরাহমানে চিয়ানি নিজেকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেন, যা যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অভ্যুত্থান হিসেবে দেখছে।