শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন

কুমিল্লায় চৌদ্দগ্রামের রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলায় ৯ জনের ফাঁসি ও ৯ জনের যাবজ্জীবন দিয়েছে কুমিল্লার আদালত। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন প্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১২ মে)  দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন, মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (পিপি) জহিরুল হক সেলিম।রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত ১৮ জনের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৯ জনের মধ্যে একজন আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ৯ জনই অনুপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ৫ জনকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-চৌদ্দগ্রাম আলকরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চু, আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের সালাউদ্দিন, আব্দুর রহমান, মফিজুর রহমান খন্দকার, জিয়াউদ্দিন শিমুল, জাহিদ বিন শুভ, রেজাউল করিম বাবলু, মো. রিয়াজ উদ্দিন মিয়াজী, মমতা আমির হোসেন।

যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামিরা হলেন-আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের নুরুল আলম, কফিল উদ্দিন, নুরুন্নবী সুজন, ইকবাল আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান খন্দকার, মোশারেফ হোসেন, মো. আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী হোসেন।

মামলা থেকে অব্যাহতি প্রাপ্তরা হলেন-আলকরার কুলাসার গ্রামের নজরুল ইসলাম শিমুল আজিম উদ্দিন আনোয়ার হোসেন সোহেল আতিকুর রহমান নান্টু, ও ইউসুফ হারুন মামুন।

মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম আলকরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনকে হত্যা করা হয়।

তৎসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় যুবলীগ নেতা জামাল উদ্দিনের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে জামাল উদ্দিনের ওপর হামলা করে আহত করে। এ বিষয়ে জামাল উদ্দিন নিজে বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলা করার পর চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি রাত আটটায় বাড়ি থেকে যুবলীগ নেতা জামাল ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের পদুয়ায় সড়কের উপরে চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর নেতৃত্বে অন্য আসামিরা গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত জামালের বড় বোন জোহরা আক্তার বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (পিপি) জহিরুল হক সেলিম বলেন, মামলায় ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন ও মামলা থেকে ৫ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় একজন যাবজ্জীবন প্রাপ্ত ও দুইজন খালাসপাপ্ত উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক আছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত সময় : ০৬:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪

কুমিল্লায় চৌদ্দগ্রামের রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলায় ৯ জনের ফাঁসি ও ৯ জনের যাবজ্জীবন দিয়েছে কুমিল্লার আদালত। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন প্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১২ মে)  দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন, মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (পিপি) জহিরুল হক সেলিম।রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত ১৮ জনের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৯ জনের মধ্যে একজন আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ৯ জনই অনুপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ৫ জনকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-চৌদ্দগ্রাম আলকরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চু, আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের সালাউদ্দিন, আব্দুর রহমান, মফিজুর রহমান খন্দকার, জিয়াউদ্দিন শিমুল, জাহিদ বিন শুভ, রেজাউল করিম বাবলু, মো. রিয়াজ উদ্দিন মিয়াজী, মমতা আমির হোসেন।

যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামিরা হলেন-আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের নুরুল আলম, কফিল উদ্দিন, নুরুন্নবী সুজন, ইকবাল আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান খন্দকার, মোশারেফ হোসেন, মো. আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী হোসেন।

মামলা থেকে অব্যাহতি প্রাপ্তরা হলেন-আলকরার কুলাসার গ্রামের নজরুল ইসলাম শিমুল আজিম উদ্দিন আনোয়ার হোসেন সোহেল আতিকুর রহমান নান্টু, ও ইউসুফ হারুন মামুন।

মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম আলকরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনকে হত্যা করা হয়।

তৎসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় যুবলীগ নেতা জামাল উদ্দিনের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে জামাল উদ্দিনের ওপর হামলা করে আহত করে। এ বিষয়ে জামাল উদ্দিন নিজে বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলা করার পর চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি রাত আটটায় বাড়ি থেকে যুবলীগ নেতা জামাল ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের পদুয়ায় সড়কের উপরে চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর নেতৃত্বে অন্য আসামিরা গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত জামালের বড় বোন জোহরা আক্তার বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (পিপি) জহিরুল হক সেলিম বলেন, মামলায় ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন ও মামলা থেকে ৫ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় একজন যাবজ্জীবন প্রাপ্ত ও দুইজন খালাসপাপ্ত উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক আছেন।