বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টেকনাফ সীমান্তে থামছে না ভারী গোলার বিকট শব্দ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দে কাপঁছে কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্ত। এতে এপারে সীমান্তের বসবাসকারীরা ভয়-ভীতির মধ্য রয়েছে।

মঙ্গলবার ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার তিনটি পয়েন্টে মিয়ানমারের মর্টারশেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ পান সীমান্তের মানুষ। এতে সীমান্তের মানুষের শঙ্কা, নতুন করে রোহিঙ্গার পাশাপাশি সে দেশের বিজিপির আরও সদস্যের এপারে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।

সীমান্তের পৌরসভার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে রাখাইন রাজ্যে থেকে গোলার শব্দ এপারে ভেসে আসছে। আজ থেমে থেমে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। অনেক সময় ওপারের গোলার শব্দে সীমান্তের বাড়িঘর কেঁপে উঠছে। দিন দিন এ ধরনের ঘটনা মানুষের মাঝে ভয় বাড়াচ্ছে। ’

সীমান্তের বসবাসকারীরা বলছেন, রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের তীব্রতা বাড়ছে। সেদেশের মংডুর পাশাপাশি বুথেডংয়েও সংঘাত চলমান রয়েছে। এই দুই রাজ্যে অনেক স্থানে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে জান্ত সরকার। অনেক সময় আকাশপথে হেলিকপ্টার নিয়ে হামলার দৃশ্য চোখে পড়েছে। এতে এপারে সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছে।

টেকনাফের মুন্ডার ডেইল সীমান্তের বাসিন্দা জলিল মিয়া বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে আবারও গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। সীমান্তবাসী অনেক ভয়ে আছি।

কয়েকদিন ধরে সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, আজও (মঙ্গলবার) সকাল থেকে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। বিকেল পর্যন্ত সীমান্তের মানুষ গোলার বিকট শব্দ পেয়েছেন।

এদিকে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফ নদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সব সময় প্রস্তুত সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও কোস্টগার্ড।

সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-২) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, নতুন করে সীমান্ত দিয়ে যাতে কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমাদের টহল জোরদার আছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে বাসিন্দারা আজকেও ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

টেকনাফ সীমান্তে থামছে না ভারী গোলার বিকট শব্দ

প্রকাশিত সময় : ০৯:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দে কাপঁছে কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্ত। এতে এপারে সীমান্তের বসবাসকারীরা ভয়-ভীতির মধ্য রয়েছে।

মঙ্গলবার ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার তিনটি পয়েন্টে মিয়ানমারের মর্টারশেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ পান সীমান্তের মানুষ। এতে সীমান্তের মানুষের শঙ্কা, নতুন করে রোহিঙ্গার পাশাপাশি সে দেশের বিজিপির আরও সদস্যের এপারে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।

সীমান্তের পৌরসভার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে রাখাইন রাজ্যে থেকে গোলার শব্দ এপারে ভেসে আসছে। আজ থেমে থেমে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। অনেক সময় ওপারের গোলার শব্দে সীমান্তের বাড়িঘর কেঁপে উঠছে। দিন দিন এ ধরনের ঘটনা মানুষের মাঝে ভয় বাড়াচ্ছে। ’

সীমান্তের বসবাসকারীরা বলছেন, রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের তীব্রতা বাড়ছে। সেদেশের মংডুর পাশাপাশি বুথেডংয়েও সংঘাত চলমান রয়েছে। এই দুই রাজ্যে অনেক স্থানে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে জান্ত সরকার। অনেক সময় আকাশপথে হেলিকপ্টার নিয়ে হামলার দৃশ্য চোখে পড়েছে। এতে এপারে সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছে।

টেকনাফের মুন্ডার ডেইল সীমান্তের বাসিন্দা জলিল মিয়া বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে আবারও গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। সীমান্তবাসী অনেক ভয়ে আছি।

কয়েকদিন ধরে সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, আজও (মঙ্গলবার) সকাল থেকে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। বিকেল পর্যন্ত সীমান্তের মানুষ গোলার বিকট শব্দ পেয়েছেন।

এদিকে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফ নদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সব সময় প্রস্তুত সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও কোস্টগার্ড।

সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-২) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, নতুন করে সীমান্ত দিয়ে যাতে কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমাদের টহল জোরদার আছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে বাসিন্দারা আজকেও ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন।