ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করতে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর দুজন এজেন্টকে নিয়োগ দেয় ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।শুক্রবার (২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মোসাদ দুই মাস আগেই হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা সাজায়। গত মে মাসে হানিয়া যখন হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির শেষকৃত্যে অংশ নিতে ইরানে যান, তখনই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। তবে অধিক জনসমাগমে অভিযান ব্যর্থ হতে পারে বলে পরিকল্পনা পেছায় মোসাদ। অপেক্ষায় থাকে নতুন সুযোগের।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুজন কর্মকর্তা টেলিগ্রাফকে জানান, এর পর ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীর দুই এজেন্ট মোসাদের নির্দেশনা অনুযায়ী, আইআরজিসিরি গেস্টহাউসের তিনটি রুমে বোমা পেতে রাখেন। হানিয়া অবস্থান করতে পারেন সম্ভাব্য এমন তিনটি রুমে বোমা পেতে রাখা হয়।
সিসিটিভি ফুটেজের বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই এজেন্টরা গেস্টহাউসটিতে চুপিচুপি চলাচল করছিলেন। তাদেরকে কয়েক মিনিটের মধ্যে একাধিক কক্ষে প্রবেশ করতে দেখা যায়। বোমাগুলো পেতে রাখার পর ওই এজেন্টগুলো ইরান থেকে পালিয়ে যান। তবে ইরানে তাদের যোগাযোগ ছিল। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হানিয়ার রুমের বোমাগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া গত মঙ্গলবার ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিনের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য কাতার থেকে ইরানের রাজধানী তেহরানে যান। এরপর ওইদিন স্থানীয় সময় রাত ২টার দিকে হত্যার শিকার হন তিনি। এ সময় তার এক দেহরক্ষীও নিহত হন।
আইআরজিসিরি এক কর্মকর্তা টেলিগ্রাফকে জানান, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এ কাজে ইরানের আনসার আল-মাহদি প্রটেকশন ইউনিট থেকে দুজন এজেন্ট নিয়োগ দেয় বলে তেহরান নিশ্চিত। ইরানে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে আল-মাহদি প্রটেকশন ইউনিট।
আইআরজিসির ওই কর্মকর্তা জানান, তারা ব্যাপক তদন্তের পরে আরও দুটি রুম থেকে বোমা উদ্ধার করেন।
তিনি বলেন, ‘এটি কীভাবে ঘটল তা এখনও সবার কাছে একটি প্রশ্ন, আমি নিজেও এর উত্তর জানি না।’ তিনি জানান, এ ঘটনায় ইরানের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা একে অপরকে ব্যর্থতার জন্য দোষারোপ করছে। এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করার নিদের্শ দিয়েছেন আইআরজিসি কুদস ফোর্সের কমান্ডার ইসমাইল কানি।
ইরানের রাজধানীতে তেহরানে হানিয়ার হত্যাকাণ্ড ইরানের অভ্যন্তরে ইসরায়েলের নাগাল এবং প্রভাব সম্পর্কে আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসসহ মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল যাদের হুমকি মনে করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে থাকে মোসাদ। যুক্তরাষ্ট্রের সিআইয়ের পর মোসাদকে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ভাবা হয়। মোসাদের প্রায় ৭ হাজার প্রশিক্ষিত গোয়েন্দা সদস্যের জন্য ইসরায়েলের বার্ষিক বাজেট ৩ বিলিয়নের মতো।

ডেইলি দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 

























