রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সারদা পুলিশ একাডেমিতে এবার ৫৯ এসআইকে শোকজ

রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে এবার প্রশিক্ষণরত অন্তত ৫৯ জন ক্যাডেট উপ-পরিদর্শককে (এসআই) শোকজ করা হয়েছে। গত সোমবার (২১ অক্টোবর) এবং আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এসব এসআইয়ের সবাই ৪০তম ক্যাডেট-২০২৩ ব্যাচে প্রশিক্ষণরত। প্রশিক্ষণরত এসব এসআইয়ের বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণ হলে শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে হইচই করার অভিযোগ আনা হয়েছে। একাডেমি সূত্র জানায়, গত ২১ অক্টোবর ওই ব্যাচের ১০ জন এসআইকে শোকজ করা হয়। এরপর ২৪ অক্টোবর আরও ৪৯ জন এসআইকে শোকজ করা হয়।

তিন দিনের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) মো. তারেক বিন রশিদ কারণ দর্শানোর নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন। ২৪ অক্টোবর প্রশিক্ষণরত এক এসআইকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চেমনি মেমোরিয়াল হলে আইনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারার ওপর প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের ক্লাস ছিল। প্রশিক্ষণ চলাকালে পরিদর্শক পদমর্যাদার চারজন প্রশিক্ষক দেখতে পান সিটে বসার সময় এই এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেন। একজন প্রশিক্ষক বার বার শৃঙ্খলার সঙ্গে বসতে বললেও তিনি নির্দেশ অমান্য ও কর্ণপাত না করে বসা নিয়ে হইচই করতে থাকেন।’

নোটিশে আরও বলা হয়, পাঠদান চলাকালে এই এসআইয়ের ক্লাসে কোনো মনোযোগ ছিল না এবং পাশাপাশি বসে কথা বলছিলেন। এ জন্য একজন প্রশিক্ষক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একাডেমির অধ্যক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তাই বিধি অনুযায়ী কেন তাকে চলমান মৌলিক প্রশিক্ষণ হতে অব্যাহতি প্রদান করা হবে না, তা কৈফিয়ত তলবনামা প্রাপ্তির পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে ২১ অক্টোবর ১০ এসআইকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের একটি কপি পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, যেসব অভিযোগে ২৪ অক্টোবর এসআইদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেই একই অভিযোগ ২১ অক্টোবরের চিঠিতেও উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ১৬ অক্টোবর ওই একই সময়ে জিমনেসিয়ামে ‘এক্সপেরিয়েন্স শেয়ারিং ইন অর্ডার টু ফেইস পলিটিক্যাল এইমড’ বিষয়ে ক্লাস ছিল।

সেদিন বিশেষ অতিথি বক্তা হিসেবে ছিলেন পুলিশ একাডেমির সাবেক অধ্যক্ষ মো. নজিবুর রহমান। সেদিন এই এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসেন এবং হইচই করেন। তাকেও তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ ও পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাসুদুর রহমান ভুঞা।

তিনি এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ শাখায় কথা বলার পরামর্শ দেন। যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) এনামুল হক সাগর জানান, এ বিষয়ে তিনি এখনো কিছু জানেন না। তিনি জানতে পারলে পরবর্তীতে গণমাধ্যমকে জানাবেন। প্রসঙ্গত, প্রশিক্ষণ মাঠে নাশতা নিয়ে হইচই করার কারণে সম্প্রতি এই ব্যাচের ৭০৪ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে ২৫২ জনকে শোকজ করা হয়েছিল। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ার কারণে এই এসআইদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এবার প্রশিক্ষণ হলে শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসার কারণে অন্তত ৫৯ জন এসআইকে শোকজ করা হয়েছে বলে পুলিশ একাডেমির নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সারদা পুলিশ একাডেমিতে এবার ৫৯ এসআইকে শোকজ

প্রকাশিত সময় : ১১:২৫:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে এবার প্রশিক্ষণরত অন্তত ৫৯ জন ক্যাডেট উপ-পরিদর্শককে (এসআই) শোকজ করা হয়েছে। গত সোমবার (২১ অক্টোবর) এবং আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এসব এসআইয়ের সবাই ৪০তম ক্যাডেট-২০২৩ ব্যাচে প্রশিক্ষণরত। প্রশিক্ষণরত এসব এসআইয়ের বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণ হলে শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে হইচই করার অভিযোগ আনা হয়েছে। একাডেমি সূত্র জানায়, গত ২১ অক্টোবর ওই ব্যাচের ১০ জন এসআইকে শোকজ করা হয়। এরপর ২৪ অক্টোবর আরও ৪৯ জন এসআইকে শোকজ করা হয়।

তিন দিনের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) মো. তারেক বিন রশিদ কারণ দর্শানোর নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন। ২৪ অক্টোবর প্রশিক্ষণরত এক এসআইকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চেমনি মেমোরিয়াল হলে আইনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারার ওপর প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের ক্লাস ছিল। প্রশিক্ষণ চলাকালে পরিদর্শক পদমর্যাদার চারজন প্রশিক্ষক দেখতে পান সিটে বসার সময় এই এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেন। একজন প্রশিক্ষক বার বার শৃঙ্খলার সঙ্গে বসতে বললেও তিনি নির্দেশ অমান্য ও কর্ণপাত না করে বসা নিয়ে হইচই করতে থাকেন।’

নোটিশে আরও বলা হয়, পাঠদান চলাকালে এই এসআইয়ের ক্লাসে কোনো মনোযোগ ছিল না এবং পাশাপাশি বসে কথা বলছিলেন। এ জন্য একজন প্রশিক্ষক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একাডেমির অধ্যক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তাই বিধি অনুযায়ী কেন তাকে চলমান মৌলিক প্রশিক্ষণ হতে অব্যাহতি প্রদান করা হবে না, তা কৈফিয়ত তলবনামা প্রাপ্তির পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে ২১ অক্টোবর ১০ এসআইকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের একটি কপি পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, যেসব অভিযোগে ২৪ অক্টোবর এসআইদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেই একই অভিযোগ ২১ অক্টোবরের চিঠিতেও উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ১৬ অক্টোবর ওই একই সময়ে জিমনেসিয়ামে ‘এক্সপেরিয়েন্স শেয়ারিং ইন অর্ডার টু ফেইস পলিটিক্যাল এইমড’ বিষয়ে ক্লাস ছিল।

সেদিন বিশেষ অতিথি বক্তা হিসেবে ছিলেন পুলিশ একাডেমির সাবেক অধ্যক্ষ মো. নজিবুর রহমান। সেদিন এই এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসেন এবং হইচই করেন। তাকেও তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ ও পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাসুদুর রহমান ভুঞা।

তিনি এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ শাখায় কথা বলার পরামর্শ দেন। যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) এনামুল হক সাগর জানান, এ বিষয়ে তিনি এখনো কিছু জানেন না। তিনি জানতে পারলে পরবর্তীতে গণমাধ্যমকে জানাবেন। প্রসঙ্গত, প্রশিক্ষণ মাঠে নাশতা নিয়ে হইচই করার কারণে সম্প্রতি এই ব্যাচের ৭০৪ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে ২৫২ জনকে শোকজ করা হয়েছিল। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ার কারণে এই এসআইদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এবার প্রশিক্ষণ হলে শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসার কারণে অন্তত ৫৯ জন এসআইকে শোকজ করা হয়েছে বলে পুলিশ একাডেমির নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।