বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, বড় বিস্ফোরণের শব্দ

ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ জানিয়েছে যে তারা ইরানের ‘সামরিক স্থাপনায় সুনির্দিষ্ট হামলা’ চালিয়েছে। ‘কয়েক মাস ধরে ইরানের ধারাবাহিক হামলার’ জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে হোয়াইট হাউজ বলছে ‘আত্মরক্ষার’ অংশ হিসেবে ইরানে এই হামলা করেছে ইসরায়েল। তবে ইরানের কোথায় কোথায় আঘাত করা হয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। এখন পর্যন্ত ইসরায়েল শুধু সামরিক স্থাপনার কথা উল্লেখ করেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছে তেহরানের দুই বিমানবন্দরের কার্যক্রম ‘স্বাভাবিক’ ভাবেই চলছে। যদিও ইরানের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন। তবে তারা বলেছেন এই শব্দ ‘ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম কার্যকর’ করার কারণে হতে পারে। ইরানের রিভল্যুশনারি গার্ডের ঘনিষ্ঠ একটি বার্তা সংস্থা বলছে তেহরানের পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে কিছু সামরিক ঘাঁটিকে টার্গেট করা হয়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বলছে দেশটির মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে কিছু সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে ইরানের বাইরে অন্য কোথাও হামলার বিষয়ে এখনো কোন মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। ইসরায়েল যা বলছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে ২০২৩ সালের সাতই অক্টোবরের পর ইরান এবং ওই অঞ্চল জুড়ে তাদের ছায়া সহযোগী বিরামহীন হামলার জবাব দেয়ার অধিকার বিশ্বের অন্য সব সার্বভৌম দেশের মতো ইসরায়েল রাষ্ট্রেরও আছে। “ইসরায়েল রাষ্ট্র ও জনগণের সুরক্ষার জন্য যা করা দরকার আমরা তাই করবো,” সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে। হোয়াইট হাউজ বলছে আত্মরক্ষার চর্চার অংশ হিসেবে ইসরায়েল ইরানে এই হামলা চালিয়েছে বলে তারা মনে করে। “আমরা বুঝতে পারছি যে ইসরায়েল ইরানের সামরিক স্থাপনায় অভিযান চালাচ্ছে। পহেলা অক্টোবর ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা ও আত্মরক্ষার চর্চা থেকেই তারা এটা করেছে,” ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র সিবিএসকে একথা বলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পুরো পরিস্থিতি ‘অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন’ বলে সিবিএস জানিয়েছে। তবে শনিবারের এই হামলার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে পেন্টাগন জানিয়েছে। ইরান মাসখানেক আগেই ইসরায়েলে প্রায় দুশো ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল। এরপর থেকেই মূলত ইরানে ইসরায়েল হামলা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিলো। ইরানের প্রতিক্রিয়া কেমন: ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গুলো পরিস্থিতি শান্ত আছে এমনটি দেখানোর চেষ্টা করছে। তবে দেশটির সামাজিক মাধ্যমে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসির এর সিনিয়র ফেলো বেহনাম বেন তালেবলু। তিনি বলছেন ইরানের কিছু টার্গেটে ইসরায়েল হামলা করলেও দেশটির দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হুমকিকে সমূলে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়নি বলে তার মনে হয়েছে। বিবিসি পার্সিয়ানের বাহমান কালবাসি বলছেন ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যমে বড় কোন ক্ষয়ক্ষতির কথা অস্বীকার করা হয়েছে। তারা ইসরায়েলের হামলা সফল হয়নি বলে দাবি করেছে। তার মতে ইরান সবসময়ই হামলার পর এমন দাবি করে থাকে। “তবে পাল্টাপাল্টি হামলা বন্ধে এটি মুখরক্ষার একটি উপায়ও হতে পারে,” বলছিলেন তিনি। সূত্র: বিবিসি বাংলা

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, বড় বিস্ফোরণের শব্দ

প্রকাশিত সময় : ০১:০২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ জানিয়েছে যে তারা ইরানের ‘সামরিক স্থাপনায় সুনির্দিষ্ট হামলা’ চালিয়েছে। ‘কয়েক মাস ধরে ইরানের ধারাবাহিক হামলার’ জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে হোয়াইট হাউজ বলছে ‘আত্মরক্ষার’ অংশ হিসেবে ইরানে এই হামলা করেছে ইসরায়েল। তবে ইরানের কোথায় কোথায় আঘাত করা হয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। এখন পর্যন্ত ইসরায়েল শুধু সামরিক স্থাপনার কথা উল্লেখ করেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছে তেহরানের দুই বিমানবন্দরের কার্যক্রম ‘স্বাভাবিক’ ভাবেই চলছে। যদিও ইরানের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন। তবে তারা বলেছেন এই শব্দ ‘ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম কার্যকর’ করার কারণে হতে পারে। ইরানের রিভল্যুশনারি গার্ডের ঘনিষ্ঠ একটি বার্তা সংস্থা বলছে তেহরানের পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে কিছু সামরিক ঘাঁটিকে টার্গেট করা হয়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বলছে দেশটির মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে কিছু সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে ইরানের বাইরে অন্য কোথাও হামলার বিষয়ে এখনো কোন মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। ইসরায়েল যা বলছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে ২০২৩ সালের সাতই অক্টোবরের পর ইরান এবং ওই অঞ্চল জুড়ে তাদের ছায়া সহযোগী বিরামহীন হামলার জবাব দেয়ার অধিকার বিশ্বের অন্য সব সার্বভৌম দেশের মতো ইসরায়েল রাষ্ট্রেরও আছে। “ইসরায়েল রাষ্ট্র ও জনগণের সুরক্ষার জন্য যা করা দরকার আমরা তাই করবো,” সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে। হোয়াইট হাউজ বলছে আত্মরক্ষার চর্চার অংশ হিসেবে ইসরায়েল ইরানে এই হামলা চালিয়েছে বলে তারা মনে করে। “আমরা বুঝতে পারছি যে ইসরায়েল ইরানের সামরিক স্থাপনায় অভিযান চালাচ্ছে। পহেলা অক্টোবর ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা ও আত্মরক্ষার চর্চা থেকেই তারা এটা করেছে,” ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র সিবিএসকে একথা বলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পুরো পরিস্থিতি ‘অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন’ বলে সিবিএস জানিয়েছে। তবে শনিবারের এই হামলার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে পেন্টাগন জানিয়েছে। ইরান মাসখানেক আগেই ইসরায়েলে প্রায় দুশো ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল। এরপর থেকেই মূলত ইরানে ইসরায়েল হামলা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিলো। ইরানের প্রতিক্রিয়া কেমন: ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গুলো পরিস্থিতি শান্ত আছে এমনটি দেখানোর চেষ্টা করছে। তবে দেশটির সামাজিক মাধ্যমে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসির এর সিনিয়র ফেলো বেহনাম বেন তালেবলু। তিনি বলছেন ইরানের কিছু টার্গেটে ইসরায়েল হামলা করলেও দেশটির দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হুমকিকে সমূলে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়নি বলে তার মনে হয়েছে। বিবিসি পার্সিয়ানের বাহমান কালবাসি বলছেন ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যমে বড় কোন ক্ষয়ক্ষতির কথা অস্বীকার করা হয়েছে। তারা ইসরায়েলের হামলা সফল হয়নি বলে দাবি করেছে। তার মতে ইরান সবসময়ই হামলার পর এমন দাবি করে থাকে। “তবে পাল্টাপাল্টি হামলা বন্ধে এটি মুখরক্ষার একটি উপায়ও হতে পারে,” বলছিলেন তিনি। সূত্র: বিবিসি বাংলা