বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করাচি থেকে গোলা-বারুদের জাহাজ আসার সংবাদটি গুজব: সরকার

‘পাকিস্তানের করাচি থেকে এসেছে গোলা-বারুদের জাহাজ’ শীর্ষক প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সংশ্লিষ্ট উপ-কমিশনারের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, প্রকৃত তথ্য হলো- পাকিস্তান থেকে ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ জাহাজটি থেকে ৩৭০ একক কনটেইনার নামানো হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে আনা হয়েছে ২৯৭ একক কনটেইনার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আনা হয়েছে ৭৩ একক কনটেইনার।

‘কনটেইনারগুলোর মধ্যে বেশিরভাগেই রয়েছে টেক্সটাইল শিল্পের কাঁচামাল, কাঁচ শিল্পের কাঁচামাল, গাড়ির যন্ত্রাংশ, রং, কাঁচামাল, কাপড়। এর মধ্যে ৪২টি কন্টেইনারে রয়েছে পেঁয়াজ ও ১৪টি কন্টেইনারে রয়েছে আলু। এছাড়া, ফেব্রিকস, চুনাপাথর, সোডা অ্যাশ, পেঁয়াজ, ম্যাগনেশিয়াম কার্বোনেট, ডলোমাইট ইত্যাদিও রয়েছে।’

এসব পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশের আকিজ গ্লাস কারখানা, প্যাসিফিক জিনস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, নাসির গ্লাস, এক্স সিরামিকস, হাফিজ করপোরেশন, এম আর ট্রেডিংস ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান।

পাকিস্তানের করাচি থেকে ছেড়ে আসা ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ নামের ওই জাহাজটি গত ১৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে এসে ভিড়েছিলো।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পণ্য খালাস হয়ে গেলে পরদিনই জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করেছে।

জানা গেছে, ‘দুবাই টু চট্টগ্রাম’ রুট ধরে আসা জাহাজটির পরবর্তী গন্তব্য ইন্দোনেশিয়া। নতুন এই সার্ভিসটি চালু করেছে দুবাই ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান।

স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের করাচি থেকে কন্টেইনার বহনকারী জাহাজ সরাসরি এসেছে। যা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বহু বছর দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য হতো না। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপিত হলেও পাকিস্তান থেকে সাধারণত সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রামে আসতো না। সেদেশের পণ্যবাহী জাহাজ প্রথমে শ্রীলঙ্কায় কন্টেইনার খালাস করতো। এরপর জাহাজ বদল করে সেসব কন্টেইনার বাংলাদেশে আসতো।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সীমিত হতে থাকে। তখন নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা অধিকাংশ পণ্য ‘লাল তালিকাযুক্ত’ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের অনুরোধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর লাল তালিকা থেকে মুক্ত হয়েছে দেশটির সব ধরনের পণ্য।-রাইজিংবিডি.কম

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

করাচি থেকে গোলা-বারুদের জাহাজ আসার সংবাদটি গুজব: সরকার

প্রকাশিত সময় : ০৫:২৪:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

‘পাকিস্তানের করাচি থেকে এসেছে গোলা-বারুদের জাহাজ’ শীর্ষক প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সংশ্লিষ্ট উপ-কমিশনারের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, প্রকৃত তথ্য হলো- পাকিস্তান থেকে ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ জাহাজটি থেকে ৩৭০ একক কনটেইনার নামানো হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে আনা হয়েছে ২৯৭ একক কনটেইনার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আনা হয়েছে ৭৩ একক কনটেইনার।

‘কনটেইনারগুলোর মধ্যে বেশিরভাগেই রয়েছে টেক্সটাইল শিল্পের কাঁচামাল, কাঁচ শিল্পের কাঁচামাল, গাড়ির যন্ত্রাংশ, রং, কাঁচামাল, কাপড়। এর মধ্যে ৪২টি কন্টেইনারে রয়েছে পেঁয়াজ ও ১৪টি কন্টেইনারে রয়েছে আলু। এছাড়া, ফেব্রিকস, চুনাপাথর, সোডা অ্যাশ, পেঁয়াজ, ম্যাগনেশিয়াম কার্বোনেট, ডলোমাইট ইত্যাদিও রয়েছে।’

এসব পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশের আকিজ গ্লাস কারখানা, প্যাসিফিক জিনস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, নাসির গ্লাস, এক্স সিরামিকস, হাফিজ করপোরেশন, এম আর ট্রেডিংস ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান।

পাকিস্তানের করাচি থেকে ছেড়ে আসা ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ নামের ওই জাহাজটি গত ১৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে এসে ভিড়েছিলো।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পণ্য খালাস হয়ে গেলে পরদিনই জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করেছে।

জানা গেছে, ‘দুবাই টু চট্টগ্রাম’ রুট ধরে আসা জাহাজটির পরবর্তী গন্তব্য ইন্দোনেশিয়া। নতুন এই সার্ভিসটি চালু করেছে দুবাই ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান।

স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের করাচি থেকে কন্টেইনার বহনকারী জাহাজ সরাসরি এসেছে। যা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বহু বছর দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য হতো না। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপিত হলেও পাকিস্তান থেকে সাধারণত সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রামে আসতো না। সেদেশের পণ্যবাহী জাহাজ প্রথমে শ্রীলঙ্কায় কন্টেইনার খালাস করতো। এরপর জাহাজ বদল করে সেসব কন্টেইনার বাংলাদেশে আসতো।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সীমিত হতে থাকে। তখন নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা অধিকাংশ পণ্য ‘লাল তালিকাযুক্ত’ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের অনুরোধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর লাল তালিকা থেকে মুক্ত হয়েছে দেশটির সব ধরনের পণ্য।-রাইজিংবিডি.কম