সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কারাগারে পাঠানো হলো সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনকে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া আল আমিন নামের এক রিকশাচালককে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি সাবেক রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ রবিবার সকাল ১০টায় পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. আশরাফুজ্জামান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এর আগে গতকাল শনিবার রাতে সাবেক এই মন্ত্রীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজনভ্যানে করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাহারায় পঞ্চগড় জেলা কারাগারে আনা হয়। এর পর রবিবার সকালে পুলিশ, ডিবি ও সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় তাকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।

মামলার শুনানিতে বাদীপক্ষে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি, গর্ভমেন্ট প্রসিকিউটর (জিপি) মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজলসহ আদালতের এপিপিবৃন্দ এবং আসামিপক্ষে সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মির্জা সারোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট আলী আসমান বিপুল প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। মামলার শুনানির সময় বাদী উপস্থিত ছিলেন।

পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আদম সুফী বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশে শান্তি ফিরে এসেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সম্মুখ সারির যোদ্ধাকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। সাবেক এই রেলমন্ত্রীর নির্দেশে মামলার অন্য আসামিরা আল আমিনকে হত্যা করেন। আমরা জামিনের বিরোধীতা করেছি। একই সঙ্গে আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেছি।’

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, ‌‘সাবেক এই রেলমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুম ও খুনের অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে। মামলার এজহারে বলা হয়েছে, বাদীর ছেলেকে নাকি সাবেক এই মন্ত্রীর হুকুমে মারধর করা হয়েছে। পরে তাকে নাকি আর পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা আদালতে বলেছি, যেহেতু ভিকটিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সেহেতু কোনোভাবেই ৩০২ ধারা হতে পারে না। আমরা জামিন আবেদন করেছিলাম। আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন। তবে আদালত তাকে জেলকোর্ট অনুযায়ী ডিভিশন দিয়েছেন।’

এর আগে গত ১০ নভেম্বর পঞ্চগড় সদর থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন গুম ও হত্যার শিকার আল আমিনের বাবা মনু মিয়া। মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রীকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- পঞ্চগড়-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নোমান হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক প্লাবন পাটোয়ারী, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম, হাসনাত মো. হামিদুর রহমান, পঞ্চগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উজ্জ্বলসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মৌলভীবাজারে দুর্বৃত্তের হামলায় দুই সহোদর খুন

কারাগারে পাঠানো হলো সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনকে

প্রকাশিত সময় : ০৫:১২:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া আল আমিন নামের এক রিকশাচালককে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি সাবেক রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ রবিবার সকাল ১০টায় পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. আশরাফুজ্জামান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এর আগে গতকাল শনিবার রাতে সাবেক এই মন্ত্রীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজনভ্যানে করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাহারায় পঞ্চগড় জেলা কারাগারে আনা হয়। এর পর রবিবার সকালে পুলিশ, ডিবি ও সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় তাকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।

মামলার শুনানিতে বাদীপক্ষে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি, গর্ভমেন্ট প্রসিকিউটর (জিপি) মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজলসহ আদালতের এপিপিবৃন্দ এবং আসামিপক্ষে সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মির্জা সারোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট আলী আসমান বিপুল প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। মামলার শুনানির সময় বাদী উপস্থিত ছিলেন।

পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আদম সুফী বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশে শান্তি ফিরে এসেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সম্মুখ সারির যোদ্ধাকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। সাবেক এই রেলমন্ত্রীর নির্দেশে মামলার অন্য আসামিরা আল আমিনকে হত্যা করেন। আমরা জামিনের বিরোধীতা করেছি। একই সঙ্গে আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেছি।’

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, ‌‘সাবেক এই রেলমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুম ও খুনের অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে। মামলার এজহারে বলা হয়েছে, বাদীর ছেলেকে নাকি সাবেক এই মন্ত্রীর হুকুমে মারধর করা হয়েছে। পরে তাকে নাকি আর পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা আদালতে বলেছি, যেহেতু ভিকটিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সেহেতু কোনোভাবেই ৩০২ ধারা হতে পারে না। আমরা জামিন আবেদন করেছিলাম। আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন। তবে আদালত তাকে জেলকোর্ট অনুযায়ী ডিভিশন দিয়েছেন।’

এর আগে গত ১০ নভেম্বর পঞ্চগড় সদর থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন গুম ও হত্যার শিকার আল আমিনের বাবা মনু মিয়া। মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রীকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- পঞ্চগড়-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নোমান হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক প্লাবন পাটোয়ারী, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম, হাসনাত মো. হামিদুর রহমান, পঞ্চগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উজ্জ্বলসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।