শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের স্বার্থে মিলেমিশে থাকার প্রতিশ্রুতি ধর্মীয় নেতাদের

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা। এ সময় দেশের স্বার্থে সবাই মিলেমিশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন ধর্মীয় নেতারা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে এর আলোচ্য বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ধর্মীয় নেতারা।

হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, আইনজীবী হত্যার পর ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে পরাজিত শক্তি দেশে ঢুকতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবো।

হেফাজত ইসলামের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, পাশের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নেই। এ দেশে মুসলমান হত্যার পরও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি। দেশের সম্প্রীতির ব্যাপারে প্রচার করুন। দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ রয়েছি।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ব্যাপারে আমাদের আলাদাভাবে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। যারা বিভেদ দেখানোর চেষ্টা করছেন, তাদের কথায় বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না।

রামকৃষ্ণ মিশনের মহাজন স্বামী হরি প্রেমানন্দ বলেন, বৈঠকে ধর্মীয় সম্প্রীতির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা নিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চাই। এই সম্প্রীতি রক্ষার বিষয়েই আলোচনা হয়েছে।

রমনা হরিচাঁদ মন্দিরের সহ-সম্পাদক অবিনাশ মিত্র বলেন, বাইরে থেকে বিভেদ ছড়ানো হচ্ছে। বাইরের রাষ্ট্র যাতে হিন্দুদের ওপর চড়াও না হয়। সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হলে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না। প্রধান উপদেষ্টা সবার কথাই শুনেছেন। সে অনুযায়ী তিনি কাজ করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ফাদার আলবার্ট রোজারিও বলেন, এই মূহুর্তে দেশ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ইসকনের ব্যাপারে হিন্দু ভাইদের মনে ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভ নিরসনে কাজ করতে প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। এ সময় চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিনের ব্যবস্থা করার দাবিও জানান তিনি।

অপরদিকে, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ড. সুকমল বড়ুয়া বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার কথা বলেছি। যাতে বিভিন্ন সংস্থা ও মিশন জানতে পারে, এই দেশ সম্প্রীতির দেশ।

বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় বলেন, সবাই যেন মিলেমিশে থাকে এবং সম্প্রীতির ঐতিহ্য বজায় থাকে। ভারতের মিডিয়া কী প্রচার করল, তা আমাদের দেখার বিষয় না।

অন্যদিকে গারো পুরোহিত জনসন ম্রি বলেন, যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে সাহায্য করার কথাও জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

দেশের স্বার্থে মিলেমিশে থাকার প্রতিশ্রুতি ধর্মীয় নেতাদের

প্রকাশিত সময় : ১১:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা। এ সময় দেশের স্বার্থে সবাই মিলেমিশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন ধর্মীয় নেতারা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে এর আলোচ্য বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ধর্মীয় নেতারা।

হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, আইনজীবী হত্যার পর ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে পরাজিত শক্তি দেশে ঢুকতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবো।

হেফাজত ইসলামের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, পাশের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নেই। এ দেশে মুসলমান হত্যার পরও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি। দেশের সম্প্রীতির ব্যাপারে প্রচার করুন। দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ রয়েছি।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ব্যাপারে আমাদের আলাদাভাবে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। যারা বিভেদ দেখানোর চেষ্টা করছেন, তাদের কথায় বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না।

রামকৃষ্ণ মিশনের মহাজন স্বামী হরি প্রেমানন্দ বলেন, বৈঠকে ধর্মীয় সম্প্রীতির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা নিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চাই। এই সম্প্রীতি রক্ষার বিষয়েই আলোচনা হয়েছে।

রমনা হরিচাঁদ মন্দিরের সহ-সম্পাদক অবিনাশ মিত্র বলেন, বাইরে থেকে বিভেদ ছড়ানো হচ্ছে। বাইরের রাষ্ট্র যাতে হিন্দুদের ওপর চড়াও না হয়। সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হলে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না। প্রধান উপদেষ্টা সবার কথাই শুনেছেন। সে অনুযায়ী তিনি কাজ করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ফাদার আলবার্ট রোজারিও বলেন, এই মূহুর্তে দেশ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ইসকনের ব্যাপারে হিন্দু ভাইদের মনে ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভ নিরসনে কাজ করতে প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। এ সময় চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিনের ব্যবস্থা করার দাবিও জানান তিনি।

অপরদিকে, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ড. সুকমল বড়ুয়া বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার কথা বলেছি। যাতে বিভিন্ন সংস্থা ও মিশন জানতে পারে, এই দেশ সম্প্রীতির দেশ।

বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় বলেন, সবাই যেন মিলেমিশে থাকে এবং সম্প্রীতির ঐতিহ্য বজায় থাকে। ভারতের মিডিয়া কী প্রচার করল, তা আমাদের দেখার বিষয় না।

অন্যদিকে গারো পুরোহিত জনসন ম্রি বলেন, যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে সাহায্য করার কথাও জানান তিনি।