মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোথায় আছেন বাশারের ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী ও সন্তানেরা?

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রবল চাপের মুখে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনামলের অবসান হয়েছে।

সংকটময় এ পরিস্থিতিতে বাশারের ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী ও সন্তানেরা এখন কোথায়, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাশার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়াল দিলেও তিনি কোথায় গেছেন, সেটি জানা যায়নি।

বাশার আল-আসাদ গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় রাত আটটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ভাষণ আর দেওয়া হয়নি তার। এরপর আজ সকালে দেশ ছাড়তে হয় টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকা বাশারকে।

এদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদের ব্রিটিশ-সিরীয় স্ত্রী আসমা আসাদ এবং তাদের তিন সন্তান আগেই সিরিয়া ছেড়েছেন। সন্তানদের নিয়ে আসমা গত নভেম্বরের শেষের দিকে রাশিয়ায় চলে যান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তরের বরাত দিয়ে গত মে মাসে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ৪৮ বছর বয়সী আসমার লিউকেমিয়া (রক্ত বা অস্থিমজ্জার ক্যানসার) শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে তিনি জনসম্মুখে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া থেকে বিরত আছেন।

এর বছর পাচেক আগেও আসমা স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন।সেই অসুস্থতা থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার কথাও জানা গিয়েছিল।

উল্লেখ্য, আসমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। সেখানেই বাশার আল-আসাদের সঙ্গে তার পরিচয়। বিনিয়োগ ব্যাংকে চাকরি করতেন আসমা। পরে বাশারকে বিয়ে করে সিরিয়ায় চলে আসেন।

২০১১ সালে প্রথম বাশারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমেই ২০২৪ সালে শেষ সময়ে এসে সিরিয়ায় অবসান হলো আসাদ রাজত্বের।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের ১৩ বছরে প্রাণ হারিয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কোটি কোটি মানুষ। তখন থেকে সিরিয়ার নিহত সেনাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে ও দাতব্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন আসমা। কিন্তু বিদ্রোহীরা তার এ কাজ ভালো চোখে দেখেননি।

স্বামীর সঙ্গে গত বছর রাষ্ট্রীয় সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যান আসমা। ২০১১ সালে বাশারের বিরুদ্ধে হওয়া সশস্ত্র বিদ্রোহ পর দেশের বাইরে এটাই ছিল তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

কোথায় আছেন বাশারের ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী ও সন্তানেরা?

প্রকাশিত সময় : ০৭:০৪:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রবল চাপের মুখে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনামলের অবসান হয়েছে।

সংকটময় এ পরিস্থিতিতে বাশারের ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী ও সন্তানেরা এখন কোথায়, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাশার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়াল দিলেও তিনি কোথায় গেছেন, সেটি জানা যায়নি।

বাশার আল-আসাদ গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় রাত আটটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ভাষণ আর দেওয়া হয়নি তার। এরপর আজ সকালে দেশ ছাড়তে হয় টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকা বাশারকে।

এদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদের ব্রিটিশ-সিরীয় স্ত্রী আসমা আসাদ এবং তাদের তিন সন্তান আগেই সিরিয়া ছেড়েছেন। সন্তানদের নিয়ে আসমা গত নভেম্বরের শেষের দিকে রাশিয়ায় চলে যান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তরের বরাত দিয়ে গত মে মাসে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ৪৮ বছর বয়সী আসমার লিউকেমিয়া (রক্ত বা অস্থিমজ্জার ক্যানসার) শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে তিনি জনসম্মুখে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া থেকে বিরত আছেন।

এর বছর পাচেক আগেও আসমা স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন।সেই অসুস্থতা থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার কথাও জানা গিয়েছিল।

উল্লেখ্য, আসমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। সেখানেই বাশার আল-আসাদের সঙ্গে তার পরিচয়। বিনিয়োগ ব্যাংকে চাকরি করতেন আসমা। পরে বাশারকে বিয়ে করে সিরিয়ায় চলে আসেন।

২০১১ সালে প্রথম বাশারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমেই ২০২৪ সালে শেষ সময়ে এসে সিরিয়ায় অবসান হলো আসাদ রাজত্বের।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের ১৩ বছরে প্রাণ হারিয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কোটি কোটি মানুষ। তখন থেকে সিরিয়ার নিহত সেনাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে ও দাতব্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন আসমা। কিন্তু বিদ্রোহীরা তার এ কাজ ভালো চোখে দেখেননি।

স্বামীর সঙ্গে গত বছর রাষ্ট্রীয় সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যান আসমা। ২০১১ সালে বাশারের বিরুদ্ধে হওয়া সশস্ত্র বিদ্রোহ পর দেশের বাইরে এটাই ছিল তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।