সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় বিক্রম মিশ্রি: নির্দিষ্ট দল নয়, ভারতের সম্পর্ক সবার সঙ্গে

‘বাংলাদেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে এমন ধারণা ভুল’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিক্রম মিশ্রি। এ সময় এ কথা জানান তিনি।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নয়, বরং সবার সঙ্গে।’’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘‘সম্পর্ক বাড়ানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনো চিন্তা নেই। আমরা এটাকে উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হিসেবে দেখি।’’

পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আলোচনায় বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘‘আমরা যেখানে ছিলাম সেখান থেকেই আবার শুরু করতে চাই।’’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’’

ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি

‘সম্পর্কে মেঘ এসেছে, এটি দূর করতে হবে’
ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে বলা হয়েছে, বিভিন্ন কারণে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একটি মেঘ এসেছে, সেই মেঘটি দূর করতে হবে। বাংলাদেশও বলেছে, এটি দূর করতে হবে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কে কিছু মেঘ জমে ছায়া তৈরি করেছে। এই ‘কালো মেঘ’ মুছে ফেলতে ভারতের সাহায্য চেয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।

আলোচনায় বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গও উঠে আসে।

বিগত ১৫ বছরের নির্মম ও দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসনের বর্ণনা করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমাদের লোকজন উদ্বিগ্ন কারণ তিনি সেখান (ভারত) থেকে অনেক বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।’’

বিক্রম মিশ্রি জানান, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় প্রায় প্রতি ঘণ্টায় তিনি বাংলাদেশের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও জনতা কীভাবে এক হয়ে হাসিনার দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনামলের অবসান ঘটিয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাজ হলো তরুণদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা। এটি একটি নতুন বাংলাদেশ।’’

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে সেসবের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ঢাকায় বিক্রম মিশ্রি: নির্দিষ্ট দল নয়, ভারতের সম্পর্ক সবার সঙ্গে

প্রকাশিত সময় : ১১:০৭:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

‘বাংলাদেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে এমন ধারণা ভুল’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিক্রম মিশ্রি। এ সময় এ কথা জানান তিনি।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নয়, বরং সবার সঙ্গে।’’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘‘সম্পর্ক বাড়ানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনো চিন্তা নেই। আমরা এটাকে উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হিসেবে দেখি।’’

পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আলোচনায় বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘‘আমরা যেখানে ছিলাম সেখান থেকেই আবার শুরু করতে চাই।’’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’’

ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি

‘সম্পর্কে মেঘ এসেছে, এটি দূর করতে হবে’
ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে বলা হয়েছে, বিভিন্ন কারণে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একটি মেঘ এসেছে, সেই মেঘটি দূর করতে হবে। বাংলাদেশও বলেছে, এটি দূর করতে হবে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কে কিছু মেঘ জমে ছায়া তৈরি করেছে। এই ‘কালো মেঘ’ মুছে ফেলতে ভারতের সাহায্য চেয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।

আলোচনায় বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গও উঠে আসে।

বিগত ১৫ বছরের নির্মম ও দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসনের বর্ণনা করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমাদের লোকজন উদ্বিগ্ন কারণ তিনি সেখান (ভারত) থেকে অনেক বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।’’

বিক্রম মিশ্রি জানান, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় প্রায় প্রতি ঘণ্টায় তিনি বাংলাদেশের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও জনতা কীভাবে এক হয়ে হাসিনার দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনামলের অবসান ঘটিয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাজ হলো তরুণদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা। এটি একটি নতুন বাংলাদেশ।’’

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে সেসবের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি।