মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশজুড়ে বাড়ছে শীত-রোগবালাই

পৌষের আগেই শীতে কাবু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। সঙ্গে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়ও জেঁকে বসছে শীত। অর্থাৎ হুড়মুড়িয়ে নামা শীতের জেরে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। পাশাপাশি কুয়াশায় বিঘ্নিত হচ্ছে যান চলাচল। কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি ছুঁইছে। এমন অবস্থায় পৌষ না আসতেই শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।

শুক্রবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। কনকনে শীত আর শৈত্যপ্রবাহের বার্তায় প্রতিটি হাসপাতাল এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে সকাল-সন্ধ্যা লম্বা লাইনও চোখে পড়ছে। ভিড় বাড়ছে নাক কান গলারোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারেও। ঠান্ডা সংক্রান্ত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও।

শুক্রবার ভোর থেকেই রাজধানীসহ দেশের আকাশ ঘন কুয়াশায়ে ঢাকা ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে কুয়াশার পরিমাণ কমলেও বিকাল হতেই কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। রাজধানীতে এতটা কুয়াশা এই প্রথম। এটাই শেষ নয়, আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের ভাষ্য, সময় যত বাড়বে, কুয়াশার পরিমাণও বাড়তে পারে।

উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীত বাড়তে শুরু করেছে। রাজধানীতে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জে তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি। ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে শীত। কুয়াশা ও শীতের এমন দাপট আরও কয়েকদিন টানা থাকতে পারে।

এদিকে ভারতের দিল্লি ও উত্তর প্রদেশেও কনকনে শীতে সাধারণ মানুষকে কাবু করছে। বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লিতে একধাক্কায় সর্বনিম্ম তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্র বলছে, ভারতের দিল্লি ও উত্তর প্রদেশ হয়ে বিহার ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল ধরে কুয়াশার ধাক্কা বাংলাদেশে হানা দিচ্ছে। দিন যত বাড়বে কুয়াশার পরিমাণও বাড়বে। কুয়াশার সঙ্গে বায়ুদূষণের মাত্রাও বাড়ছে। এদিকে শীতের এমন হানায় ফুটপাতের বেচাকেনা জমজমাট হয়ে উঠছে। পুরনো কাপড়ের দিক ঝুঁকছে সাধারণ মানুষ।

আবহাওয়া দপ্তরের সূত্র, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি বা তার নিচে গেলে সেটিকে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল নবজাতক ইউনিটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা  বলেন, যেভাবে শীত হানা দিচ্ছে, তাতে শিশু এবং বৃদ্ধরা খুব সহজেই কাবু হচ্ছে। নবজাতক ও শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। নবজাতকদের মায়ের কোলে রাখতে হবে। ফ্লোরে কার্পেট বিছানাসহ ঘর গরম রাখার সঙ্গে শিশুরা যখন বাহিরে যাবে, মাথা, নাক-কান ঢেকে রাখবে। শীত বাড়ার সঙ্গে আমাদের কাছে প্রচুর শিশু রোগী আসছে। অধিকাংশই জ্বর, সর্দি-কাশি তো বটেই, অন্য নানা ধরণের সংক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছে। মায়েদের মনে রাখতে হবে, গরম জামাকাপড়, জ্যাকেট, টুপি বা মাস্কের ব্যবহার ঠিকঠাক না হলে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়বে।

বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ও পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. তৌফিকুর রহমান ফারুক বলেন, কনকনে শীতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এ সময় রক্তনালি সংকুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এ সময় শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে হৃদযন্ত্রকে দ্বিগুণ কাজ করতে হয়। শীতে অনেকই খাবার বেশি খেয়ে থাকেন। কোলেস্টেরল বা রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, এমন খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। শরীর গরম রাখার চেষ্টা করতে হবে। সূত্র: যুগান্তর

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

দেশজুড়ে বাড়ছে শীত-রোগবালাই

প্রকাশিত সময় : ১০:৫১:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পৌষের আগেই শীতে কাবু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। সঙ্গে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়ও জেঁকে বসছে শীত। অর্থাৎ হুড়মুড়িয়ে নামা শীতের জেরে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। পাশাপাশি কুয়াশায় বিঘ্নিত হচ্ছে যান চলাচল। কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি ছুঁইছে। এমন অবস্থায় পৌষ না আসতেই শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।

শুক্রবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। কনকনে শীত আর শৈত্যপ্রবাহের বার্তায় প্রতিটি হাসপাতাল এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে সকাল-সন্ধ্যা লম্বা লাইনও চোখে পড়ছে। ভিড় বাড়ছে নাক কান গলারোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারেও। ঠান্ডা সংক্রান্ত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও।

শুক্রবার ভোর থেকেই রাজধানীসহ দেশের আকাশ ঘন কুয়াশায়ে ঢাকা ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে কুয়াশার পরিমাণ কমলেও বিকাল হতেই কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। রাজধানীতে এতটা কুয়াশা এই প্রথম। এটাই শেষ নয়, আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের ভাষ্য, সময় যত বাড়বে, কুয়াশার পরিমাণও বাড়তে পারে।

উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীত বাড়তে শুরু করেছে। রাজধানীতে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জে তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি। ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে শীত। কুয়াশা ও শীতের এমন দাপট আরও কয়েকদিন টানা থাকতে পারে।

এদিকে ভারতের দিল্লি ও উত্তর প্রদেশেও কনকনে শীতে সাধারণ মানুষকে কাবু করছে। বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লিতে একধাক্কায় সর্বনিম্ম তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্র বলছে, ভারতের দিল্লি ও উত্তর প্রদেশ হয়ে বিহার ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল ধরে কুয়াশার ধাক্কা বাংলাদেশে হানা দিচ্ছে। দিন যত বাড়বে কুয়াশার পরিমাণও বাড়বে। কুয়াশার সঙ্গে বায়ুদূষণের মাত্রাও বাড়ছে। এদিকে শীতের এমন হানায় ফুটপাতের বেচাকেনা জমজমাট হয়ে উঠছে। পুরনো কাপড়ের দিক ঝুঁকছে সাধারণ মানুষ।

আবহাওয়া দপ্তরের সূত্র, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি বা তার নিচে গেলে সেটিকে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল নবজাতক ইউনিটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা  বলেন, যেভাবে শীত হানা দিচ্ছে, তাতে শিশু এবং বৃদ্ধরা খুব সহজেই কাবু হচ্ছে। নবজাতক ও শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। নবজাতকদের মায়ের কোলে রাখতে হবে। ফ্লোরে কার্পেট বিছানাসহ ঘর গরম রাখার সঙ্গে শিশুরা যখন বাহিরে যাবে, মাথা, নাক-কান ঢেকে রাখবে। শীত বাড়ার সঙ্গে আমাদের কাছে প্রচুর শিশু রোগী আসছে। অধিকাংশই জ্বর, সর্দি-কাশি তো বটেই, অন্য নানা ধরণের সংক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছে। মায়েদের মনে রাখতে হবে, গরম জামাকাপড়, জ্যাকেট, টুপি বা মাস্কের ব্যবহার ঠিকঠাক না হলে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়বে।

বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ও পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. তৌফিকুর রহমান ফারুক বলেন, কনকনে শীতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এ সময় রক্তনালি সংকুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এ সময় শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে হৃদযন্ত্রকে দ্বিগুণ কাজ করতে হয়। শীতে অনেকই খাবার বেশি খেয়ে থাকেন। কোলেস্টেরল বা রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, এমন খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। শরীর গরম রাখার চেষ্টা করতে হবে। সূত্র: যুগান্তর