মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিরতির পথে হামাস-ইসরাইল, আলোচনা ৯০ শতাংশ সম্পন্ন

হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তির আলোচনা প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলোচনায় অংশ নেয়া এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনার বিবরণ বিবিসির সঙ্গে শেয়ার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের দৈর্ঘ্য বরাবর কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত একটি বাফার জোন তৈরির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তবে ওই বাফার জোনে সামরিক উপস্থিতি রাখতে চাইছে ইসরাইল। এমন কিছু বিষয়ে একমত হলেই গাজায় তিন স্তরের যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হবার সম্ভানা রয়েছে।

এই চুক্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রথম তিন ধাপে ইসরাইলের প্রতি নারী সেনা মুক্তির বিনিময়ে তেল আবিবের কারাগার থেকে ২০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। যদিও বন্দীদের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে ইসরাইলে ২৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কারাদণ্ড ভোগ করছেন এমন প্রায় ৪০০ জনের নাম থেকে বেছে ওই তালিকা করা হবে।

এর মধ্যে ফাতাহ নেতা মারওয়ান বারঘৌতিকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে না, যার মুক্তিতে ইসরাইলের ভেটো দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইসরাইলি জিম্মিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেয়া হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এখনও নিখোঁজ কিছু জিম্মির সন্ধান পাবে হামাস। ইসরাইলের ধারণা অনুযায়ী গাজায় এখনও ৯৬ জিম্মির মধ্যে ৬২ জন জীবিত রয়েছেন।

এছাড়া গাজার বেসামরিক নাগরিকরা মিশরীয়/কাতারি তদারকির ব্যবস্থার অধীনে উত্তরে ফিরে যেতে পারবে এবং প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ট্রাক সাহায্য উপত্যকায় আসবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

তিন-পর্যায়ের পরিকল্পনার চূড়ান্ত পর্যায়ে, ১৪ মাসের যুদ্ধের সমাপ্তি দেখতে পাবে বিশ্ব। গাজা উপত্যকা টেকনোক্র্যাটদের একটি কমিটি দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হবে, যাদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকবে না, কিন্তু সবার সমর্থন থাকবে।

মূলত সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশর তাদের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা পুনরায় শুরু করে। এ সময় যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য উভয় পক্ষের সর্বোচ্চ ইচ্ছার কথা সামনে আসে। এর আগে গত অক্টোবরের মাঝামাঝি আলোচনার মাধ্যমে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হলেও হামাসের পক্ষ থেকে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়।

হামাস এবং অন্য দুটি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী বলেছে যে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো “আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কাছাকাছি” হয়ে উঠেছে শুধু যদি ইসরায়েল নতুন শর্ত আরোপ করা বন্ধ করে।

শনিবার একটি টেলিগ্রাম বিবৃতিতে গ্রুপটি বলেছে, তারা প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি) এর প্রতিনিধিদের সাথে চলমান আলোচনার প্রচেষ্টা নিয়ে শুক্রবার কায়রোতে একটি বৈঠক করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

যুদ্ধবিরতির পথে হামাস-ইসরাইল, আলোচনা ৯০ শতাংশ সম্পন্ন

প্রকাশিত সময় : ১১:১৬:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তির আলোচনা প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলোচনায় অংশ নেয়া এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনার বিবরণ বিবিসির সঙ্গে শেয়ার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের দৈর্ঘ্য বরাবর কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত একটি বাফার জোন তৈরির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তবে ওই বাফার জোনে সামরিক উপস্থিতি রাখতে চাইছে ইসরাইল। এমন কিছু বিষয়ে একমত হলেই গাজায় তিন স্তরের যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হবার সম্ভানা রয়েছে।

এই চুক্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রথম তিন ধাপে ইসরাইলের প্রতি নারী সেনা মুক্তির বিনিময়ে তেল আবিবের কারাগার থেকে ২০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। যদিও বন্দীদের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে ইসরাইলে ২৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কারাদণ্ড ভোগ করছেন এমন প্রায় ৪০০ জনের নাম থেকে বেছে ওই তালিকা করা হবে।

এর মধ্যে ফাতাহ নেতা মারওয়ান বারঘৌতিকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে না, যার মুক্তিতে ইসরাইলের ভেটো দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইসরাইলি জিম্মিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেয়া হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এখনও নিখোঁজ কিছু জিম্মির সন্ধান পাবে হামাস। ইসরাইলের ধারণা অনুযায়ী গাজায় এখনও ৯৬ জিম্মির মধ্যে ৬২ জন জীবিত রয়েছেন।

এছাড়া গাজার বেসামরিক নাগরিকরা মিশরীয়/কাতারি তদারকির ব্যবস্থার অধীনে উত্তরে ফিরে যেতে পারবে এবং প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ট্রাক সাহায্য উপত্যকায় আসবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

তিন-পর্যায়ের পরিকল্পনার চূড়ান্ত পর্যায়ে, ১৪ মাসের যুদ্ধের সমাপ্তি দেখতে পাবে বিশ্ব। গাজা উপত্যকা টেকনোক্র্যাটদের একটি কমিটি দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হবে, যাদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকবে না, কিন্তু সবার সমর্থন থাকবে।

মূলত সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশর তাদের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা পুনরায় শুরু করে। এ সময় যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য উভয় পক্ষের সর্বোচ্চ ইচ্ছার কথা সামনে আসে। এর আগে গত অক্টোবরের মাঝামাঝি আলোচনার মাধ্যমে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হলেও হামাসের পক্ষ থেকে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়।

হামাস এবং অন্য দুটি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী বলেছে যে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো “আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কাছাকাছি” হয়ে উঠেছে শুধু যদি ইসরায়েল নতুন শর্ত আরোপ করা বন্ধ করে।

শনিবার একটি টেলিগ্রাম বিবৃতিতে গ্রুপটি বলেছে, তারা প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি) এর প্রতিনিধিদের সাথে চলমান আলোচনার প্রচেষ্টা নিয়ে শুক্রবার কায়রোতে একটি বৈঠক করেছে।