বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরশায়িত হলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ

মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরশায়িত হলেন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে সমাহিত করা হয়। এ সময় তার সন্তান মুয়াজ আরিফসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, হাসান আরিফের মৃত্যুতে আজ দেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে। জাতীয় পতাকা রাখা হয়েছে অর্ধনমিত। রাষ্ট্রীয় শোক পালন উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এছাড়া, মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

উপদেষ্টা হাসান আরিফ শুক্রবার বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান। ওইদিন বাদ এশা ধানমন্ডি সাত নম্বর বায়তুল আমান মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে উপদেষ্টা হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে সচিবালয় তার তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মেয়ে বিদেশে থাকায় তার মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হয়।

১৯৪১ সালের ১০ জুলাই কলকাতায় হাসান আরিফের জন্ম। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি করেন।

১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তিনি সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী ছিলেন ‘এএফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ চেম্বারের প্রধান।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে ১৯৮২ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৮৫ সালের অগাস্ট পর্যন্ত তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৮৫ সালের অগাস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিএনপি জামায়াত-জোট সরকারের আমলে ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন

হাসান আরিফ ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের একজন প্যানেল সদস্য ছিলেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরশায়িত হলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ

প্রকাশিত সময় : ০২:৫২:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরশায়িত হলেন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে সমাহিত করা হয়। এ সময় তার সন্তান মুয়াজ আরিফসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, হাসান আরিফের মৃত্যুতে আজ দেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে। জাতীয় পতাকা রাখা হয়েছে অর্ধনমিত। রাষ্ট্রীয় শোক পালন উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এছাড়া, মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

উপদেষ্টা হাসান আরিফ শুক্রবার বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান। ওইদিন বাদ এশা ধানমন্ডি সাত নম্বর বায়তুল আমান মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে উপদেষ্টা হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে সচিবালয় তার তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মেয়ে বিদেশে থাকায় তার মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হয়।

১৯৪১ সালের ১০ জুলাই কলকাতায় হাসান আরিফের জন্ম। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি করেন।

১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তিনি সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী ছিলেন ‘এএফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ চেম্বারের প্রধান।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে ১৯৮২ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৮৫ সালের অগাস্ট পর্যন্ত তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৮৫ সালের অগাস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিএনপি জামায়াত-জোট সরকারের আমলে ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন

হাসান আরিফ ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের একজন প্যানেল সদস্য ছিলেন তিনি।